রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে দ্বিতীয় মেয়াদে স্বাস্থ্য ও জীবন বীমা চুক্তি
স্বাক্ষর করেছে জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। গত দুই বছরে ১ কোটি ৮ লাখ
টাকার স্বাস্থ্যবীমা দিয়েছে এ কোম্পানি। তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বীমার
টাকা পেতে নানা জটিলতার মধ্যে পড়তে হয়। তবে বীমা কর্তৃপক্ষ বলছেন, ক্লেইম
অসম্পূর্ণ থাকায় কিছু সমস্যা হয়েছে।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. অবায়দুর রহমান প্রামানিক ও জেনিথ
লাইফের সিইও এস এম নুরুজ্জামান নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে
চুক্তিপত্র স্বাক্ষর হস্তান্তর করেন।
চুক্তি অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী দুর্ঘটনা অথবা
অসুস্থতার কারণে ইনডোর চিকিৎসা বাবদ বার্ষিক সর্বোচ্চ ৮০ হাজার টাকা এবং আউটডোর
চিকিৎসা বাবদ বার্ষিক সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা স্বাস্থ্য বীমা সুবিধা পাবেন।
তাছাড়া কোনো শিক্ষার্থী মৃত্যুবরণ করলে ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবক পাবেন ২ লাখ টাকা।
এছাড়া তালিকাভুক্ত যেকোনো হাসপাতাল থেকে ডিসকাউন্ট মূল্যে চিকিৎসার সুযোগও মিলবে
তাদের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্বাস্থ্য বীমা প্রকল্পে ২০২২ সালের জুলাই
থেকে ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত চুক্তি করে জেনিথ ইসলামি লাইফ ইনসুরেন্সে লিমিটেড
ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। এতে বাৎসরিক ২৫০ টাকা প্রদানের মাধ্যমে সকল শিক্ষার্থীকে
এ চুক্তির আওতায় আনা হয়। মেয়াদ শেষ হওয়ায় ১ জুলাই আরো ২ বছরের জন্য চুক্তির মেয়াদ
নবায়ন করা হয়। গত মেয়াদে শিক্ষার্থীদের ২ হাজার ২০০ দাবি পরিশোধ করেছে কোম্পানি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বীমায় পরিশোধকৃত অর্থের পরিমাণ ১
কোটি ৮ লাখ ৯০ হাজার ৬৬৬ টাকা। তবে ২ বছরে শিক্ষার্থীরা ক্লেইম করেছে ৩ হাজার
৫১৫টি। দাবিকৃত অর্থের পরিমাণ ২ কোটি ৭০ লাখ ৭৩ হাজার ৯৭৮ টাকা। এরমধ্যে ৪৫২টি ৪৭
লাখ ৩ হাজার ৬০৫ টাকা পরিশোধ করা হয়নি। এগুলোকে অসম্পূর্ণ ক্লেইম বলছেন বীমা
কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া চুক্তির শর্ত বহির্ভূত হওয়ায় শিক্ষার্থীদের ৮৬৩ ক্লেইম বাতিল
করা হয়েছে। গত চুক্তিতে কোম্পানিকে ১ কোটি ৩০ লাখ ৯৭ হাজার ২৫১ টাকা প্রদান করেছে
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বীমা কর্তৃপক্ষ বলছেন, নতুন এই চুক্তিতে পূর্বের সেবাগুলোই পাবেন
শিক্ষার্থীরা। তবে ক্লেইমের সময়সীমা ৪৫ দিন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এবার
পূর্বের কোনো রোগের চিকিৎসার পরও ক্লেইমের সুযোগ থাকবে। একজন শিক্ষার্থী ইনডোর ও
আউটডোর চিকিৎসার ক্ষেত্রে ৩ মাসের মধ্যে কেবল একবার ক্লেইমের সুযোগ পাবে। এই
ক্লেইম চিকিৎসা নেয়ার দিন থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে করতে হবে। বছরে সর্বোচ্চ ৮টি
ক্লেইমের সুযোগ থাকবে।
এ ব্যাপারে কোম্পানির ডেপুটি ভাইস প্রেসিডেন্ট আনোয়ার হোসেন জানান,
শিক্ষার্থীদের যথাযথ সাপোর্টিং ডকুমেন্টসের অভাবে অনেক সময় টাকা পেতে বিলম্ব হয়।
তবে চুক্তি যেহেতু নবায়ন হয়েছে সেহেতু অসম্পূর্ণ ক্লেইম সম্পূর্ণ করলে
শিক্ষার্থীদের দাবি পরিশোধ করা হবে। আমরা চুক্তির বাইরে এই সুবিধা দিচ্ছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক অবায়দুর
রহমান প্রামানিক বণিক বার্তাকে বলেন, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি রোধে প্রয়োজনীয়
ব্যবস্থা নিয়েছি। ক্লেইমের পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই শিক্ষার্থীরা চিকিৎসা ব্যয়
ফেরত পাবে।