দুই মাসের সর্বোচ্চে থাই চালের রফতানি মূল্য

বণিক বার্তা ডেস্ক

থাই চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় আগামী দিনগুলোয় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াজুড়ে শস্যটির দাম বেড়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে ছবি: রয়টার্স

থাইল্যান্ডে চলতি সপ্তাহে চালের রফতানি মূল্য বেড়ে দুই মাসের সর্বোচ্চে উঠেছে। ব্রাজিল ও মেক্সিকোয় দেশটির চালের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বাজারদরে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা তৈরি হয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। এদিকে থাই চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় আগামী দিনগুলোয় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াজুড়ে শস্যটির দাম বেড়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাজারসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানিয়েছে এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল কমোডিটি ইনসাইটস। 

থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানে দেশটির গ্রেড বি চাল ব্রাজিল ও মেক্সিকোয় রফতানি হচ্ছে। বর্তমানে ব্রাজিল প্রতি টন থাই চাল ফ্রি অন বোর্ড (এফওবি) চুক্তিতে ৫৮০-৬০০ ডলারে আমদানি করছে। এসব চাল সান্তোস ও পারাগুয়ানা বন্দর দিয়ে দেশটিতে প্রবেশ করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। দুবাইভিত্তিক এক ব্যবসায়ী বলেন, দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলো থেকেই মূলত থাই চালের চাহিদা বাড়ছে। এ কারণে সেখানকার চালের রফতানি মূল্য ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠেছে। 

গ্লোবাল প্ল্যাটসের হিসাব অনুযায়ী, ১৬ মে থাইল্যান্ড এফওবি চুক্তিতে প্রতি টন ৫ শতাংশ ভাঙা চাল ৬১৬ ডলারে এবং একই চুক্তিতে প্রতি টন শতভাগ গেড বি চাল ৬২৬ ডলারে রফতানি করেছে। উভয় জাতের চালই দুই মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ দামে রফতানি করেছে দেশটি। 

বিশ্বের শীর্ষ ১০টি চাল উৎপাদনকারী দেশের মধ্যে একটি ব্রাজিল। প্রতি বছর দেশটি গড়ে ৭০ লাখ টন চাল উৎপাদন করে। আর আমদানি করে গড়ে ১০ লাখ টন। কিন্তু এবার ধান তোলার সবচেয়ে উপযুক্ত সময়ে দেশটি ভয়াবহ বন্যার সম্মুখীন হয়। জমিতেই নষ্ট হয় বিপুল পরিমাণ ধান। এমন পরিস্থিতিতে আগামী মাসগুলোয় দেশটিতে স্থানীয় চাহিদা মেটাতে স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি আমদানি করতে হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। 

সূত্র জানায়, ব্রাজিলে মোট চাল উৎপাদনের ৭০ শতাংশই আসে দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্য রিও গ্রান্ড দো সোল থেকে। কিন্তু এপ্রিলের শেষ দিকে ভয়াবহ বন্যায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাজ্যটির বেশির ভাগ ধান আবাদি জমি। 

এদিকে থাই চালের মূল্যবৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রেখেছে ইন্দোনেশিয়াও। দেশটির সরকারি ক্রয় সংস্থা বুলগ সম্প্রতি চলতি বছরের জন্য দরপত্র ঘোষণা করে। এর অধীনে ৩ লাখ টন ৫ শতাংশ ভাঙা সাদা চাল আমদানি করা হবে। এর মধ্যে ৯০ টনই থাইল্যান্ড থেকে কেনা হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। 

এদিকে ভারত চলতি সপ্তাহে প্রতি টন ভাঙা সেদ্ধ চাল ৫৩১-৫৩৯ ডলারে রফতানি করছে। গত সপ্তাহেও দেশটি একই দামে এ শস্য রফতানি করেছিল। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় অন্ধ্র প্রদেশের এক রফতানিকারক জানান, অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতীয় চালের দাম এখনো অনেক বেশি প্রতিযোগিতামূলক। তবে চাহিদা এখনো বাড়তে শুরু করেনি। 

অন্যদিকে চলতি সপ্তাহে ভিয়েতনাম প্রতি টন ৫ শতাংশ ভাঙা চাল ৫৮৫-৫৯০ ডলারে রফতানি করছে। গত সপ্তাহে রফতানি মূল্য ছিল ৫৮৫ ডলার। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে দাম কিছুটা বেড়েছে। 

ব্যবসায়ীরা বলছেন, চালের স্থানীয় সরবরাহ কমছে। বিপরীতে এটির চাহিদা বাড়ছে। বিশেষ করে ইন্দোনেশিয়ার সরকারি সংস্থা বুলগ আরো বেশি পরিমাণ চালের ক্রয়াদেশ দিচ্ছে। আগামী জুনের দিকে সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলেও জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন