স্থাপত্যশিল্প একটি
শক্তিশালী শিল্পমাধ্যম;
যার মাঝ
থেকে উঠে
আসে দেশ,
কাল, রাজনীতি,
অর্থনীতি, সমাজ,
সংস্কৃতি, সর্বোপরি
বুদ্ধিবৃত্তিগত নান্দনিক
শিল্পবোধ এবং
বিজ্ঞাননির্ভর প্রযুক্তি
আর বাস্তবভিত্তিক
করণকৌশল। যুগে
যুগে রাজা-বাদশাহরা
প্রধানত তাদের
নাম স্মরণীয়
করে রাখতে
স্থাপত্যশিল্পের বিশেষভাবে
পৃষ্ঠপোষকতা করতেন,
যেহেতু নির্মাণসামগ্রী
অর্থাৎ লোহা,
পাথর, ইট
মানুষের আয়ুষ্কালের
তুলনায় কালের
প্রকোপের বিপরীতে
বেশি দিন
টিকে থাকত
বা থাকে
প্রাকৃতিকভাবে। সেই
সুদূর পেছনের
আমল থেকে
এখন পর্যন্ত
দেশে দেশে
বিভিন্ন শাসকের
শাসনকালে স্থাপত্যশিল্পের
বাস্তবায়ন তাদের
অর্থনীতি ও
রাষ্ট্রকালীন সামগ্রিক
অবস্থা, ক্ষমতা
ও উন্নয়নের
সূচক হিসেবে
বিবেচিত হয়ে
আসছে। দরিদ্র
দেশে স্থাপত্যশিল্পের
প্রসার খুব
স্বাভাবিকভাবেই অপ্রতুল।
বাংলাদেশ নামক
৪৮ বছর
বয়সী অন্যান্য
দেশের তুলনায়
দরিদ্র যতই
হোক, দেশটি
একদা ভারতের
পলিমাটিসমৃদ্ধ কৃষিজমিনির্ভর
শস্যভাণ্ডার হিসেবে
পৃথিবীর অন্যতম
বিত্তশালী বলে
পরিচিত ছিল।
শস্যের পর্যাপ্ত
উৎপাদনের কারণে
ভারতবর্ষের বিভিন্ন
অঞ্চল থেকে
বিভিন্ন জনগোষ্ঠী
এ দেশে
ভিড় করত
তো বটেই,
সেসঙ্গে উড়ে
এসে জুড়ে
বসত দুনিয়ার
অন্যান্য দেশের
ক্ষুধার্ত, লোভী,
স্বার্থপর ও
ধূর্ত জনগণ।
ধর্মের নামে
রাজনীতির সেই
সময়ের মতবাদ—‘জোর
যার মুল্লুক
তার’-এর
পীড়নে তারা
অতিথি নারায়ণ
যেন বা
রামায়ণ-মহাভারতের
শ্বেতাঙ্গ ফর্সা
চামড়ার দেবতা
হয়ে স্বর্গ
থেকে নেমে
এসে গৃহ
এবং ধীরে
ধীরে সমগ্র
তামাটে বর্ণ
মানুষের দেশ
দখল করে
শত শত
বছর ধরে
দেশটিকে কঠোর
শাসনের মধ্যে
নিষ্পেষিত করা
শুরু করেছিল
এবং আর্য
হয়ে অনার্য
ও দ্রাবিড়দের
ওপরে। সারা
পৃথিবীতে বাংলাদেশ
তখন শিল্প,
সাহিত্য, বিজ্ঞান,
শিক্ষা, ধর্ম,
সংগীত, চিকিৎসা,
প্রযুক্তি ও
বাণিজ্যের খুব
উঁচু স্থানে
বিরাজ করত।
এখনকার লোহা,
তামা, রুপা,
স্বর্ণ ও
ব্রোঞ্জের কারিগরদের
বংশপরিক্রমায় লোকশিল্প
যেমন বয়ন
শিল্প, সীবন
শিল্প, ধাতব
শিল্প, মৃন্ময়
শিল্প, মসলিন
ও নকশিকাঁথা
সৃজন, মসলা,
রন্ধনশিল্প, শস্য,
ফল, ফুল,
মাছ, মধু,
গবাদিপশু পালন,
সর্বোপরি চট্টগ্রামের
সমুদ্রবন্দর থেকে
জাহাজ নির্মাণ
করে বর্তমানের
মতো ইউরোপসহ
অন্য দেশে
সরবরাহ করা
হতো। সেই
গৌরবময় যুগের
অবসান হয়
ঔপনিবেশিক শাসক
ইংরেজ-বণিকের
শাসনকাল থেকে।
বিজয় সেনের
আমলে তার
নেতৃত্বে শ্রীলংকায়
বাঙালিরা উপনিবেশ
স্থাপন করেছিল।
ধর্মভিত্তিক শাসন
পাল, গুপ্ত,
সেন, পরে
সুলতানি ও
মোগল শাসনের
শেষে ইংরেজ,
ভারত ভাগ
ও পাকিস্তানিদের
আগমন। এর
আগে বল্লাল
সেনের আমলে
হিন্দু বর্ণপ্রথার
তীব্র নিষ্পেষণে
অতিষ্ঠ ও
জর্জরিত সাধারণ
মানুষ আফগানি
বখতিয়ার খিলজির
১৭ অশ্বারোহী
দ্বারা বাংলাদেশ
দখলকে স্বাগত
জানিয়েছিল, যদিও
তিনি বিহারের
পৃথিবীখ্যাত নালন্দা
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরীহ
প্রতিভাবান শত-সহস্র
বিজ্ঞজন, অধ্যাপক,
পণ্ডিত, শিক্ষাবিদ,
ছাত্রসহ সমগ্র
এলাকা অমানুষিক
ও নিষ্ঠুরভাবে
ধ্বংস করে
এ দেশে
আগ বাড়িয়েছিলেন।
এখানে উল্লেখ্য
যে ইংরেজ
আর পরে
বর্বর অশিক্ষিত
পাকিস্তানিরা ছাড়া
অন্য কোনো
শাসক দল
এ দেশের