স্ত্রী ও সন্তানের স্বীকৃতি দিয়ে ১৮ বছর পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত মো. ইসলাম (৪৯)। গতকাল দুপুরে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। মো. ইসলাম ঝিনাইদহ সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের আজিজ মৃধার ছেলে।
কারাগার সূত্রে জানা গেছে, ২০০০ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় মৌলভীর মাধ্যমে ইসলামের সঙ্গে এক নারীর বিয়ে পড়ানো হয়। পরের বছরের ২১ জানুয়ারি ওই নারীর গর্ভে এক ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। তবে ইসলাম এ সন্তান নিজের বলে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানালে ওই নারীর বাবা তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেন। এ মামলায় ২০০৫ সালের ১০ জানুয়ারি ঝিনাইদহের অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালত ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগেও তার সাজা বহাল থাকে। পরে তিনি জামিনের আবেদন করলে আদালত তাকে ওই নারীকে স্ত্রী ও সন্তানকে নিজের বলে স্বীকৃতি দেয়ার শর্ত দেন। শর্তে রাজি হওয়ার পর জেলা প্রশাসকের অনুমতিক্রমে গত বুধবার যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে ওই নারীর সঙ্গে ইসলামের বিয়ের কাবিন হয়। একই সঙ্গে তিনি ওই নারীর গর্ভজাত সন্তানকে নিজের বলে স্বীকৃতি দেন। পরে আপিল রিভিউয়ের শুনানির সময় তিনি কাবিন জমা দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ তার জামিন মঞ্জুর করলে গতকাল তাকে মুক্তি দেয়া হয়। এ সময় তার বাবা আবদুল আজিজ মৃধা ও বোন মমতাজ বেগমসহ পরিবারের চার সদস্য কারাফটকে উপস্থিত ছিলেন। তবে তার স্ত্রী ও ছেলে উপস্থিত ছিলেন না।
সূত্র জানায়, রায় ঘোষণার পর ২০১৫ সালের ১৭ মে ইসলামকে ঝিনাইদহ থেকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। ভালো কাজের জন্য অর্জিত রেয়াতসহ ১৯ বছর ১৭ দিন কারাভোগ করেছেন তিনি। এর মধ্যে মূল সাজা খেটেছেন ১৪ বছর ৬ মাস ২৯ দিন। তার অবশিষ্ট সাজা ১০ বছর ১১ মাস ১৪ দিন।
যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার আবু তালেব বলেন, আদালতের নির্দেশে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত মো. ইসলামকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র জেল সুপার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু নওশাদ বলেন, এ ঘটনা একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
মুক্তি পাওয়ার পর মো. ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন বন্দি ছিলাম। মুক্তি পেয়ে খুব খুশি। স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে পরিবারের সঙ্গে বাকি দিনগুলো কাটাতে চাই।