লন্ডন থেকে ভার্চুয়াল বক্তব্যে তারেক রহমান

স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে

বাসস

কিশোরগঞ্জে গতকাল বিএনপির সমাবেশে ভার্চুয়াল বক্তব্য দেন তারেক রহমান ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘জনগণের চাওয়া-পাওয়া যেন নষ্ট হয়ে না যায়, সে বিষয়ে আমাদের সতর্কভাবে খেয়াল রাখতে হবে। আবার নতুন করে কোনো স্বৈরাচার যেন ষড়যন্ত্র করার সুযোগ না পায়।  স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা তাদের ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। তাই সব রাজনৈতিক দল ও মানুষকে সজাগ থাকতে হবে।’

কিশোরগঞ্জ শহরের পুরাতন স্টেডিয়ামে গতকাল এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এ কথা বলেন। তিনি লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সমাবেশে যুক্ত হন। ‘গণসমাবেশ ও আন্দোলনে শহীদ পরিবার এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা’ শিরোনামে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। 

অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা বারবার বলছি, বহু মানুষের আত্মত্যাগের বিনিময় যে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সে সরকারকে ব্যর্থ হতে দেয়া যাবে না। এ দেশের জনগণের প্রত্যাশা হচ্ছে তাদের রাজনৈতিক অধিকার ফিরে পাওয়া। সে অধিকার যেন সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়, তার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করবে অন্তর্বর্তী সরকার।’

তারেক রহমান বলেন, ‘দল জনগণের ভোটে ক্ষমতায় এলে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে প্রতিটি পরিবারকে “‍স্বপ্ন প্রকল্প ফ্যামিলি কার্ড” দেয়া হবে। প্রাথমিকভাবে তৃণমূল থেকে জেলা পর্যায়ের সুবিধাবঞ্চিতরা এর আওতায় আসবে। পরিবারের সদস্য সংখ্যা সর্বোচ্চ চারজন বিবেচনায় এ কার্ড দেয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘সবাই এ কার্ডের প্রাপক হবেন বিধায় কোনো দলীয় বা স্থানীয় প্রভাবে কাউকে বঞ্চিত করার সুযোগ থাকবে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের একটা অংশ এ কার্ডের মাধ্যমে বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। প্রাথমিকভাবে গ্রামের সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য প্রবর্তন করা হলেও পরবর্তী সময়ে সবাই এর প্রাপক হবে।’

অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমানও বক্তব্য দেন। সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সভাপতি শরিফুল আলম। 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘আজ আমরা সবাই এ মাঠে একত্র হয়েছি, মুক্ত পরিবেশে কথা বলছি, ভয়হীন পরিবেশে আমরা কথা বলছি। আজ মঞ্চে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কথা শুনেছি, স্বজন হারানো মানুষের বক্তব্য শুনেছি। যারা গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে গিয়ে শহীদ হয়েছেন, পঙ্গু হয়েছেন, তাদের প্রতি যথাযথ সম্মান ও শ্রদ্ধা জানানোর জন্য আজ আমরা সবাই একত্র হয়েছি। ভয়হীন এ পরিবেশ তৈরির জন্য বিগত ১৭ বছর এ দেশের মানুষের অপেক্ষা করতে হয়েছে। এ পরিবেশের জন্য দেশের মানুষকে অনেক কিছু ত্যাগ করতে হয়েছে, সংগ্রাম করতে হয়েছে, প্রতিবাদ-প্রতিরোধ করতে হয়েছে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনে কিশোরগঞ্জ জেলায় ১৭ জনকে আমরা হারিয়েছি, যারা আত্মত্যাগ করেছেন এ দেশের মানুষের অধিকারের জন্য।’

তারেক রহমান বলেন, ‘শুধু বিএনপির নেতাকর্মী নয়, বিরোধী দলসহ বহু সাধারণ মানুষ অত্যাচারের শিকার হয়েছে, নির্যাতিত হয়েছে। স্বৈরাচার বাংলাদেশের মানুষকে আবদ্ধ করে রেখেছিল। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ দেখিয়ে দিয়েছে, গুলির সামনে নিজেদের বুক পেতে কীভাবে দাবি আদায় করতে হয়। এ দেশের মানুষ বারবার প্রমাণ করেছে, তারা স্বৈরাচারীর শাসন মেনে নিতে রাজি নয়। ১৯৭১ সালে যেমন লাখ লাখ শহীদের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হয়েছিল, তেমনি রক্ত দিয়ে ৫ আগস্ট মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য স্বৈরাচারকে বিদায় দিতে আমরা সক্ষম হয়েছি। এ আত্মত্যাগ আমাদের ধরে রাখতে হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন