The man whose money kick-started the Bank of England was William Phips. Martin Parker Professor of Organisation and Culture, University of Leicester ডুবে যাওয়া স্প্যানিশ জাহাজ ১৬৪১ সালের সেপ্টেম্বরে ক্যারিবিয়ান সমুদ্রে মূল্যবান সম্পদবাহী একটি স্প্যানিশ জাহাজ ডুবে যায়। খবরটি প্রথমে চেপে রাখা হয়। কারণ জানাজানি হলে নিমজ্জিত জাহাজের মধ্যে থাকা ধনসম্পদ লুট হয়ে যেতে পারে। আলমিরান্তা নামের ৬০০ টনের জাহাজটি মেক্সিকো থেকে স্পেনের উদ্দেশে যাওয়ার পথে ঝড়ের কবলে পড়ে। ৫৩২ জন যাত্রীর মধ্যে কোনোমতে ১৯৪ জন প্রাণে বেঁচে গেলেও জাহাজের সব সোনাদানা, টাকা-পয়সার সলিল সমাধি ঘটেছিল। সে সম্পদের বড় অংশের মালিকানা ছিল স্পেনের রাজা চতুর্থ ফিলিপের। সেকালে দক্ষিণ আমেরিকার উপনিবেশগুলো থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে স্প্যানিশ জাহাজ প্রায়ই আটলান্টিক পাড়ি দিত। মাঝে মাঝে দুর্ঘটনায় কোনো কোনো জাহাজ চিরতরে হারিয়ে যেত। জাহাজটি ছিল ডুবে যাওয়া জাহাজগুলোর মধ্যে বৃহত্তম। তাই রাজকীয় উদ্যোগে স্প্যানিশ অনুসন্ধানীরা ওই এলাকায় তন্নতন্ন করে জাহাজের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। জাহাজের ধ্বংসাবশেষ কিংবা হারিয়ে যাওয়া মূল্যবান সম্পদের কিছুই উদ্ধার করা যায়নি। জাহাজডুবির খবরটা বেশিদিন চাপা থাকেনি। জানাজানি হওয়ার পর নানা দেশের সম্পদলোভী অভিযাত্রীরা ক্যারিবিয়ান সাগরে একের পর এক অভিযান চালিয়ে গেছে গুপ্তধনের খোঁজে। কিন্তু জাহাজটি ঠিক কোথায় ডুবে গিয়েছিল তার কোনো হদিস ছিল না কারো কাছে। তাই খুঁজে খুঁজে হয়রান হয়ে ফিরে গেছে অভিযাত্রীরা। কারো ভাগ্যের শিকে ছেঁড়েনি দীর্ঘ ৪৫ বছর। ১৬৮৭ সালের জানুয়ারিতে সেই ডুবে যাওয়া জাহাজের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পান উইলিয়াম ফিপস নামের এক আমেরিকান গুপ্তধন সন্ধানী। গুপ্তধন শিকারি উইলিয়াম ফিপস উইলিয়াম ফিপসের জন্ম ১৬৫১ সালে ব্রিটিশ শাসিত আমেরিকার ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের দরিদ্র এক পরিবারে। ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত গ্রামে ভেড়ার পাল চরানো বাদে আর কোনো জীবিকা ছিল না তার। ১৮ বছর বয়সে জীবিকার সন্ধানে তিনি বোস্টন শহরে চলে আসেন। চার বছর ধরে জাহাজ নির্মাণের কাজে হাত পাকানোর পর তিনি বোস্টনের এক সচ্ছল ব্যবসায়ীর বিধবা কন্যা মেরি স্পেনসারকে বিয়ে করেন। বৈবাহিক সূত্রে তিনি বেশকিছু সম্পদের মালিক হয়েছিলেন। সে টাকায় ১৬৭৫ সালে তিনি একটা নৌযান নির্মাণের কারখানা খোলেন বোস্টন শহরে। সমুদ্রগামী নৌযান তৈরি করে হয়ে ওঠেন পুরোদস্তুর জাহাজের কারবারি। কিন্তু ১৬৭৬ সালে আমেরিকান আদিবাসীদের সঙ্গে ইংরেজ ঔপনিবেশিকদের মধ্যে সংগঠিত একটা যুদ্ধ তার সদ্য আলোর মুখ দেখা ব্যবসার ওপর আঘাত হানে। আদিবাসী ইন্ডিয়ানদের আক্রমণে তার কারখানা ধ্বংসের মুখে পতিত হয়। কিছুকাল পর তার মধ্যে সমুদ্রের তলদেশ থেকে ডুবন্ত জাহাজের গুপ্তধন উদ্ধারের নেশা ভর করে। ১৬৮০ সালে বাহামা দ্বীপের পাশে এক অভিযানে গিয়ে তিনি প্রথমবারের মতো কিছু জাহাজডুবির সম্পদ উদ্ধার করেন। অভিযানে যারা অংশ নিয়েছিল তাদের সবাই বেশ ভালো রকমের লাভ করেছিল। সে থেকে বোস্টন শহরে ডুবন্ত জাহাজের সম্পদ উদ্ধার করার বিষয়ে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন ফিপস। ১৬৮৩ সালে তিনি ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে লন্ডন শহরে গিয়ে উপস্থিত হন। কাকতালীয়ভাবে ওই সময়ে ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় চার্লসের অন্যতম উপদেষ্টা স্যার জন নারব্রুর সঙ্গে দেখা হয় তার। যিনি অল্প কিছুদিন আগে ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে ডুবন্ত জাহাজের গুপ্তধন উদ্ধারের একটা গোপন অভিযান পাঠিয়েছিলেন। স্যার নারব্রুর সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পেয়ে তিনি সমুদ্রের তলদেশ থেকে ডুবন্ত জাহাজের সম্পদ উদ্ধারের ব্যাপারে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানান। তখন স্যার নারব্রু রাজা দ্বিতীয় চার্লসের অনুমতি নিয়ে আরেকটি অভিযানের জন্য নির্বাচিত করেন উইলিয়াম ফিপসকে। সাধারণত এমন অভিযানের ক্ষেত্রে রয়াল নেভিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা না থাকলে কাউকে দায়িত্ব দেয়া হয় না। কিন্তু এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হয়েছিল ক্যারিবিয়ান সমুদ্রে তার সম্পদ আহরণের পূর্ব অভিজ্ঞতার কারণে। অভিযানের জন্য তাকে কোনো টাকা-পয়সা দেয়া হয়নি। স্যার নারব্রু শুধু প্রয়োজনীয় জাহাজ সরবরাহ করেন। অভিযানে যারা অংশ নেবেন তাদের নিজেদের টাকায় অভিযান শেষ করতে হবে। অভিযান সফল হলেই তারা লাভের অংশ পাবে। জন ফিপসের সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছে তাতে অভিযানে প্রাপ্ত সম্পদের ৩৫ শতাংশ রাজাকে দেয়ার পর বাকি অংশ নাবিকদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিতে পারবে। সে লাভের আশায় নাবিকরা এ অভিযানে যুক্ত হয়েছিলেন। অভিযান পরিকল্পনা চূড়ান্ত হওয়ার পর উইলিয়াম ফিপস লন্ডন থেকে ‘রোজ অব আলজিয়ার্স’ নামের ২০ কামানের একটা ফ্রিগেট নিয়ে আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে বোস্টনে পৌঁছান। সেখান থেকে তিনি আরো কয়েকটি জাহাজ ও ডুবুরি জোগাড় করে ক্যারিবিয়ান সাগরে গুপ্তধনের সন্ধানে নেমে পড়েন। অভিযানটি চলেছিল বছর খানেক ধরে। সে সময় তাকে অনেক অনাহুত পরিস্থিতি ও প্রতিযোগিতার চ্যালেঞ্জ নিতে হয়েছিল অন্য অভিযাত্রী দলের সঙ্গে। অনেক ঝক্কিঝামেলার পর অভিযান শেষ করে তিনি লন্ডনে ফিরে যান ১৬৮৫ সালের আগস্টে। যে পরিমাণ সম্পদ উদ্ধার হয়েছিল সেখান থেকে রাজার অংশ ছিল মাত্র ৪৭১ পাউন্ড। লাভের অংকটা তেমন লোভনীয় না হলেও তিনি অভিযান শেষ করে লন্ডন ফিরে এসে যে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছিলেন সেজন্য তাকে ১৬৮৬ সালের পরবর্তী ক্যারিবিয়ান অভিযানের জন্য নির্বাচিত করা হয়।
ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের চার্টার, ১৬৯৪। সূত্র: ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের ওয়েবসাইট