ছয় প্রান্তিক ধরে যুক্তরাষ্ট্রে স্মার্টফোন বিক্রি নিম্নমুখী

বণিক বার্তা ডেস্ক

ছবি: রয়টার্স

টানা ছয় প্রান্তিক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে স্মার্টফোন বিক্রি কমেছে। এর মধ্যে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) বিক্রি কমেছে ৮ শতাংশ। সম্প্রতি বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের মার্কেট মনিটর প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, কভিড-১৯ মহামারীর সময় অনেক কারখানার কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এর ফলে অ্যাপল ২০২২ সালের শেষ প্রান্তিক থেকে পণ্য সরবরাহ ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে স্থানান্তর করে। এছাড়া ৩০০ ডলার মূল্যের সেগমেন্টও ছিল নিম্নমুখী। বিশেষ করে টেলি নেটওয়ার্ক পরিষেবা কোম্পানিগুলো ফাইভজি নেটওয়ার্কের জন্য বেশি চাপ তৈরি করায় অনেক কোম্পানি বাজার থেকে সরে আসে।

কাউন্টারপয়েন্টের উত্তর আমেরিকার বিভাগে গবেষণা পরিচালক জেফ ফিল্ডহ্যাক বলেন, ‘চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে আপডেট থেকে শুরু করে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ বিক্রিতে পুনরায় লোকসানের দেখা পায়। টেলিকম নেটওয়ার্ক পরিষেবা কোম্পানিগুলো। এছাড়া বাজারে স্মার্টফোনের চাহিদাও সেভাবে বাড়েনি।’ 

তিনি জানান, বিক্রি কমার সঙ্গে ৩০০ ডলার মূল্যের সেগমেন্ট প্রবৃদ্ধিতে না থাকলে অ্যাপল ৫২ শতাংশ বাজার হিস্যা দখলে রেখেছে।

বাজার বিশ্লেষক মরিস ক্লেহেন বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে বছরওয়ারি হিসেবে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস বিক্রি কমেছে। এর মধ্যে এলটিই ডিভাইসের বাজার শেষ হওয়ার পাশাপাশি ফাইভজির চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় খুব বেশি নতুন পণ্য উন্মোচিত হয়নি। ফাইভজি কানেক্টিভিটি চালুর ক্ষেত্রে অতিরিক্ত যে খরচ সেটি উৎপাদনকারীদের ওপর নতুন চাপ তৈরি করে। ফলে লো এন্ড সেগমেন্ট প্রবৃদ্ধি অর্জন করেনি। তবে এর মধ্যে গ্যালাক্সি এস টোয়েন্টি ফোর সিরিজ দ্রুত বাজারজাতের মাধ্যমে বাজারের শীর্ষে ছিল স্যামসাং।

২০২০ সালের পর চলতি বছর সবচেয়ে ভালো প্রথম প্রান্তিক কাটিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রযুক্তি জায়ান্টটি। এ সময় কোম্পানিটির বাজার হিস্যা ৩১ শতাংশ বেড়েছে। বিভিন্ন সূত্রের তথ্যানুযায়ী, ব্যবহারকারীদের মধ্যে নতুন ডিভাইস কেনার চাহিদা ছিল বেশি।

চলতি বছরের বাকি সময় কেমন যাবে এর পূর্বাভাসে কাউন্টারপয়েন্টের সহযোগী পরিচালক হানিশ ভাটিয়া বলেন, ‘টানা ছয় প্রান্তিক ধরে স্মার্টফোনের বিক্রি নিম্নমুখী রয়েছে। সে হিসেবে তৃতীয় প্রান্তিকের আগে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। সে সময় যদি নতুন ডিভাইস বাজারে আনা হয় এবং ক্রেতাদের চাহিদা বাড়ে তাহলে বাজার পুনরুদ্ধার সম্ভব।

অন্যদিকে এশিয়ার দেশ ভারতে ফাইভজি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) প্রভাবে স্মার্টফোন বিক্রি বেড়েছে ৮-১০ শতাংশ। বছরের বাকি সময়েও বিক্রি ঊর্ধ্বমুখী থাকার বিষয়ে আশা প্রকাশ করেছেন বাজার বিশ্লেষক ও সংশ্লিষ্টরা। কাউন্টারপয়েন্টের তথ্যানুযায়ী, জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে দেশটিতে স্মার্টফোন বিক্রি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮ শতাংশ বেড়েছে। অন্যদিকে সিএমআরের বক্তব্য, এ সময় বিক্রি ১০ শতাংশ বেড়েছে।

এশিয়ার দেশটিতে বিক্রির দিক থেকে প্রথমবারের মতো শীর্ষে উঠে এসেছে ভিভো। ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানির বাজার হিস্যা ছিল ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ। চলতি বছর তা ১৯ দশমিক ২ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। বাজার বিশ্লেষকদের মতে ফাইভজি, সিএমএফ (কালার, ম্যাটারিয়াল, ফিনিশ) ও ছবি ধারণে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার কোম্পানির বাজার হিস্যা বাড়াতে সহায়তা করেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন