ঘুসের মামলায় ডোনাল্ড ট্রাম্প দোষী সাব্যস্ত

বণিক বার্তা ডেস্ক

ছবি : সংগৃহীত

পর্নো তারকাকে ঘুস দেয়ার মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ব্যবসায়িক নথিপত্র গোপন করে ঘুস দেয়ার বিষয়ে আনীত ৩৪টি অভিযোগের সবগুলোতেই তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান কিংবা সাবেক কোনো প্রেসিডেন্ট প্রথমবারের মতো ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেন। খবর রয়টার্স ও বিবিসি।

বৃহস্পতিবার নিউইয়র্ক আদালতের ১২ জুরি দুদিনের আলোচনার পর ট্রাম্পকে আলোচিত এ মামলায় দোষী সাব্যস্ত করেন। এ মামলায় ট্রাম্পের সর্বোচ্চ চার বছর কারাদণ্ড হতে পারে। তবে এ ধরনের অভিযোগে এর চেয়ে কম সাজার নজিরও রয়েছে। 

আগামী ১১ জুলাই ট্রাম্পের বিষয়ে রায় ঘোষণা হবে। এর তিনদিন পরই হবে রিপাবলিকান পার্টির জাতীয় সম্মেলন, যেখানে ট্রাম্পকে দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ঘোষণা করার কথা। তার আগে ট্রাম্পের জন্য এ রায় বড় ধরনের ধাক্কা হয়ে এল।

তৃতীয় দফায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ছেন ব্যবসায়ী থেকে প্রেসিডেন্ট হওয়া ৭৭ বছর বয়সী ট্রাম্প, যিনি নানা ঘটনায় নানা সময়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনায় এসেছেন।

মামলায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে যৌন সম্পর্কের বিষয়ে মুখ বন্ধ রাখতে ঘুস দিয়েছিলেন। ঘুসের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার। এ মামলায় প্রায় ছয় সপ্তাহ ধরে বিচারকাজ চলে। এরপর গত মঙ্গলবার সমাপনী যুক্তিতর্কের পর রায় জানাতে আলোচনায় বসেন ১২ জুরি। দুদিন আলোচনার পর ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করেন তারা।

আদালতে ট্রাম্প ৩৪টি অভিযোগই অস্বীকার করেছেন। স্টর্মির সঙ্গে যৌন সম্পর্ক থাকার বিষয়টিও স্বীকার করেননি তিনি। ফলে জুরি বোর্ডের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তিনি যে আপিল করবেন, সেটা অনেকটা নিশ্চিত। বৃহস্পতিবার আদালত কক্ষে প্রবেশের আগে তিনি সংবাদকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে মামলাকে ‘অপমানজনক’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘সবাই এর বিরুদ্ধে।’

ট্রাম্পের দোষী সাব্যস্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে দুটি প্রশ্ন সামনে এসেছে। প্রথমত, তার কি সত্যিই কারাদণ্ড হতে পারে। দ্বিতীয়ত, দণ্ডিত হলে তিনি আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়তে পারবেন কিনা।

কারাদণ্ডের বিষয়ে ট্রাম্পের আইনজীবী ও সাবেক কৌঁসুলিসহ ছয় আইন বিশেষজ্ঞ রয়টার্সকে বলেন, অতীতে ফৌজদারি অপরাধের রেকর্ড না থাকলে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকে কারাগারে পাঠানোর ঘটনা খুবই বিরল। আর নিউইয়র্ক রাজ্যে ট্রাম্পের অতীত কোনো ফৌজদারি অপরাধের রেকর্ড নেই। সুতরাং তার ক্ষেত্রে আর্থিক দণ্ড হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

অন্যদিকে সাজা হলেও নির্বাচনে লড়তে ট্রাম্পের সামনে আইনি কোনো বাধা থাকার কথা নয়। কেননা মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর তিন ধরনের যোগ্যতার কথা বলা হয়েছে, সবই ট্রাম্পের রয়েছে। তিন যোগ্যতা হলো কমপক্ষে ৩৫ বছর বয়স হতে হবে; জন্মগতভাবে মার্কিন নাগরিক হতে হবে এবং কমপক্ষে ১৪ বছর যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতে হবে। অপরাধমূলক রেকর্ডের কারণে প্রার্থী হতে না পারার নিয়ম দেশটির সংবিধানে নেই।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন