‘‌মাস শেষে যখন অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকে,আনন্দের যেন শেষ থাকে না’

সিফাত জাহান ইকরা

আইইউবির ফ্যাসিলিটিজ অ্যান্ড প্রটোকল ডিপার্টমেন্টের অধীনে ফ্রন্ট ডেস্কে কর্মরত তিন শিক্ষার্থী ছবি: ইকরা

কেমন হয় যদি নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি করে অর্থ ও অভিজ্ঞতা লাভের সুযোগ পাওয়া যায়? শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে (আইইউবি) রয়েছে এমনই সুযোগ। যেখানে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসেই খণ্ডকালীন চাকরি করতে পারছেন। বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এখন পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন চাকরি করার সুযোগ দিয়ে থাকে। সাধারণত সেমিস্টার বা বার্ষিক হিসাব অনুযায়ী এর সময়সীমা নির্ধারণ করা থাকে। এটিই মূলত অন ক্যাম্পাস জব নামে পরিচিত।

আইইউবিতে রয়েছে পাঁচটি স্কুল। স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড অন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ, স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং, টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেস, স্কুল অব লিবারেল আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস এবং স্কুল অব ফার্মেসি অ্যান্ড পাবলিক হেলথ। প্রতিটি স্কুলেই শিক্ষার্থীদের রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট, স্টুডেন্ট টিউটর, কনটেন্ট ক্রিয়েশনসহ বিভিন্ন ধরনের পোস্টে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।

অফিস অব দ্য প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর, অফিস অব দ্য রেজিস্ট্রার, অফিস অব দ্য কন্ট্রোলার অব এক্সামিনেসন্স, মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস ডিপার্টমেন্ট, অফিস অব আন্ডারগ্রেড অ্যাডমিশনস অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল এইড, ইন্টারন্যাশনাল প্রোগ্রামস অ্যান্ড রিলেশনস, ডিভিশন অব স্টুডেন্টস অ্যাক্টিভিটিজ, ক্যারিয়ার গাইডেন্স প্লেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যালামনাই রিলেশনসসহ (সিজিপি অ্যান্ড এআর) আইইউবির প্রশাসনিক দপ্তরগুলোয়ও রয়েছে শিক্ষার্থীদের কাজের সুযোগ।

প্রশাসনিক কিংবা একাডেমিক যেকোনো ডিপার্টমেন্টেই আবেদন করার জন্য প্রয়োজন নির্দিষ্ট কিছু যোগ্যতা। এখানে বলা বাহুল্য, বেশির ভাগ দপ্তরেই কাজের সুযোগ পেতে কমপক্ষে সিজিপিএ ৩ আবশ্যিক। তবে ক্ষেত্রবিশেষে এর তারতম্য হতে পারে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সিজিপিএ ৩.৫০ আবশ্যিক। সিজিপিএ এর কম থাকলে কাউকে অন ক্যাম্পাস জবে আবেদনের সুযোগ দেয়া হয় না। সুতরাং অন ক্যাম্পাস জবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় যে ক্ষতি হবে এ রকমটা ভাবার অবকাশ নেই। বরং ভালো সিজিপিএ না থাকলে তারা আবেদনই করতে পারবে না। এছাড়া আবেদনকারীদের মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ও এক্সেলের দক্ষতা, সুন্দর ও সাবলীলভাবে কথা বলা এবং যোগাযোগ করার দক্ষতা আছে কিনা এসবও যাচাই করা হয়।

একজন শিক্ষার্থী সপ্তাহে সর্বোচ্চ ২০ ঘণ্টা এবং মাসে সর্বোচ্চ ৮০ ঘণ্টা কাজ করার সুযোগ পায়। বেশির ভাগ দপ্তরেই এবং বিশেষ করে লাইব্রেরিতে, প্রতি সেমিস্টারেই আবেদন করার সুযোগ থাকে। চাহিদা ও কর্মদিবসের ওপর ভিত্তি করে টাইম স্লট সাজানো হয়। শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দ অনুযায়ী টাইম স্লটের জন্য আবেদন করতে পারেন। এতে ক্লাস টাইমের সঙ্গে কর্তব্যরত সময়ের বাধা হওয়ার কোনো আশঙ্কা থাকে না। 

বেতন ঠিক করা হয় ঘণ্টা হিসাবে। মাস শেষে যা হাত খরচের জন্য যথেষ্ট। এতে যেমন শিক্ষার্থীদের বাস্তব কর্মজীবন সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জন হয়, ঠিক তেমনি তারা আর্থিকভাবে লাভবান হয়। এছাড়া বিশেষ করে যারা উচ্চশিক্ষায় বিদেশে বিভিন্ন দেশে যেতে চান, তাদের জন্য কাজে লাগবে এ অন ক্যাম্পাস জবের অভিজ্ঞতা। 

বর্তমানে শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে আইইউবি আরো কিছু আসন বাড়ানোর ওপর জোর দিচ্ছে। আইইউবিতে যারা অন ক্যাম্পাস জব করেন তাদের ‘‌এসওডি’ নামে অভিহিত করা হয়। যার অর্থ স্টুডেন্ট অন ডিমান্ড। 

অন ক্যাম্পাস জবের অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে আইইউবির লাইব্রেরিতে কর্মরত এসওডি ফেরদৌসী জুঁই জানান, পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের ভার্সিটিতেই যখন দেখলাম আয়ের সুযোগ আছে, তখন আবেদন করার ইচ্ছেটা ছাড়তে পারিনি। আবেদন করেছি এবং ইন্টারভিউর মাধ্যমে জবটা পাই। যখন মাস শেষে দেখি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকে সত্যি বলতে তখন আনন্দের যেন শেষ থাকে না। আইইউবিকে ধন্যবাদ শিক্ষার্থীদের জন্য এ রকম সুযোগ রাখার জন্য।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন