রাণীনগরে তিন বছরেও শেষ হয়নি সেতুর নির্মাণকাজ

বণিক বার্তা প্রতিনিধি নওগাঁ

নওগাঁর রাণীনগরের কাশিমপুর ইউনিয়নের সর্বরামপুর-ভবানীপুর গ্রামসংলগ্ন রতনডারি খালে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালে। দুটি পিলার নির্মাণে উপজেলা পরিষদ থেকে প্রাথমিকভাবে বরাদ্দ দেয়া হয় ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুটি পিলার নির্মাণও করে। তবে এর পর তিন বছর পেরিয়ে গেলেও সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ করা যায়নি।

স্থানীয়রা জানায়, রতনডারি খালের দুই পাশে কাশিমপুর ও গোনা ইউনিয়ন পরিষদ। এ দুই ইউনিয়নের মানুষকে খাল পারাপার হতে হয় সর্বরামপুর-ভবানীপুরে একটি বাঁশের সাঁকো দিয়ে। বছরের পর বছর সাঁকো তৈরি করেই চলাচল করছে সর্বরামপুর, কাশিমপুর, ডাঙ্গাপাড়া, এনায়েতপুর, ভবানীপুর, দুর্গাপুরসহ দুই ইউনিয়নের ১০ গ্রামের মানুষ। এ অবস্থায় ২০১৬ সালে রাণীনগর উপজেলা পরিষদের উন্নয়ন তহবিল থেকে রতনডারি খালে সাঁকোর স্থানে একটি সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকায় সেতুর দুটি পিলার নির্মাণে দরপত্র আহ্বান করে রাণীনগর উপজেলা এলজিইডি অফিস। দরপত্র অনুসারে ৩০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১২ ফুট প্রস্থের এ সেতুর পিলার দুটি নির্মাণ করেন নওগাঁ সদরের ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া। এরপর সেতুর বাকি কাজ করতে আরো ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দের প্রয়োজন হয়। কিন্তু উপজেলা পরিষদ থেকে প্রয়োজনীয় টাকা না দেয়ায় সেতুর কাজ আর এগোয়নি। ফলে সেতুর অভাবে আশপাশের এলাকার অন্তত ১৫ হাজার মানুষকে নিয়মিত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সাধারণ মানুষের খাল পারাপার ও পণ্য পরিবহনে কষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে খালের পানি বাড়লে দুর্ভোগও বাড়ে। কারণ, শুষ্ক মৌসুমে পানি কম থাকায় হেঁটে খাল পার হতে পারলেও বর্ষা মৌসুমে নড়বড়ে সাঁকো ও নৌকাই হয় একমাত্র ভরসা। এ সময় বিপাকে পড়ে স্কুল ও কলেজগামী শিক্ষার্থীরা।

ডাঙ্গাপাড়ার সপ্তম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী রাজিয়া সুলতানা বলে, আমি যখন পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ি, তখন এ সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল। আমরা মনে করেছিলাম, সেতু নির্মাণের পর খাল পারাপার হতে আমাদের আর দুর্ভোগ পোহাতে হবে না। কিন্তু দুটি পিলার নির্মাণের পর আর কিছুই হয়নি।

গোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত খান হাসান বলেন, সেতুটি নির্মাণ হলে এ এলাকার হাজারো মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হতো। কিন্তু সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়ে আর শেষ হলো না। সেতু না হওয়ায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কথা আমি সংশ্লিষ্টদের বারবার বলেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগের কথা আমার জানা নেই। তাছাড়া দীর্ঘদিন পড়ে থেকে নির্মিত পিলার দুটিও নষ্ট হচ্ছে।

সার্বিক বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাইদুর ইসলাম মিঞা বলেন, প্রাথমিক বরাদ্দের ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা দুটি পিলার নির্মাণে ব্যয় হয়। সেতুর অবশিষ্ট কাজ শেষ করতে আরো ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকার প্রয়োজন। কিন্তু উপজেলা পরিষদের তহবিলে এ পরিমাণ টাকা না থাকায় কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। তবে আশার কথা, উপজেলার আটটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা সম্প্রতি এক সভায় সেতুটির নির্মাণে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের বিষয়ে একমত হয়েছেন। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, উপজেলা পরিষদের এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) তহবিল থেকে এ অর্থ বরাদ্দ দেয়া হবে। এ টাকা পেলেই দরপত্র আহ্বান করে সেতুর বাকি অংশের কাজ শেষ করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন