হলমার্কের তানভীর-জেসমিনসহ ৯ জনের যাবজ্জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : বণিক বার্তা

হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. তানভীর মাহমুদ ও তার স্ত্রী এবং গ্রুপের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলামসহ ৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে সোনালী ব্যাংক ধানমন্ডি শাখার জ্যেষ্ঠ নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুন্নেসা মেরিসহ সাত জনের ১০ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এর বিচারক মো. আবুল কাশেম এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে তানভীর ও জেসমিনের পেনাল কোডের ৪০৯ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাদের পাঁচ কোটি টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। এছাড়া দণ্ডবিধি ৪২০ ধারায় তাদের সাত বছরের কারাদণ্ডসহ ২৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।

আসামি সোনালী ব্যাংকের হোটেল শেরাটন বা রূপসী বাংলা শাখার সহকারী উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. সাইফুল হাসান, নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল মতিন, তানভীরের ভায়রা ও গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক তুষার আহমেদ, ম্যাক্স স্পিনিং মিলসের মালিক মীর জাকারিয়া, প্যারাগন গ্রুপের এমডি সাইফুল ইসলাম রাজা, নকশী নিটের এমডি মো. আবদুল মালেক, টি অ্যান্ড ব্রাদার্সের পরিচালক তসলিম হাসানকে পেনাল কোডের ৪০৯/১০৯ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। পেনাল কোডের ৪২০/১০৯ ধারায় তাদের সাত বছরের কারাদণ্ডসহ দুই লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন আদালত।

সোনালী ব্যাংক ধানমন্ডি শাখার জ্যেষ্ঠ নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুন্নেসা মেরি, সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের জিএম অফিসের জিএম ননী গোপাল নাথ ও মীর মহিদুর রহমান, প্রধান কার্যালয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন কবির, ডিএমডি মাইনুল হক, উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) সফিজউদ্দিন ও এ জি এম মো. কামরুল হোসেন খানের পেনাল কোডের ৪০৯/১০৯ ধারায় ১০ বছরের কারাদণ্ডসহ ১০ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে পেনাল কোডের ৪২০/১০৯ ধারায় সাত বছরের কারাদণ্ডসহ দুই লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন আদালত।

সাভারের হেমায়েতপুরের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. জামাল উদ্দিন সরকারের পেনাল কোডের ৪০৯/১০৯ ধারায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ডসহ পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে পেনাল কোডের ৪২০/১০৯ ধারায় দুই বছরের কারাদণ্ডসহ দুই লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন আদালত।

গত ২৮ জানুয়ারি মামলার যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে আদালত রায়ের জন্য ২৮ ফেব্রুয়ারি ঠিক করেছিলেন। তবে ওইদিন রায় থেকে মামলাটি উত্তোলন করে আরও দুই জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দুদকের পক্ষ থেকে আবেদন করা হলে আদালত তা মঞ্জুর করেন। পরে গত ১২ মার্চ আদালত দুদক ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ম্যাক্স স্পিনিং মিলস নামে ভুয়া কোম্পানির হিসাবে ৫২৫ কোটি ৬০ লাখ ৩৮ হাজার টাকার সুতা রফতানি করা হয় বলে নথিপত্রে দেখানো হয়। ওই হিসাবে পুরো অর্থ জমা করে তা থেকে ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা হলমার্কের আরেক ভুয়া প্রতিষ্ঠান হলমার্ক ডিজাইন ওয়্যারের হিসাবে স্থানান্তর করা হয়, যা পরে তানভীর ও তার স্ত্রী তুলে নেন।

তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ৬ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছিলেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. মশিউর রহমান। ২০১২ সালের ৪ অক্টোবর মামলা দায়ের করেছিলেন সহকারী পরিচালক নাজমুচ্ছায়াদাৎ।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন