কেজিতে ৫ টাকা বাড়ল দেশী পেঁয়াজের দাম

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, হিলি

ছবি: ফাইল/নিজস্ব আলোকচিত্রী

হিলিতে একদিনের ব্যবধানে দেশী পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়েছে। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকায় প্রয়োজনীয় সরবরাহের অভাবে গতকাল স্থানীয় বাজারগুলোয় দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ী ও বিক্রেতারা। 

হিলির বাজারগুলোয় গতকাল দেশী পেঁয়াজের দাম ছিল কেজিতে ৭০ টাকা। আগের দিন এটি কেজিতে ৬৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। হিলির কাঁচাবাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে। 

এ বিষয়ে হিলি বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা আবুল হাসনাত বলেন, ‘মোকামে দুদিন আগে প্রকারভেদে প্রতি মণ পেঁয়াজের দাম ছিল ২ হাজার ৩০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা। পরিবহনসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে তখন এসব পেঁয়াজ কেজিতে ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হতো। কিন্তু দুদিনের ব্যবধানে মোকামে পেঁয়াজের দাম মণপ্রতি ২০০-৩০০ টাকা করে বেড়েছে। এখন প্রতি মণ পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায়। সঙ্গে পরিবহন খরচ হিসেব করে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।’ 

তিনি আরো বলেন, ‘ভারত থেকে আমদানীকৃত পেঁয়াজের দাম দেশী পেঁয়াজের চেয়ে বেশি থাকায় লোকসানের ভয়ে আমদানিকারকরা পেঁয়াজ আমদানি করছেন না, যার কারণে মোকামগুলোয় বিভিন্ন আড়তদার পেঁয়াজ মজুদ করে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। এছাড়া আমদানি বন্ধ থাকায় অনেক কৃষক বাড়তি দামের আশায় তাদের পেঁয়াজ মজুদ রেখে অল্প পেঁয়াজ বাজারে বিক্রি করছেন।’ 

হিলি স্থলবন্দর আমদানি রফতানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ বলেন, ‘ভারত সরকার পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিলেও উচ্চ শুল্ক আরোপ বজায় রেখেছে। আর সে শুল্ক পরিশোধ করে দেশের ব্যবসায়ীদের ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানিতে তেমন কোনো পড়তা নেই। এছাড়া দেশী পেঁয়াজের চেয়ে ন্যূনতম ১০ টাকা কম না হলে মানুষ ভারতীয় পেঁয়াজ কিনতে চায় না। এসব কারণ বিবেচনা করে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা।’ 

তিনি আরো জানান, দীর্ঘ পাঁচ মাস সাতদিন বন্ধের পর ১৪ মে ভারতের আরোপিত ৪০ ভাগ শুল্ক পরিশোধ করে এক আমদানিকারক মাত্র এক ট্রাকে ৩০ টন পেঁয়াজ আমদানি করেছিলেন। কিন্তু সে পেঁয়াজ এখনো তিনি বিক্রি করতে পারেননি। কারণ তার আমদানীকৃত পেঁয়াজের পড়তা পড়ছে ৬০ টাকার ওপরে। কিন্তু স্থানীয় বাজারগুলোয় তার দাম ওঠে ৫৫ টাকা। এ দামে বিক্রি করলে এক ট্রাকে ৪-৫ লাখ টাকা লোকশান গুনতে হয় ওই আমদানিকারককে। কাঙ্ক্ষিত দামের গুদামে সে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করে রাখলেও প্রচণ্ড গরমে তার মান খারাপ হতে শুরু করে, যার কারণে শুক্রবার থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে সে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন আমদানিকারক। লোকসানের ভয়ে ওই এক ট্রাকের পর ভারত দিয়ে আর কোনো পেঁয়াজ আমদানি হয়নি। 

এদিকে গতকাল হিলির কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, হিলি বাজারের প্রত্যেকটি দোকানেই দেশী পেঁয়াজের যথেষ্ট সরবরাহ আছে। এর পরও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। এছাড়া বাজারগুলোর দু-একটি দোকানে ভারতীয় পেঁয়াজও দেখা গেছে। এসব পেঁয়াজ ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিল। 

প্রসঙ্গত, অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের সংকট ও দাম বাড়ার অজুহাত দেখিয়ে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল ভারত। এর পর থেকে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ছিল। দেশটি ৪ মে পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়। ব্যবসায়ীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হিলি স্থলবন্দরের ২০ জন আমদানিকারক ২৭ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি পান। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর ১৪ মে বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন