ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা

জবি শিক্ষার্থী তিথি সরকারের পাঁচ বছর কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : সংগৃহীত

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী তিথি সরকারকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তাকে এক বছরের জন্য প্রবেশনে রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জুলফিকার হায়াত গতকাল এ রায় ঘোষণা করেন।

জবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী তিথির বিরুদ্ধে ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার পোস্ট দেয়ার অভিযোগ তুলে ২০২০ সালে মামলা করেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা আবু মুসা রিফাত। এর মধ্যে তিথিকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তিথি তখন দাবি করেছিলেন, তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাকারের কবলে পড়েছে। অভিযোগ জানিয়ে থানায় জিডিও করেছিলেন তিনি।

এরপর ওই বছর ২৪ অক্টোবর ঢাকার পল্লবীর বাসা থেকে থানার পথে বেরিয়ে নিখোঁজ হন তিথি। তার পরিবার থানায় জিডিও করে। এর মধ্যে ওই বছরের ৩১ অক্টোবর সিআইডির সাইবার মনিটরিং টিম দেখতে পায়, সিআইডির মালিবাগ কার্যালয়ের চারতলা থেকে তিথি সরকারকে ‘হাত পা-বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে’ বলে একটি পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হচ্ছে। তখন তদন্তে নেমে ‘গুজব রটনার’ অভিযোগে নিরঞ্জন বড়াল নামের একজনকে রামপুরার বনশ্রী এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনার দুদিন পর অর্থাৎ ওই বছরের ২ নভেম্বর নিরঞ্জনসহ অজ্ঞাত আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রাজধানীর পল্টন থানায় একটি মামলা করা হয়। তারও কয়েকদিন পর ২০২০ সালের ১১ নভেম্বর তিথি সরকারকে গ্রেফতার করে সিআইডি জানায়, নরসিংদীর মাধবদীর পাঁচদোনায় স্বামীর এক দূরসম্পর্কীয় আত্মীয়ের বাড়িতে তাকে পাওয়া গেছে। 

ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বেঞ্চ সহকারী (পেশকার) জুয়েল মিয়া বলেন, ‘আসামি তিথি সরকার দোষ স্বীকার করে প্রবেশনে দেয়ার জন্য আদালতের কাছে আবেদন করেন। আদালত তার আবেদন মঞ্জুর করে এক বছরের জন্য প্রবেশনে দেয়ার সিদ্ধান্ত দেন।’

কোনো অপরাধীকে প্রাপ্য শাস্তি না দিয়ে বা স্থগিত রেখে, কারাবন্দি না রেখে কিংবা কোনো প্রতিষ্ঠানে আবদ্ধ না করে সমাজে খাপ খাইয়ে চলার সুযোগ দেয়াকে বলা হয় ‘প্রবেশন’। এ ব্যবস্থায় আদালতের নির্দেশে প্রবেশন কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে এবং শর্ত সাপেক্ষে পরিবারের সঙ্গে থাকার সুযোগ পান আবেদনকারী।

 এ সময় সাধারণত দণ্ডিতকে মুক্তিযুদ্ধের বই পড়া, বৃক্ষরোপণ, ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা, মাদকবিরোধী শোভাযাত্রায় অংশ নেয়া, প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভালো আচরণ, বিনামূল্যে গান শেখানো, এতিমদের খাবার সরবরাহ, সৎভাবে জীবনযাপন ও মা-বাবার সেবা করার মতো কাজ করতে বলা হয়।

তিথি সরকারকে প্রবেশনে দেয়ার আদেশেও বলা হয়েছে, আসামি এক বছর প্রবেশন কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে থাকবেন। সামাজিক নিয়মকানুন, প্রথা ও রীতিনীতি মেনে চলবেন। ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বেঞ্চ সহকারী জুয়েল মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন