খবর

তিস্তার পানি বণ্টন ইস্যুতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘বিষয়টি ঝুলিয়ে রেখে কোনো লাভ হচ্ছে না। আমি কতটুকু পানি পাব, সেটি জানা থাকলে আমার জন্য ভালো। এমনকি পানির পরিমাণ নিয়ে আমি যদি সন্তুষ্ট নাও থাকি, তাতেও অসুবিধা নেই। কিন্তু এ সমস্যার সমাধান হতে হবে।’ খবর দ্য হিন্দু।

ভারতের সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা এ অবস্থান তুলে ধরেন। গতকাল এ সাক্ষাৎকার প্রকাশ করা হয়। সাক্ষাৎকারের প্রথম অংশ বৃহস্পতিবার প্রকাশ করে পিটিআই।

ঢাকায় নিজের সরকারি বাসভবনে এ সাক্ষাৎকার দেন অধ্যাপক ইউনূস। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, তিস্তা ইস্যুতে অন্তর্বর্তী সরকার ভারতকে কোনো চাপ বা তাড়া দেবে কিনা। জবাবে তিনি বলেন, ‘চাপ (পুশ) শব্দটির ব্যাপ্তি অনেক। আমি সে কথা বলছি না। আমরা আলোচনা করব। তবে আমাদের একসঙ্গে বসে সমস্যা সমাধান করতে হবে।’

২০১১ সালে ঢাকা সফর করেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। ওই সময় তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। তবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধিতায় চুক্তিটি শেষমেশ আর হয়নি। 

সাক্ষাৎকারে ইউনূস বলেন, ‘তিস্তার পানি বণ্টন নতুন কোনো বিষয় নয়, খুবই পুরনো বিষয়। আমরা একাধিকবার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি। এ আলোচনার শুরু পাকিস্তান আমলে। আমরা সবাই চেয়েছিলাম চুক্তিটি চূড়ান্ত রূপ পাক। এমনকি ভারত সরকারও প্রস্তুত ছিল। তখন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার এজন্য প্রস্তুত ছিল না।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের আন্তর্জাতিক নিয়মনীতি মেনে এ বিষয়ে সমাধান করতে হবে। ভাটির দেশগুলোর নির্দিষ্ট কিছু অধিকার রয়েছে এবং আমরা সেই অধিকার চাই।’

অন্তর্বর্তী সরকারের পানিসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সম্প্রতি পিটিআইকে বলেন, ‘তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরুর ব্যাপারে নয়াদিল্লিকে তাগাদা দেয়া হবে।’ তার এ বক্তব্যের পরই ড. ইউনূস এ অবস্থান ব্যক্ত করলেন। 

বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতির জন্য ভারতকে দায়ী করে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত খবর প্রসঙ্গে ড. ইউনূসের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘চুক্তি সইয়ের আগে এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে একটা মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নেয়া যেতে পারে।’

ড. ইউনূস বলেন, ‘যখন ভারতের হাইকমিশনার আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলেন, আমি বলেছি, বন্যার সময় পরিস্থিতি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সে লক্ষ্যে আমরা অধিকতর ভালো ব্যবস্থাপনার ওপর কাজ করতে পারি। দুই দেশের মধ্যে এমন সমন্বয়ের ক্ষেত্রে আমাদের কোনো চুক্তির প্রয়োজন নেই। সীমান্ত হত্যার বিষয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘সীমান্ত সমস্যা মোকাবেলায় হত্যাকাণ্ড কোনো সমাধান নয়।’