![](https://bonikbarta.net/uploads/news_image/news_388706_1.jpg?t=1719759405)
১২ জুন
থেকে দ্বিতীয় দফায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার বিশেষ ট্রেন সার্ভিস শুরু হয়। আগামীকাল
সোমবার (২৪ জুন) শেষ হয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও জনপ্রিয় সার্ভিসটি যাত্রী চাহিদা ও
আন্দোলনের মুখে এক মাস বাড়িয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। নির্ধারিত সময়ের পর
আগামী ২৫ জুন থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত বিশেষ ট্রেন হিসেবে
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রুটে যাত্রী পরিবহন করবে কক্সবাজার স্পেশাল। একই
সময়ে ট্রেনটির কোচের সংখ্যা বাড়িয়ে ১৬/৩২ করা হয়েছে।
রেলওয়ে
সূত্রে জানা গেছে, এর আগে রোজার ঈদেও
আগে ৮ এপ্রিল থেকে চট্টগ্রাম- কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেনটি যাত্রীবাহী ট্রেন চালু
করে। সাময়িক এই ট্রেনটি যাত্রী চাহিদা বেশি হওয়ায় চালু রাখা হয়। পরবর্তীতে ৫২দিন
যাত্রী পরিবহনের পর এটি ক্রু ও ইঞ্জিন সংকটের অযুহাত দেখিয়ে ৩০ মে থেকে সার্ভিসটি
বন্ধ করে দেয় রেলওয়ে। সর্বশেষ কোরবানির ঈদের আগে ১২ জুন থেকে ঈদ স্পেশাল হিসেবে
ট্রেনটি ফের চালু করা হলেও আগামীকাল ২৪ জুন পর্যন্ত চলাচলের কথা ছিল। কিন্তু
যাত্রী চাহিদা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দাবির
প্রেক্ষিতে ট্রেনটির সার্ভিস এক মাস অর্থাৎ আগামী ২৪ জুলাই পর্যন্ত বর্ধিত করেছে
রেলওয়ে।
রেলওয়ে
পূর্বাঞ্চলের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সময় বর্ধিত করা স্পেশাল ট্রেনটির র্যাক কম্পোজিশন ১০/২০
থেকে বাড়িয়ে ১৬/৩২ করায় মোট আসন সংখ্যা হবে ৭৪৩টি। পূর্বাঞ্চলের সহকারী প্রধান
পরিচালন কর্মকর্তা (প্যাসেঞ্জার) কামাল আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত জরুরি এই কন্ট্রোল
অর্ডারটি পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজারকে (ডিআরএম) জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
পরিবহন
বিভাগের তথ্যমতে, নতুন কম্পোজিশনে
ট্রেনটিতে শোভন চেয়ার শ্রেণীর ৪টি (প্রতিটিতে ৬০টি আসন), শোভন সহ গার্ড রুম ২টি (প্রতিটিতে ৫৬ আসন), খাবার গাড়ি ও শোভন চেয়ার ৩টি (প্রতিটিতে ২৭ আসন), প্রথম শ্রেণীর চেয়ার ২টি (মাঝে দরজাসহ প্রতিটিতে ৫৪ আসন), খাবার গাড়ি ও শোভন চেয়ার একটি (প্রতিটিতে ২২ আসন), রেক্সিন সিটের শোভন ৩টি (প্রতিটিতে ৬০ আসন), পাওয়ারকার ও নামাজের স্থানযুক্ত কোচ ১টি (আসন নেই)।
বর্তমানে ১০/২০ কম্পোজিশনে ট্রেন চলাচলে আসন সংখ্যা কম হলেও নতুন নিয়মে ২৫ জুন থেকে প্রায় দ্বিগুণ সংখ্যক যাত্রী এই
ট্রেনে ভ্রমণ করতে পারবে। স্পেশাল ট্রেন হওয়ায় সুযোগ থাকা সত্ত্বেও ট্রেনটিতে কোনো
শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত কোচ রাখা হয়নি।
জানতে
চাইলে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান বণিক
বার্তাকে বলেন, রেলের স্বল্প দূরত্বের বাড়তি রাজস্ব
আয়ের ট্রেন হিসেবে কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেনটি জনপ্রিয় হয়েছে। রোজার ঈদের সময় কয়েক
দফায় সময় বাড়িয়ে ট্রেনটি ৫২ দিন চালানো হয়েছিল। কোরবানির ঈদেও ট্রেনটি চালু হলে
যাত্রী চাহিদা বেশি। এজন্য কোচের সংখ্যা বাড়িয়ে সার্ভিসটি আরো এক মাস চালানোর
প্রস্তাব রেলভবন থেকে অনুমোদন পেয়েছে। আগামী ২৪ জুলাই পর্যন্ত চট্টগ্রাম থেকে
কক্সবাজার পর্যন্ত যাত্রী পরিবহন করবে।
এর আগে
চট্টগ্রামে রোববার দুপুরে কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেনের সার্ভিস স্থায়ীকরণের দাবিতে
সংবাদ সম্মেলন করেছে সচেতন নাগরিক সমাজ-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার। পাশাপাশি একই দিন
দুপুরে রেলভবনে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ও চট্টগ্রামের সিআরবিতে পূর্বাঞ্চলের
প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তার কাছে কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেনের সার্ভিস স্থায়ীকরণের
দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। ট্রেনটি স্থায়ী করা না
হলে আগামী ২৫ জুন থেকে ঢাকা-কক্সবাজার গামী ট্রেনের সার্ভিস বন্ধ করে দেয়ার হুঁশিয়ারি
দেয় সচেতন নাগরিক সমাজ-চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের নেতৃবৃন্দ।
রেলের তথ্য
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ৮ এপ্রিল থেকে ২৯
মে পর্যন্ত ৫২ দিনে কক্সবাজার স্পেশাল উভয়পথে আয় করেছে ১ কোটি ৪ লাখ ৪১ হাজার ৩৫
টাকা। ট্রেনটি উভয়পথে প্রতিদিন ২ লাখ ৭৯০ টাকার হিসাবে প্রতি মাসে আয় করেছে গড়ে ৬০
লাখ ২৩ হাজার ৬৭৫ টাকা। আবার চলতি কোরবানি ঈদের সময়ে ১২-২২ জুন পর্যন্ত ১১ দিনে ১০
কোচের ট্রেনটি সর্বমোট ২৯ লাখ ৩৫ হাজার ৮৮০ টাকা আয় করেছে। এই হিসাবে উভয়পথে
ট্রেনটি প্রতিদিন আয় করেছে ২ লাখ ৬৬ হাজার ৮৯৯ টাকা। যা বাংলাদেশ রেলওয়ের আন্তঃনগরসহ
যেকোনো ট্রেনের সঙ্গে আনুপাতিক হারে বাড়তি রাজস্ব আয় বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে
কর্মকর্তারা।