প্রযুক্তিগত দক্ষতার সংকট

২০২৬ সালে বৈশ্বিক কোম্পানিগুলোর ক্ষতির আকার দাঁড়াবে ৫.৫ ট্রিলিয়ন ডলারে

বণিক বার্তা ডেস্ক

২০২৬ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ৯০ শতাংশেরও বেশি কোম্পানিতে প্রযুক্তিগত দক্ষতায় ঘাটতির নেতিবাচক প্রভাব পড়বে ছবি: ম্যাক্রোডটকম

কর্মীদের প্রযুক্তিগত দক্ষতার ঘাটতি বিশ্বব্যাপী নানা খাতের কোম্পানিকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করছে। ইন্টারন্যাশনাল ডাটা করপোরেশনের (আইডিসি) সাম্প্রতিক প্রকাশিত জরিপ গবেষণায় প্রতিবেদন অনুসারে ২০২৬ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ৯০ শতাংশেরও বেশি কোম্পানির প্রযুক্তিগত দক্ষতায় ঘাটতির কারণে প্রায় দশমিক ট্রিলিয়ন ডলার ক্ষতি হবে।

উত্তর আমেরিকার শীর্ষ প্রযুক্তি কোম্পানির প্রায় দুই-তৃতীয়াংশের আয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থতা, পণ্যের গুণগত মানের সমস্যা গ্রাহক সন্তুষ্টি কমে আসার মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রযুক্তিগত দক্ষতার ঘাটতিকে।

প্রতিবেদন অনুসারে, বাণিজ্যিক এন্টারপ্রাইজগুলোয় এআই প্রযুক্তি ব্যবহারের দক্ষতার চাহিদা প্রতিদিন বাড়ছে। অন্যদিকে কর্মক্ষেত্রে আইটি অপারেশনগত দক্ষতা এখন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কিল হিসেবে দেখা হচ্ছে। এছাড়া আর্কিটেকচার, ডাটা ম্যানেজমেন্ট, স্টোরেজ সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টসহ ক্লাউড-সম্পর্কিত বিষয়ে দক্ষতার চাহিদা এখন চাকরির বাজারে শীর্ষে রয়েছে। এরই সঙ্গে ডিজিটাল ব্যবসা সম্পর্কে সমন্বিত জ্ঞান, যোগাযোগ নেতৃত্বের দক্ষতার প্রয়োজনীয়তা বিদ্যমান চ্যালেঞ্জকে আরো জটিল করেছে। 

আইডিসির আইটি স্কিলস ফর ডিজিটাল বিজনেস প্র্যাকটিসের রিসার্চ ডিরেক্টর জিনা স্মিথ বলেন, ‘সঠিক দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের যথাযথ পদের জন্য পাওয়া এখনকার চেয়ে আর কখনই এত কঠিন বিষয় ছিল না। আইটি দক্ষতাসম্পন্ন কর্মী ঘাটতি বাড়তে থাকার পাশাপাশি এআইয়ের মতো নতুন প্রযুক্তির অগ্রগতি হচ্ছে। তাই এন্টারপ্রাইজগুলোকে কর্মীদের নিয়োগ, প্রশিক্ষণ পুনরায় দক্ষ করার সৃজনশীল উপায় খুঁজে বের করতে হবে।

প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে, কোম্পানিগুলো কর্মীদের দক্ষতা উন্নত করার প্রচেষ্টায় নানান বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে কর্মীদের প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামের প্রতি অনীহা থেকে তৈরি বিরোধিতা। কর্মচারীরা প্রায়ই কোর্সের সময়কাল, সীমিত শেখার সুযোগ অর্জিত দক্ষতা ক্যারিয়ারের সঙ্গে অমিল বলে অভিযোগ করে থাকেন। বাধা অতিক্রম করার জন্য শীর্ষ প্রযুক্তি কোম্পানির মধ্যে একটি অনুকূল শিক্ষার পরিবেশ গড়ে তোলা প্রয়োজন। এরই সঙ্গে বহুমুখী শেখন পদ্ধতি গ্রহণ করে প্রচলিত নির্দেশনা থেকে শুরু করে হ্যাকাথন, হ্যান্ডস-অন ল্যাব গেমিফাইড লার্নিং মডিউলের মতো ভিন্ন মাধ্যমে প্রশিক্ষণ চালু করতে হবে বলে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে জেনারেটিভ এআই প্রশিক্ষণের জন্য বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আইডিসির গবেষণা জরিপে অংশগ্রহণ করা অর্ধেকেরও বেশি কোম্পানি আইটি প্রশিক্ষণের জন্য এআই ব্যবহার নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছে বলে জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোনো কোম্পানিতে প্রশিক্ষণ নতুনভাবে শেখার সংস্কৃতি গড়ে তোলা কিছু ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ উপকরণ সরবরাহের চেয়ে বেশি জরুরি। ক্রমাগত প্রশিক্ষণ কেন গুরুত্বপূর্ণ সেটা কর্মীদের বোঝানোর জন্য কোম্পানির নেতৃত্বকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে। প্রয়োজনে কর্মচারীদের লক্ষ্যের সঙ্গে ব্যবসায়িক লক্ষ্যকে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে হবে। এর পাশাপাশি একটি পুরস্কার কাঠামো চালু করা যেতে পারে, যা কর্মীদের অগ্রগতি কর্মক্ষমতার স্বীকৃতিস্বরূপ কাজ করবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন