চট্টগ্রাম টেস্টে হেরে হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ছবি : বিসিবি

চট্টগ্রাম টেস্টের ভাগ্য প্রথম তিনদিনেই নির্ধারণ হয়ে যায়। এরপর ছিল শুধুই আনুষ্ঠানিকতা। গতকাল পঞ্চম ও শেষদিন মাত্র ১ ঘণ্টার মধ্যে সেই আনুষ্ঠানিকতাও সম্পন্ন হলো। ৭ উইকেটে ২৬৮ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ ৩১৮ রানে অলআউট। ১৯২ রানের বড় জয়ে দুই টেস্টের সিরিজে বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করল সিংহলিজরা।

এ জয় দুটি লংকানদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ টেবিলে চারে উঠে গেছে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার দল আর টানা দুই ম্যাচ হেরে টেবিলের আট নম্বরে নেমেছে নাজমুল হোসেন শান্তর বাংলাদেশ। ৪ ম্যাচে ২ জয় ও ২ হারে ২৪ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে শ্রীলংকা, তাদের পয়েন্টের হার ৫০%। বাংলাদেশ ৪ ম্যাচ খেলে জিতেছে ১টি, হার ৩টি।

মেহেদী হাসান মিরাজ গতকাল শেষ দিন সকালে প্রতিরোধ গড়লেও তা শুধু হারের ব্যবধানই যা একটু কমিয়েছে। ১১০ বলে ১৪ বাউন্ডারিতে ৮১ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। সকালে তাইজুলকে সাজঘরে ফেরান স্পিনার কামিন্দু মেন্ডিস। এটা ইনিংসে তার তৃতীয় শিকার। এরপর দুই পেসার হাসান মাহমুদ ও খালেদ আহমেদকে আউট করে অতিথিদের জয় নিশ্চিত করে দেন পেসার লাহিরু কুমারা। 

ম্যাচসেরা ও সিরিজসেরার দুটি পুরস্কারই জিতে নিয়েছেন অবিশ্বাস্য পারফর্ম করা কামিন্দু মেন্ডিস। সিলেটে উভয় ইনিংসেই সেঞ্চুরি করেন তিনি। এরপর চট্টগ্রামে প্রথম ইনিংসে ৯২ রান করার পাশাপাশি দ্বিতীয় ইনিংসে নেন ৩ উইকেট। দুই ম্যাচ মিলে ৩৬৭ রান করেছেন, উইকেট শিকার করেছেন তিনটি। 

সিলেট টেস্টে ৩২৮ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। এবার চট্টগ্রামে ১৯২ রানে হার মানল শান্তর দল। শোচনীয় হারের পেছনে রয়েছে ব্যাটিং ব্যর্থতা। দুই টেস্টের চার ইনিংসে এই প্রথম ২০০-এর বেশি রান করতে পেরেছে স্বাগতিকরা। সিলেট টেস্টে যথাক্রমে ১৮৮ ও ১৮২ এবং চট্টগ্রামে ১৭৮ ও ৩১৮ রান তুলতে পেরেছে স্বাগতিক দল। 

টেস্ট সিরিজের আগে সিলেটে টি২০ সিরিজ ২-১-এ জিতে নেয় শ্রীলংকা, চট্টগ্রামে একই ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। 

বাংলাদেশ ঘরের মাঠে সবসময় স্পিনের ওপর ভরসা করলেও এবার সেই জায়গাটিতে বড় ঘাটতি দেখা যায়। বরং পেসাররা ভালো করেছেন। সাকিব আল হাসান চট্টগ্রাম টেস্টে ফিরলেও খুব বেশি প্রভাব ফেলতে পারেননি। শ্রীলংকার ক্ষেত্রেও তাই। তাদের পেসাররা বাংলাদেশের ৪০ উইকেটের মধ্যে ৩৩টি শিকার করেছেন।

টানা দুটি টেস্ট হারের পর বাংলাদেশ দলনায়ক শান্ত বলেছেন, ‘আপনি দেখেছেন, আমাদের প্রত্যেকেই সেট হয়েছি, তবে বড় স্কোর পাইনি। এটা নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। সেট হলে আপনাকে রান পেতে হবে। আমাদের আরো বেশি ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেট খেলতে হবে।’

সতীর্থদের পারফরম্যান্স নিয়ে তিনি বলেন, ‘হাসান মাহমুদ বেশ ইতিবাচক বোলিং করেছে। সাকিব বোলিং ও ব্যাটিং দুটোই ভালো করেছে। মেহেদীও অনেক ভালো ব্যাট করেছে।’

এদিকে, বোলারদের পারফরম্যান্সে খুশি লংকান দলনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। সিরিজ শেষে তিনি বলেন, ‘বোলাররা তাদের বেসিক কাজটা ঠিকমতো করেছে, আর ব্যাটাররাও তাদের কাজটি করেছে। সিলেটে ব্যাটাররা রান না পেয়ে হতাশ ছিল। যদিও আমাদের ব্যাটাররা খুব অভিজ্ঞ। আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে তারা রান পাবে। আর এখানে স্পিন কার্যকর ছিল না। কাজেই আমি ভাবছিলাম উইকেট পেতে হলে রিভার্স সুইংয়ে মনোযোগ দিতে হবে। বোলাররা সত্যিই তাদের কাজটি দারুণভাবে করেছে। সামনেই ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা সফর আমাদের। বোলারদের ওপর আমার পূর্ণ আস্থা থাকবে।’

সংক্ষিপ্ত স্কোর

শ্রীলংকা: ৫৩১ ও ১৫৭/৭/ডি.। বাংলাদেশ: ১৭৮ ও ৩১৮ (মিরাজ ৮১*, মুমিনুল ৫০; লাহিরু ৪/৫০, কামিন্দু ৩/৩২, প্রবথ ২/৯৯)। ফল: শ্রীলংকা ১৯২ রানে জয়ী। প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ ও প্লেয়ার অব দ্য সিরিজ: কামিন্দু মেন্ডিস (শ্রীলংকা)। সিরিজ: শ্রীলংকা ২-০-তে জয়ী।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন