খাদ্যনালির ক্যান্সার

বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় চাপ বাড়াচ্ছে খাদ্যনালির ক্যান্সার

ফিচার ডেস্ক

ছবি: ক্যান্সার হেল্থ

ক্যান্সার এখন বিশ্বব্যাপী অসংক্রামক রোগের মধ্যে অসুস্থতা ও মৃত্যুর প্রধান কারণ। ২০২০ সালে সারা বিশ্বে ১ কোটি ৯৩ লাখ মানুষ নতুনভাবে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছে। একই বছর ১ কোটি মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। এটি বর্তমানে স্বাস্থ্য পরিচর্যা ব্যবস্থা এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করছে। সম্প্রতি এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। 

খাদ্যনালি হলো পরিপাকতন্ত্রের অঙ্গ, যা মুখ থেকে পাকস্থলীতে খাদ্য ও পানীয় পরিবহন করে। এটি ২৫ দশমিক ৪ সেন্টিমিটার লম্বা।  খাদ্যনালির কোষ থেকে খাদ্যনালির ক্যান্সার আক্রান্ত শুরু হয়। এ ক্যান্সারের দুটি সবচেয়ে সাধারণ হিস্টোলজিক্যাল সাবটাইপ হলো স্কোয়ামাস কার্সিনোমা ও  অ্যাডেনো কার্সিনোমা।

স্কোয়ামাস কার্সিনোমা বিশ্বব্যাপী এখনো সবচেয়ে সাধারণ সাবটাইপ।  ২০১৮ সালে বিশ্বব্যাপী খাদ্যনালির ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ৭২ হাজার। যার মধ্যে ৮৫ শতাংশ স্কোয়ামাস কার্সিনোমায় আক্রান্ত এবং বাকি ১৫ শতাংশ অন্য সাবটাইপগুলোয় আক্রান্ত ছিল। 

খাদ্যনালির ক্যান্সার নিয়ে সম্প্রতি এক গবেষণায় উঠে আসে কোন ধরনের অভ্যাস বা খাবার-দাবার খাদ্যনালির ক্যান্সারকে প্রভাবিত করে। তামাক ধূমপান, খাট (নেশাদ্রব্য) চিবানো, বয়স, বাসস্থান ও লাল কাঁচা মাংসের ব্যবহার এ ধরনের ক্যান্সারকে প্রভাবিত করে। গবেষকরা তামাকের ব্যবহার এড়িয়ে চলার পাশাপাশি নিত্যদিনের খাবারের মেনুতে ফল ও শাকসবজি খাওয়ার পরামর্শ দেন। 

২০২০ সালে বিশ্বের অষ্টম সাধারণ ক্যান্সার ছিল খাদ্যনালির ক্যান্সার এবং বিশ্বব্যাপী যেসব ক্যন্সারে আক্রান্ত হয়ে মানুষ মৃত্যুবরণ করে তার মধ্যে ষষ্ঠ। খাদ্যনালির ক্যান্সার তুলনামূলক দরিদ্র দেশগুলোয় বেশি দেখা যায়। দরিদ্র দেশগুলোর জন্য এটি তৃতীয় সর্বাধিক সাধারণ গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ক্যান্সার এবং সামগ্রিকভাবে চতুর্থ সর্বাধিক সাধারণ ক্যান্সার। 

তবে উন্নত দেশগুলোয় অ্যাডেনো কার্সিনোমো আরেকটি সাবটাইপ স্কোয়ামাস কার্সিনোমাকে ছাড়িয়ে গেছে। সাব-সাহারান আফ্রিকায় খাদ্যনালির ক্যান্সারের প্রকোপ দেশভেদে পরিবর্তিত হয়। ক্যান্সারের ঝুঁকির কারণগুলো বিশ্লেষণ করা গেলে এ তারতম্যের কারণগুলো বিশ্লেষণ করা যেত। উন্নয়নশীল দেশগুলোয় স্কোয়ামাস কার্সিনোমা সাধারণ, অন্যদিকে পশ্চিমা দেশগুলোয় অ্যাডেনো কার্সিনোমায় মানুষ বেশি আক্রান্ত হয়। 

খাদ্যনালির ক্যান্সার বিকাশের জন্য কিছু ঝুঁকি চিহ্নিত করা হয়েছে। যেমন বয়স, তামাক বা ধূমপান, স্কোয়ামাস কার্সিনোমার জন্য নির্দিষ্ট মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের অভাব, ব্যারেটের খাদ্যনালি ও অ্যাডেনো কার্সিনোমার জন্য স্থূলতাকে দায়ী করা হয়। 

ব্যারেটের খাদ্যনালি অ্যাডেনো কার্সিনোমা হওয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি করে। অন্যান্য ক্যান্সার, যেমন ফুসফুস, মাথা, ঘাড় ও কোলোরেক্টাল ক্যান্সারও খাদ্যনালির ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়েছে ।

কিছু হাসপাতালের রিপোর্ট অনুযায়ী, কয়েক দশক ধরে ইথিওপিয়ায় খাদ্যনালির ক্যান্সারের প্রকোপ বাড়ছে। ফলে দেশে খাদ্যনালির ক্যান্সার সম্পর্কিত অসুস্থতা এবং মৃত্যুহার হ্রাস এবং/অথবা প্রশমিত করার জন্য স্থানীয় ঝুঁকির কারণগুলো বের করে আনা গুরুত্বপূর্ণ। 

অল্পসংখ্যক অধ্যয়ন পরিচালিত হয়েছিল। তবে সেগুলো একটি নির্দিষ্ট এলাকায় সীমাবদ্ধ ছিল।

সূত্র: ক্লিনিক্যাল ক্যান্সার রিসার্চ

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন