সিআরবির গাছগুলোকে ঐতিহ্য বৃক্ষ ঘোষণার দাবিতে বেলার নোটিস

নিজস্ব প্রতিবেদক I চট্টগ্রাম ব্যুরো

ছবি : বণিক বার্তা

চট্টগ্রাম নগরীর টাইগারপাস থেকে সিআরবিমুখী মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী সড়কের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী গাছ কেটে রÅvম্প নির্মাণের সব উদ্যোগ বাতিলের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সিমিতি (বেলা)। পাশাপাশি এ সড়কের পুরনো ও শতবর্ষী গাছগুলোকে ঐতিহ্য ঘোষণার দাবি জানিয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান, প্রধান বন সংরক্ষক ও বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপককে (পূর্ব) নোটিস দিয়েছে বেলা। 

১ এপ্রিল টাইগারপাসের আইকনিক সড়কে গাছ কেটে রÅvম্প নির্মাণের সংবাদ প্রকাশ হয় গণমাধ্যমে। বেলার নোটিসে বলা হয়েছে, ‘‌প্রাণ, প্রকৃতি ও পরিবেশের নিরাপত্তার বিধানে সংবিধানের ১৮ (ক) অনুচ্ছেদে অঙ্গীকার করেছে রাষ্ট্র। ফলে যেকোনো উন্নয়ন কার্যক্রমই পরিবেশ রক্ষা করে করতে হবে। কিন্তু তা না করে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে, তা জনস্বার্থের অনুকূলে নয়। র‍্যাম্প নির্মাণের নামে এ গাছগুলো কাটা হলে তা হবে বৃক্ষ ও প্রাকৃতিক ঐতিহ্য হত্যার সামিল। টাইগারপাসের গাছগুলো পাখির আবাসস্থল।’ 

নোটিসে দাবি করা হয়, ‌নগর পরিকল্পনাবিদ ও বিশেষজ্ঞরা র‍্যাম্প নির্মাণের জন্য উপযুক্ত বিকল্প স্থানের প্রস্তাব করেছেন। সিডিএর আইনি দায়িত্ব চট্টগ্রামের উন্নয়নের পাশাপাশি পরিবেশেরও উন্নয়ন করা। সিডিএ যদি পরিবেশের উন্নয়ন বাদ দিয়ে অবকাঠামোর উন্নয়নকেই তার একমাত্র আইনি দায়িত্ব মনে করে, তবে তা হবে টেকসই উন্নয়নের অন্তরায়। পুরনো ও ঐতিহাসিক বৃক্ষ রক্ষায় সরকার বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২-এর ২৩ ধারায় সরকারি জমিতে থাকা সাংস্কৃতিক গুরুত্ব ধারণ করে, যা জাতীয় স্মারক হিসেবে চিহ্নিত এবং বিভিন্ন পাখির আবাসস্থল এমন বৃক্ষকে জাতীয় ঐতিহ্য বা স্মারক বৃক্ষ হিসেবে ঘোষণা করতে পারে। এমন ঐতিহ্য বা স্মারক বৃক্ষের সংরক্ষণের প্রয়োজনে এর ১৪, ১৫ ও ১৬ ধারায় বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপিত আছে। সিডিএ প্রযোজ্য এ আইনের অধীনে মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী সড়কের প্রাচীন ঐতিহ্য ও স্মৃতিবাহী বৃক্ষগুলোকে বিশেষ মর্যাদা দেয়ার আবেদন না জানিয়ে কেটে ফেলার অনুমোদন চেয়েছে, যা জনস্বার্থের পরিপন্থী বলে দাবি করেছে বেলা। 

বেলার এ নোটিসের অনুলিপি প্রেরণ করা হয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে।

প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, রÅvম্প নির্মাণ করতে চট্টগ্রামের আইকনিক দ্বিতল সড়ক হিসেবে পরিচিত টাইগারপাস থেকে সিআরবিমুখী পাহাড়ি রাস্তাটির মাঝের ঢালে আনুমানিক প্রায় ১০ প্রজাতির শতবর্ষী ও ঐতিহ্যবাহী ৪৪টি গাছ কাটার জন্য গাছের গায়ে নাম্বার বসিয়েছে ১নং পত্রগ্রহীতা। নগরীর লালখানবাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত প্রায় ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটর এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মাণ করা হবে। চট্টগ্রামের দ্বিতল এ সড়কের মাঝে পাহাড়ের ঢালে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী ও শতবর্ষী রেইনট্রি, কড়ই, কৃষ্ণচূড়া, মেহগনি, শিরীষ গাছ। এ শতবর্ষী বৃক্ষগুলোর মধ্য থেকে ৪৪টি গাছ সড়কটির সৌন্দর্য ও সংলগ্ন এলাকার প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করে এলিভেটর এক্সপ্রেসওয়ের রÅvম্প নির্মাণের এ উদ্যোগে চট্টগ্রামবাসী যারপর নাই ক্ষুব্ধ ও বিস্মিত। এরই মধ্যে গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে প্রধান বন সংরক্ষক ও জমি ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপকের কাছে সিডিএ চেয়ারম্যান আবেদন করেছেন মর্মে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হয়েছে। 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন