মুক্তি পেলেন উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা অ্যাসাঞ্জ

বণিক বার্তা ডেস্ক

ছবি : সংগৃহীত

মার্কিন সরকারের গোপন নথি ফাঁস করে আলোচনায় আসা ওয়েবসাইট উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ মুক্তি পেয়েছেন। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর সোমবার যুক্তরাজ্যের কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। অবশ্য এ মুক্তির আগে আইন লঙ্ঘনের দায় স্বীকার করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি সমঝোতা চুক্তি করতে হয়েছে অ্যাসাঞ্জকে। খবর বিবিসি।

যুক্তরাজ্যের পুলিশ অ্যাসাঞ্জকে গ্রেফতার করে ২০১৯ সালে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি মার্কিন প্রতিরক্ষাবিষয়ক গোপন তথ্য সংগ্রহ ও প্রকাশের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত। যুক্তরাষ্ট্রের ভাষ্য, ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধের বিষয়ে উইকিলিকস এমন কিছু তথ্য প্রকাশ করেছে, যা অনেক মানুষের জীবনকে বিপন্ন করে তুলেছে।

ইরাক ও আফগানিস্তানে যুদ্ধের বিষয়ে ২০১০ সালে গোপন নথি ফাঁস করে উইকিলিকস। এরপর অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করে যুক্তরাষ্ট্র। গ্রেফতার এড়াতে একপর্যায়ে লন্ডনের একুয়েডর দূতাবাসে আশ্রয়ে নেন অ্যাসাঞ্জ। সেখানে প্রায় সাত বছর কাটানোর পর ২০১৯ সালে তাকে গ্রেফতার করে যুক্তরাজ্য সরকার। এর পর থেকে তিনি যুক্তরাজ্যের কারাগারেই ছিলেন। সম্প্রতি অ্যাসাঞ্জ মার্কিন সরকারের সঙ্গে একটি সমঝোতা চুক্তি করেন। চুক্তি অনুযায়ী, তিনি এখন তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ স্বীকার করে নেবেন। 

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিবিএসের খবরে বলা হয়েছে, নিজের অপরাধ স্বীকার করার জন্য অ্যাসাঞ্জকে কারাগারে পাঠানো হবে না। উল্টো এতদিন তিনি যে কারাভোগ করেছেন, সেটির জন্য ক্ষতিপূরণ পাবেন।

উইকিলিকস জানিয়েছে, কারাগার থেকে মুক্তির পর সোমবার বিকালে লন্ডনের স্ট্যানস্টেড বিমানবন্দরে যান অ্যাসাঞ্জ। সেখান থেকে তিনি যুক্তরাজ্য ত্যাগ করেন। যুক্তরাজ্যের বিচার বিভাগের এক চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ৫২ বছর বয়সী অ্যাসাঞ্জ এখন নিজের দেশ অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে যাবেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকে মার্কিন সরকারের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছিল, তারা যেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে বিচার কার্যক্রম প্রত্যাহার করেন। এরপর গত এপ্রিলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানান, তিনি অস্ট্রেলিয়া সরকারের অনুরোধ বিবেচনা করে দেখবেন। 

তথ্য ফাঁসের পর অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে ১৮টি মামলা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র সরকার। বেশির ভাগই করা হয় দেশটির গুপ্তচরবৃত্তিবিষয়ক আইনের অধীনে। এরপর মার্কিন সরকারের কৌঁসুলিরা চেয়েছিলেন, প্রতিটি মামলার জন্য আলাদা বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করে অ্যাসাঞ্জকে শাস্তি দিতে।

জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ ২০০৬ সালে উইকিলিকস প্রতিষ্ঠা করেন। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ওয়েবসাইটটি তাদের এক কোটিরও বেশি গোপন নথি প্রকাশ করেছে, যা দেশটির সরকারি গোপন তথ্য ফাঁসের সবচেয়ে বড় ঘটনা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন