নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে টাইম ম্যাগাজিনে লেখা নিবন্ধে সরকারের বিরুদ্ধে করা বেশকিছু অভিযোগের জবাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। নোবেল পুরস্কার নিয়ে ‘জেলাসি’ থাকার যে মন্তব্য ওই নিবন্ধে করা হয়েছে, এর জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কের আদলে ড. ইউনূসকে আলোচনায় আসার চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, ‘উনাকে জেলাসি করার কী আছে, সে আসুক না, মাঠে আসুক, চলুক আমার সঙ্গে। আমেরিকায় ডিবেট হয় না, আসুক, কথা বলব।’
ভারত সফরের অভিজ্ঞতা জানাতে গতকাল গণভবনে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে টাইম ম্যাগাজিনে প্রকাশিত নিবন্ধের প্রসঙ্গ টেনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, ‘আমার সঙ্গে কারো দ্বন্দ্ব নাই, আর জীবনেও নোবেল পুরস্কারের জন্য আমার কোনো আকাঙ্ক্ষা নাই। কারণ, আমার লবিস্ট রাখার মতো টাকাও নাই, পয়সাও নাই। আর আমি কখনো এটা চাইওনি।’
একই সঙ্গে শ্রম আদালতের মামলায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দণ্ডিত হওয়ার পেছনে সরকারের ভূমিকা নেই বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘মামলা করেছে শ্রমিকরা। পদোন্নতি চাওয়ায় শ্রমিকদের বরখাস্ত করা হয়েছে। তারা এরপর মামলা করেছে। আমি তো জানতামও না এটা।’
প্রধানমন্ত্রী অধ্যাপক ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে জানান, ‘পয়সা’ খরচ করে এসব লেখানো হচ্ছে। এর আগেও বিবৃতির কথা বলে অনেকের নামে ‘বিজ্ঞাপন’ ছাপিয়েছেন ড. ইউনূস। সরকারপ্রধান বলেন, ‘শ্রমিকদের কি কোনো অধিকার নাই? যারা এত লেবার নিয়ে কথা বলে, মানবাধিকারের কথা বলে, এত কিছু বলে, তারা কোথায় এখন? তারা কি এই লেবারদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে? দাঁড়ায় নাই।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমেরিকা-ইউরোপে কেউ ট্যাক্স ফাঁকি দিলে তার সম্পত্তি সঙ্গে সঙ্গে বাজেয়াপ্ত করে বিক্রি করে দেবে। এটাই তাদের নিয়ম। সেটা দেখেন না কেন? প্রতিবার ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে যাচ্ছে। প্রতিবার মামলা করে তার কাছ থেকে ট্যাক্স আদায় করতে হচ্ছে। যারা লিখেছে, তারা এ অনুসন্ধানটা করুক।’
শ্রম আদালতে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির ‘পক্ষ’ নিয়ে টাইম ম্যাগাজিনে প্রতিবেদন ছাপানো নিয়েও প্রশ্ন তোলেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘এখন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি সে। একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামির পক্ষে এত কথা লেখে কীভাবে, ওই সাংবাদিককে জিজ্ঞেস করেন। কনভিক্টেড লেবার কোর্টে, সরকারের কোর্ট না, লেবার কোর্টে। আইএলও কনভেনশন, প্রটোকলে আমরা স্বাক্ষর করেছি, আমরা শ্রমিকের স্বার্থ রক্ষা করতে বাধ্য। এখানে আমাদের কিছু করার নাই।’