বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

চার দাবি জানিয়ে ফের দুদিনের আল্টিমেটাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

সংগৃহীত

কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেট যোগাযোগ স্বাভাবিক করা ও কারফিউ প্রত্যাহারসহ চারটি দাবি জানিয়ে সরকারকে ফের দুদিনের আলটিমেটাম দিয়েছেন। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা এ দাবি জানান। এ সময় উপস্থিতি ছিলেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, সর্দার নাবিল মাহমুদ শুভ, হাসিব আল ইসলাম, মোমতাহিনা মাহজাবিন মোহনাসহ আট শিক্ষার্থী।


বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্য দুই দাবিগুলো হলো বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সরিয়ে দিয়ে সরকার ও প্রশাসনের সমন্বয়ে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করে আবাসিক হল খুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে ফেরার পরিবেশ তৈরি এবং সারা দেশে যারা কোটা সংস্কার আন্দোলন সমন্বয় করেছেন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি মূল আট দাবি নিয়ে আলোচনার পরিবেশ তৈরি করা। আগামীকালের মধ্যে তাদের এসব দাবি পূরণ না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্দোলন ঘোষণার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ছাত্র আন্দোলনের এ প্লাটফর্মটির এ নেতারা।    


সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘যত লাশ পড়েছে সেটি অনাকাঙ্ক্ষিত। প্রজ্ঞাপনের আগে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপের প্রয়োজন ছিল। সেটি ছাড়া আমরা এ প্রজ্ঞাপনকে চূড়ান্ত সমাধান হিসেবে গ্রহণ করব না। আমরা সব অংশীজনের সমন্বয়ে একটি নীতিনির্ধারণী সংলাপ চাচ্ছি। কোটা নিয়ে যাতে ভবিষ্যতে কোনো সমস্যা না হয়, সেজন্য একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের আহ্বান জানাচ্ছি। এ প্রজ্ঞাপনের সঙ্গে কিন্তু আমাদের আন্দোলন সম্পর্কযুক্ত নয়, আমরা আমাদের আন্দোলন থেকে সরে আসছি না। জনগণ আমাদের সঙ্গে নেমেছে, তাদের যে দাবিদাওয়া, যে পরিমাণ হতাহত, তার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন অব্যাহত রাখব।’ 


সারজিস আলম বলেন, ‘চারটি জরুরি দাবি জানিয়ে গত ৪৮ ঘণ্টার একটি আলটিমেটাম দিয়েছিলাম, সেটি মানা হয়নি। আমরা আবারো দুদিনের একটি আলটিমেটাম দিচ্ছি। বৃহস্পতিবারের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে সরকারের পক্ষ থেকে কথা বলে সে পরিবেশ তৈরি করা হোক, যাতে শুক্রবার আমরা সারা দেশের সব শিক্ষার্থীরা নিজেদের ক্যাম্পাসে ফিরে যেতে পারি। শিক্ষার্থীরা এখন যদি ক্যাম্পাসে ফিরে যেতে না পারি তাহলে একাডেমিক কার্যক্রম ফিরিয়ে আনার যে উদ্যোগ, তা গালগল্পেই সীমাবদ্ধ হয়ে যাবে। আমাদের চারটি দাবি যদি মেনে নেয়া হয় তাহলে যে আটটি দাবি রয়েছে সেগুলো নিয়ে কথা বলার পরিবেশ তৈরি হবে।’


তিনি আরো বলেন, ‘দেশের শিক্ষার পরিবেশ আবার সুন্দরভাবে ফিরে আসবে কিনা, ক্যাম্পাসে ফিরে যাব কিনা, কবে আমাদের আন্দোলন শেষ করব; এটি পুরোপুরি সরকারের ওপর নির্ভর করছে, আমাদের দাবিগুলো জরুরি ভিত্তিতে মেনে নিয়ে গোটা দেশের পরিবেশ কতটুকু উপযোগী করা হচ্ছে তার ওপর। সরকার যদি চায় এটি বৃহস্পতিবারই করে দিতে পারে, আবার যদি না চায় তাহলে আমাদের আন্দোলন অনির্দিষ্টকালের দিকে যেতে পারে। সে অনুযায়ী আন্দোলন কোন দিন শেষ হবে সেটি নির্ধারণ করবে সরকারই।’


বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদের বাবা-মা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে সন্তানের সন্ধান দাবি করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন