নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. সামসুজ্জোহাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। টিসিবি পণ্য বিতরণে দুর্নীতি এবং তাতে বাধা দিলে এক সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরকে শারীরিকভাবে আঘাত করার অভিযোগের প্রাথমিক তদন্তের পর তার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
গতকাল দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকির হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘টিসিবি পণ্য বিতরণে অনিয়ম, দুর্নীতি এবং স্বজনপ্রীতির অভিযোগ ওঠে ২৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. সামসুজ্জোহার বিরুদ্ধে। এতে প্রতিবাদ জানালে ২৫, ২৬ ও ২৭ নং ওয়ার্ডের জন্য সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর সানিয়া আক্তারকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। এ অভিযোগের প্রাথমিক তদন্তের পর মন্ত্রণালয় অভিযুক্ত কাউন্সিলরকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেয়। এ-সংক্রান্ত চিঠি আমরা পেয়েছি এবং বরখাস্তের বিষয়ে অভিযুক্ত কাউন্সিলরকেও সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।’
সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য ওই ওয়ার্ডে আরেকজন কাউন্সিলরকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হবে বলেও জানান জাকির।
গত ৭ মে বরখাস্তের বিষয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ শামছুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। স্থানীয় সরকার বিভাগ আরেক চিঠিতে অভিযুক্ত কাউন্সিলর সামসুজ্জোহার বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন, ২০০৯ এর ধারা ১৩(৩) ধারা অনুযায়ী তাকে কাউন্সিলর পদ থেকে অপসারণের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়।
গত ৫ মার্চ সন্ধ্যায় ২৬ নং ওয়ার্ডের অনুকূলে আসা টিসিবির পণ্য বিতরণে দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির প্রতিবাদ করায় সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর সানিয়া আক্তারকে মারধর ও লাঞ্ছিত করেন সামসুজ্জোহা ও তার লোকজন। এ ঘটনায় সানিয়া বন্দর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে কাউন্সিলর সামসুজ্জোহা (৫০) ছাড়াও তার ভাই মো. জাহাঙ্গীর (৩৭) ও মো. রিপন ওরফে অটো রিপনকে (৪০) অভিযুক্ত করা হয়। পরদিন একই থানায় পাল্টা অভিযোগ করেন কাউন্সিলর সামসুজ্জোহা।
সানিয়া আক্তারের অভিযোগে ছিল, কাউন্সিলর সামসুজ্জোহা গত বছরের ৯ জানুয়ারি দুই হাজার পরিবারের জন্য আসা টিসিবির পণ্য বিতরণ না করে বিক্রি করে দেন। এ কারণে সম্প্রতি ২৬ নং ওয়ার্ডে ১ হাজার ৯০০ পরিবারের জন্য আসা টিসিবির পণ্য বিতরণের আগে গুনে দেখতে চান সানিয়া। এতে বাধা দেন সামসুজ্জোহা। পরে তাকে অকথ্য ভাষায় গালি দিয়ে চড়-থাপ্পড় মারেন বলে লিখিত অভিযোগে সানিয়া আক্তার উল্লেখ করেছেন।
এ সময় কাউন্সিলর সানিয়া আক্তারের ব্যক্তিগত সচিব মো. নাঈমকেও মারধর করা হয় বলে জানান তিনি। এ ঘটনায় সানিয়া আক্তার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাও নেন।