বস্তায় মরিচ চাষ

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, বগুড়া

বগুড়ার সরাবলি গ্রামে বস্তায় মরিচ চাষ শুরু করেছেন নুরুল ইসলাম ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

বন্যার কারণে বগুড়ায় প্রতি বছরই কাঁচামরিচ উৎপাদন ব্যাহত হয়। এ কারণে বর্ষা মৌসুমে মসলাজাতীয় পণ্যটির দামও বেড়ে যায়। এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতি এড়াতে বস্তায় মরিচ চাষ শুরু করেছেন কৃষক। এ পদ্ধতিতে পতিত জমি, বসতবাড়ির আঙিনা ও সড়কের পাশে চাষ করা যাবে। সঠিক যত্ন নিতে পারলে ভালো ফলনও পাওয়া সম্ভব। বস্তায় মরিচ চাষের বিষয়টি মাঠ পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে পারলে এবং পতিত জমিকে কাজে লাগাতে পারলে উৎপাদন বাড়ার পাশাপাশি দামও কমে যাবে বলে মনে করেন কৃষি কর্মকর্তারা।

গাবতলী উপজেলার নেপালতলীর দক্ষিণ সরাবলি গ্রামের নুরুল ইসলাম বস্তায় মরিচ চাষ শুরু করেছেন। তার বাড়ির আঙিনা, পতিত জমি ও বাড়ির আশপাশে প্রায় দেড় হাজার বস্তায় মরিচ চাষ করেছেন। এর আগে তিনি ১২ হাজার বস্তায় আদা চাষ করেন। আদা চাষে তিনি বেশ সফলতা পান। আদা চাষে সফলতার পর এবার বস্তায় মরিচ চাষ করেছেন।

নুরুল ইসলাম জানান, মূলত অসময়ে মরিচ চাষ করতেই এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আষাঢ়, শ্রাবণ ও ভাদ্র মাসে মরিচ চাষ তেমন একটা হয় না। বর্ষা মৌসুমে মরিচ গাছ পানি পেয়ে নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণে প্রতি বছর এ সময় মরিচের দাম বাজারে চড়া থাকে। অথচ আমরা বস্তায় মরিচ চাষ করলে সহজে পরিবহনযোগ্য হবে এবং অতিবর্ষণ, রোদ ও শীত থেকে গাছকে বাঁচানো যাবে। সেই সঙ্গে পতিত জমি ব্যবহার করে অতিরিক্ত মরিচ উৎপাদন করা যাবে। বস্তায় মরিচ চাষে সার ও জৈব সার অপচয় হয় না। বস্তার ভেতরে থেকে উর্বরা শক্তি বেশি পায়। বস্তায় একটি গাছ থেকে ৮০০-১২০০ গ্রাম মরিচ পাওয়া যাবে। জমিতে একটি সাধারণ মরিচ গাছ থেকে ৭০০-১০০০ গ্রাম মরিচ পাওয়া যায়। আগাছা মরিচ চাষের বড় অন্তরায়। বস্তায় আগাছা কম হবে। পানি দিলেও পানি জমে থাকবে না। এ কারণে মরিচ গাছ নষ্ট হবে না। প্রতিটি বস্তায় খরচ পড়েছে ৩০-৩৫ টাকা। প্রতিটি বস্তা থেকে মরিচ বিক্রি হবে প্রায় ২০০ টাকার।

বগুড়ার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বগুড়া এমনিতেই মরিচ চাষের জন্য বিখ্যাত। বস্তায় মরিচ চাষ করা যায়। বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় বস্তায় মরিচ চাষ শুরু হয়েছে। তবে বস্তার মাটি হতে হবে উর্বর। ভালো মাটি ও সার থাকলে বস্তায় ভালো ফলন পাওয়া যাবে। বস্তায় মরিচ চাষের উপকার বেশি। এতে পতিত জমি ব্যবহার করা যায়। বর্ষাকালে মরিচ গাছের কোনো ক্ষতি হয় না।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন