মেহেদি দিয়ে শিল্পকর্মে রাত্রি এখন সফল উদ্যোক্তা

সিফাত জাহান ইকরা

তাইয়্যেবা আক্তার রাত্রি ছবি: লেখকের সৌজন্যে

পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের ব্যবসা দাঁড় করানোর মতো উদ্যমী সাহস কতজনের থাকে? অবশ্যই সবার থাকে না! কিন্তু যাদের থাকে তারাই হয়ে ওঠেন অনন্য। তাইয়্যেবা আক্তার রাত্রি এমনই একজন শিক্ষার্থী, যিনি মেহেদি দিয়ে নিজস্ব শিল্পকর্ম তৈরির মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে। ছোটবেলা থেকেই আঁকাআঁকির প্রতি ঝোঁক ছিল রাত্রির। পড়তে বসলে পড়ার চেয়ে বেশি নকশা আঁকতেন খাতায়। স্কুলে বান্ধবীদের হাতে কলম দিয়েও নকশা এঁকেছেন অনেক। এর বাইরে ঈদে হাতে মেহেদি পরিয়ে দেয়ার একটা আনুষ্ঠানিকতা যেন তার নিয়মিত দায়িত্ব ছিল। কলেজে পড়া পর্যন্ত কখনো ভাবেননি তিনি একজন মেহেদি আর্টিস্ট হবেন। রাত্রি যখন স্নাতকে আইইউবিতে ভর্তি হন এর কিছুদিন পর তার মায়ের ক্যানসার ধরা পড়ে। তখন বেশ কিছুদিন ভারতে ছিলেন। সেখানে স্থানীয় দোকান থেকে মেহেদি কিনে তিনি তার মাকে পরিয়ে দিতেন মাঝে মাঝে। তারপর হাতের ছবি তুলে সেগুলোকে স্মৃতি করে রাখতে ফেসবুকে একটি পেজ খোলেন। সেখান থেকেই তার এ যাত্রা শুরু। ফেসবুকের পেজ থেকে প্রথম আয় শুরু।

মেহেদির গ্রাহক কারা বেশি জানতে চাইলে রাত্রি বলেন, ‘‌মেহেদি নিতান্তই মেয়েলি বিষয় নেই। এখন ছেলে, বুড়ো মোটামুটি সবাই মেহেদি দিতে পছন্দ করেন। তবে বিয়ের মৌসুমে এবং ঈদে অর্ডার একটু বেশিই আসে। এক এক বিয়ের অনুষ্ঠানে শুধু কনেই নয়, কনের বান্ধবী ও স্বজনরাও হাতে মেহেদি পরিয়ে নেয়। এছাড়া কোনো বিশেষ আনন্দ অনুষ্ঠান উপলক্ষেও অনেকে বুকিং দিয়ে থাকেন।’

কাজ করতে গিয়ে অনেক পারিবারিক বাধার সম্মুখীন হয়েছেন নবীন এ উদ্যোক্তা। তার পরিবারের ধারণা, অন্যের বাসায় গিয়ে মেহেদি পরিয়ে দেয়ার বিষয়টি এখনো সমাজের অনেকে ছোট করে দেখে। এর বাইরে নিরাপত্তার বিষয়টি তো আছেই। রাত্রি বলেন, ‘‌আমি চাই ভবিষ্যতে আমি একজন বড় ‘‌হেনা আর্টিস্ট’ হব। আমার এ ব্যবসাকে অনেকদূর প্রসারিত করব। কাজটি আমার খুব ভালো লাগার। অনেক আনন্দ পাই এ কাজে। আমি নিজেকে একটি ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। মেহেদি দিয়ে নকশা তৈরির ট্রেনিং দিতে চাই। অর্গানিক মেহেদি বিক্রি করার ইচ্ছে আছে।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন