মানিকগঞ্জে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের হিসাব রক্ষক শহিদুল ইসলামের হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার (২২ জুন) সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। গতকাল রোববার (২৩ জুন) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেফতাররা হলেন, মানিকগঞ্জের সিংগাইর থানার শ্যামনগর গ্রামের আনিস শেখের ছেলে মিস্টার আলী (২৩) ও একই গ্রামের এখলাছ শেখের ছেলে মো. শাহীন(১৮)। তারা সম্পর্কে চাচাতো ভাই।
নিহত শহিদুল ইসলাম খানের বাড়ি সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার ভাজনদাসগাথী এলাকায়। তিনি মানিকগঞ্জ জেলা কারাগারে চাকরি সুবাদে পরিবারসহ মানিকগঞ্জে ভাড়া বাসায় থাকতেন। এরপর কাশিমপুর কারাগারে কেন্দ্রীয় কারাগারে বদলি হলেও তার পরিবার মানিকগঞ্জেই থাকত।
পুলিশ সুপার জানান, আসামি মিস্টার আলী শুকতারা পরিবহন নামে একটি বাসের চালক। আর শাহীন ছিলেন হেলপার। তারাসহ আরো তিনজন ডাকাতির পরিকল্পনা নিয়েই ঈদের আগের দিন ১৬ জুন রাতে গাবতলী থেকে বাসে যাত্রী ওঠান। নবীনগর বাসস্ট্যান্ড থেকে কাশিমপুর কারাগারের হিসাবরক্ষক মানিকগঞ্জে বাসায় আসার উদ্দেশ্যে ওই বাসে ওঠেন। বাসটি মানিকগঞ্জে পৌঁছানোর আগেই বাসের অন্যান্য যাত্রীরা তাদের গন্তব্যে নেমে যান। বাসে থাকেন শুধু শহিদুল ও আরেক যাত্রী।
পরিকল্পনা অনুযায়ী বাসচালক ও হেলপারসহ পাঁচ ডাকাত ওই যাত্রীকে মারধর করে টাকা-মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। মানিকগঞ্জ সদরের ধলেশ্বরী সেতুর আগে অজ্ঞাত ওই যাত্রীকে বাস থেকে ফেলে দেন তারা। পরে ধলেশ্বরী সেতুতে ওঠার পর বাসে থেকে একই কায়দায় ফেলে দেয়া হয় শহিদুল ইসলামকে। এসময় তিনি সেতুর নিচে পড়ে প্রাণ হারান। এ ঘটনায় শহিদুলের বড় মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাইশা মালিহা বিভা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। পরে সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা ও গোপন সংবাদের মাধ্যমে হত্যায় জড়িত দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরো জানান, আসামিদের কাছ থেকে শহিদুল ইসলামের ব্যবহৃত মোবাইফোনসহ তিনটি ফোন ও নগদ চার হাজার টাকা জব্দ করা হয়। অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে কাজ করছে পুলিশ।