পাবলিক ইস্যু রুলস অনুসারে পুঁজিবাজারে আসার জন্য প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) সাবস্ক্রিপশনে ন্যূনতম ৬৫ শতাংশ আবেদন জমা পড়তে হয়। এর কমে হলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির আইপিও বাতিল হয়ে যায়। এ বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত বিদ্যুৎ খাতের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেড (এপিএসসিএল) সেকেন্ডারি মার্কেটে লেনদেনযোগ্য বন্ডের আইপিও সাবস্ক্রিপশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেখা যায় কোম্পানিটির বন্ডে ৩৫ শতাংশ আবেদন জমা পড়েছে। এর ফলে আইনানুসারে ন্যূনতম সাবস্ক্রিপশনের বাধ্যবাধকতা পূরণ না হওয়ার কারণে কোম্পানিটির বন্ডের আইপিও বাতিল হয়ে যাচ্ছে।
জানতে চাইলে আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন
কোম্পানি লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সোহেল
রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আশুগঞ্জ পাওয়ারের বন্ডে ৩৫ কোটি টাকার আবেদন জমা
পড়েছে। এর মধ্যে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের কোটায় মাত্র ২২ কোটি টাকার আবেদন জমা পড়েছে।
আর অন্যান্য কোটায় জমা পড়েছে ১৩ কোটি টাকার আবেদন। আইনানুসারে ন্যূনতম ৬৫ কোটি
টাকার আবেদন জমা হওয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল। এর ফলে আইনানুসারে কোম্পানিটির বন্ডে
আইপিও বাতিল হয়ে যাবে। সেকেন্ডারি মার্কেটে লেনদেনযোগ্য বন্ডের বিষয়ে সাধারণ
বিনিয়োগকারীদের তেমন একটা ধারণা না থাকার কারণেই কোম্পানিটির আইপিও আবেদনে সাড়া
পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।
আইপিওর মাধ্যমে সেকেন্ডারি মার্কেটে
লেনদেনযোগ্য বন্ড ছেড়ে পুঁজিবাজার থেকে ১০০ কোটি টাকার তহবিল সংগ্রহের মাধ্যমে ৪০০
মেগাওয়াটের কম্বাইন সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগের পরিকল্পনা ছিল আশুগঞ্জ
পাওয়ারের। এর মধ্যে ভূমি উন্নয়ন ও সিভিল ওয়ার্কের জন্য ৪৬ কোটি ৮০ লাখ, প্রাথমিক
জ্বালানি ৩০ কোটি, যানবাহন ক্রয়ে ৩ কোটি ৬০ লাখ,
প্রকৌশলী ও পরামর্শক সেবার জন্য ৪ কোটি ৪০ লাখ, চলতি
মূলধন বাবদ ১০ কোটি ৯৯ লাখ ও আইপিওর খরচ খাতে ৪ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ের পরিকল্পনা
ছিল। দেশে সরকারি কিংবা বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে প্রথমবারের মতো
কোনো প্রতিষ্ঠান আইপিওর মাধ্যমে সেকেন্ডারি বাজারে বন্ড ছাড়ার ঘটনা এটাই প্রথম।
বন্ডের আইপিও আবেদনে প্রত্যাশিত সাড়া
না পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে আশুগঞ্জ পাওয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এএমএম
সাজ্জাদুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন,
এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো
কিছু জানতে পারিনি। ন্যূনতম আবেদন জমা না পড়ার কারণে আইপিও বাতিল হবে কিনা, সেটি
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হবে। তিনিও বিনিয়োগকারীদের
মধ্যে বন্ডের বিষয়ে পর্যাপ্ত ধারণা না থাকার কারণেই আইপিওতে প্রত্যাশিত আবেদন জমা
না হওয়ার কথা জানান।
প্রসঙ্গত, বিএসইসির
৬৯২তম কমিশন সভায় আশুগঞ্জ পাওয়ারের আইপিও অনুমোদন করা হয়। কোম্পানিটির ইস্যু
ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিল আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড ও ব্র্যাক ইপিএল
ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড। ট্রাস্টি হিসেবে ছিল আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড
ও নিরীক্ষক এসএফ আহমেদ অ্যান্ড কোম্পানি।