বেনজীর আহমেদের জালিয়াতির অভিযোগ

পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ১১ কর্মকর্তাকে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বেনজীর আহমেদ

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের পাসপোর্ট জালিয়াতির অভিযোগ অনুসন্ধানে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ১১ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল দুদকের প্রধান কার্যালয়ে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদকের উপপরিচালক হাফিজুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন একটি দল।

গতকাল জিজ্ঞাসাবাদে দুদক কার্যালয়ে উপস্থিত পাসপোর্ট অফিসের ১১ কর্মকর্তার মধ্যে আটজনের নাম পাওয়া গেছে। বাকি তিনজনের নাম তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন ও সাইদুর রহমান ছাড়াও মুনসী মুয়ীদ ইকরাম, আবু নাঈম মাসুম, সুভাষ চন্দ্র রায়, আজিজুল হক, মহসিন ইসলাম ও মোতালেব হোসেন রয়েছেন।

তবে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ বিষয়ে গণমাধ্যমের কাছে কোনো কথা বলতে রাজি হননি দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আব্দুল্লাহ ও সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন। অফিস থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকরা তাদের কাছে জানতে চান, ‘‌বেনজীরের বিষয়ে দুদক কোনো কথা বলছে না কেন? তাকে কোনোভাবে বাঁচানোর চেষ্টা হচ্ছে কিনা।’ এসবের কোনো জবাব না দিয়ে তারা গাড়িতে উঠে চলে যান।

সাবেক এ আইজিপির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি পাসপোর্টে আড়াল করেছেন তার পুলিশ পরিচয়। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত তিনি সরকারি চাকরিজীবী পরিচয়ে নীল রঙের অফিশিয়াল পাসপোর্ট করেননি। সুযোগ থাকার পরও নেননি লাল পাসপোর্ট। এমনকি বেসরকারি চাকরিজীবী পরিচয়ে সাধারণ পাসপোর্ট তৈরির ক্ষেত্রেও আশ্রয় নিয়েছেন নজিরবিহীন জালিয়াতির। কিন্তু নবায়নের সময় ধরা পড়লে নবায়ন কার্যক্রম আটকে দেয় পাসপোর্ট অধিদপ্তর। সে সময় তিনি র‍্যাবের মহাপরিচালক থাকায় চিঠি দেয়া হয় র‍্যাব সদর দপ্তরে। তবে অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে ম্যানেজ করেন সব। পাসপোর্ট অফিসে না গিয়েই নেন বিশেষ সুবিধা।

দুদক সূত্র জানিয়েছে, বেনজীর আহমেদের নামে সাতটি পাসপোর্টের সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে দুদকের এক নোটিসে পাঁচটি পাসপোর্টের নম্বর পাওয়া গেছে। এর বাইরে দুটি পাসপোর্টের সন্ধান তাদের কাছে আছে। এ বিষয়ে আরো খোঁজ নেয়া হচ্ছে।

গতকাল জিজ্ঞাসাবাদ করা ১১ জনের মধ্যে আব্দুল্লাহ আল মামুন ঢাকার বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসে পরিচালক হিসেবে ২০২১ সালের অক্টোবরে যোগ দেন। তার নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলা রয়েছে। দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে (ঢাকা-১) উপপরিচালক মো. ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী মামলাটি করেন। মামলার তদন্ত করতে প্রথমে পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনকে নিয়োগ দেয়া হয়। পরে উপপরিচালক মশিউর রহমানকে নিয়োগ করা হয়। তবে তদন্ত এখনো শেষ হয়নি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন