যুদ্ধাপরাধী আজহারের ফাঁসি আপিলেও বহাল

বণিক বার্তা অনলাইন

জামায়াতের সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল যুদ্ধাপরাধী এটিএম আজহারুল ইসলামের যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া সাজা বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ। ২০১০ সালে যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরুর পর আপিলে আসা এটি অষ্টম মামলা, যার ওপর চূড়ান্ত রায় হলো।

আজ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারকের আপিল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার মাত্র এক মিনিটে রায়ের সংক্ষিপ্তসার জানিয়ে দেয়। বেঞ্চের অন্য তিন সদস্য হলেন- বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি জিনাত আরা এবং বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান। রায় ঘোষণার সময় আসামি আজহারুল গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে ছিলেন।

জামায়াতের একসময়ের অন্যতম শীর্ষ এই নেতা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালীন ইসলামী ছাত্র সংঘের রংপুর জেলা কমিটির সভাপতি এবং আলবদর বাহিনীর জেলা শাখার কমান্ডার ছিলেন। সে সময় তার নেতৃত্বেই বৃহত্তর রংপুরে অপহরণ, নির্যাতন, হত্যা ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল বলে এ মামলার বিচারে উঠে আসে।

একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০১২ সালের ২২ আগস্ট মগবাজারের বাসা থেকে আজহারকে গ্রেফতার করা হয়। পরের বছর ১২ নভেম্বর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় তার যুদ্ধাপরাধের বিচার। ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তিন অভিযোগে এটিএম আজহারের মৃত্যুদণ্ড এবং দুই অভিযোগে মোট ৩০ বছরের কারাদণ্ড দেয়।

বিধি মোতাবেক, এখন আসামি আজহারুল এই রায় পর্যালোচনার আবেদন করতে পারবেন। তাতে সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত না বদলালে সবশেষ চেষ্টা হিসেবে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারবেন। তাতেও সাড়া না মিললে তাকে ঝুলতে হবে ফাঁসির কাষ্ঠে।

এটিএম আজহারুল ইসলামের জন্ম ১৯৫২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলার বাতাসন লোহানীপাড়া গ্রামে। বাবার নাম নাজির হোসাইন, মা রামিসা বেগম।

এ মামলার দ্বিতীয় অভিযোগে রংপুরের বদরগঞ্জ থানার মোকসেদপুর গ্রামে গুলি চালিয়ে ১৪ জনকে হত্যা, তৃতীয় অভিযোগে বদরগঞ্জের ঝাড়ুয়ারবিলের আশেপাশের গ্রামে এক হাজার চারশর বেশি হিন্দু গ্রামবাসীকে গুলি চালিয়ে হত্যা এবং চতুর্থ অভিযোগে কারমাইকেল কলেজের চারজন অধ্যাপক ও একজন অধ্যাপকের স্ত্রীকে দমদম ব্রিজের কাছে নিয়ে গুলি করে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে আজাহারকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া। 

এছাড়া রংপুর শহর এবং আশেপাশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অসংখ্য নারীকে ধরে এনে টাউন হলে আটকে রেখে ধর্ষণসহ শারীরিক নির্যাতনে সহযোগিতার দায়ে তখনকার এই বদর নেতাকে দেওয়া হয় ২৫ বছরের কারাদণ্ড।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন