নগদ প্রণোদনা নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলার

প্রধানমন্ত্রীর কাছে সহায়তা বহাল রাখার আহ্বান বিজিএমইএ-বিকেএমইএর

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গতকাল বিজিএমইএর একটি প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করে ছবি: বিজিএমইএ

পোশাক খাতকে নগদ সহায়তা এবং অস্ট্রেলিয়া, জাপান ভারতকে নতুন বাজার সম্প্রসারণের আওতায় রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) গতকাল বিকেএমইএর সভাপতি একেএম সেলিম ওসমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। এদিন একই বিষয়ে সহযোগিতা চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)

চিঠিতে বিকেএমইএর নেতারা জানান, ২০২৬ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের অংশ হিসেবে বিভিন্ন শিল্পে ভর্তুকি বন্ধ করার কথা রয়েছে। এর অংশ হিসেবে গত বছরের ২৪ আগস্ট জারীকৃত এক সার্কুলারে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বিভিন্ন সুবিধা বহাল রাখার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। সে অনুযায়ী আগামী জুন পর্যন্ত বিভিন্ন পণ্যের রফতানি আদেশ নিয়ে সুতা কিনে রেখেছেন রফতানিকারকরা। তবে গত ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আরেকটি সার্কুলার জারি করে নগদ সহায়তা বন্ধ এবং রফতানির ক্রমবিকাশমান দেশ অস্ট্রেলিয়া, ভারত জাপানকে নতুন বাজার সুবিধা প্রাপ্তির তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। এর ফলে রফতানিকারকরা ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।

অস্ট্রেলিয়া, ভারত জাপানকে প্রচলিত বাজারে যুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে বিকেএমইএ বলছে, নতুন জারীকৃত প্রজ্ঞাপনটি পোশাক শিল্পকে হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। নগদ সহায়তার হার বছরের জুন পর্যন্ত বহাল রেখে পরবর্তী সময়ে ধারাবাহিকভাবে কমিয়ে ২০২৬ সালের শেষে বন্ধ করে দিলে কোনো আপত্তি থাকত না। কিন্তু হঠাৎ জানুয়ারি থেকেই এটি বন্ধ করে দেয়ায় রফতানিমুখী প্রতিষ্ঠানগুলো মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) এগ্রিমেন্ট অন সাবসিডিজ অ্যান্ড কাউন্টারভেইলিং মেজার্স (এএসসিএম) অনুসারে ৬১০৫, ৬১০৭, ৬১০৯, ৬১১০ ৬২০৩ পাঁচ এইচএস কোডভুক্ত পণ্য রফতানি প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা-বহির্ভূত থাকবে। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে টি-শার্ট, মেনজ টি-শার্ট, জার্সি, জ্যাকেট, ব্লেজার, ট্রাউজার, শর্টস প্রভৃতি।

বিকেএমইএর দাবি, দেশের মোট পোশাক রফতানিতে ৫৫ দশমিক ২২ শতাংশ অবদান রয়েছে নগদ সহায়তা থেকে বাদ পড়া পণ্যগুলোর। দেশের ৫০০টিরও বেশি স্পিনিং মিল এসব পোশাক তৈরিতে ৮৫ শতাংশের অধিক সুতা সরবরাহ করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নীতিমালার ফলে নিটওয়্যারের পাশাপাশি দেশীয় স্পিনিং মিলগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। খাতের হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে।

এদিকে অপ্রচলিত বাজারে পোশাক রফতানি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে দাবি করে শিল্পের প্রবৃদ্ধির গতি অব্যাহত রাখতে সরকারের নীতিসহায়তা অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানিয়েছে বিজেএমইএ। বিশ্ব বাণিজ্য এবং বাংলাদেশের পোশাক রফতানিতে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার প্রভাব উল্লেখ করে সংগঠনটির সভাপতি ফারুক হাসান প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, করোনাকালীন প্রণোদনা প্যাকেজগুলো মহামারীর প্রভাব থেকে পোশাক শিল্পকে ঘুরে দাঁড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎকারী প্রতিনিধি দলে ছিলেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি টিপু মুনশি এমপি, সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী এমপি, সাবেক সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, সাবেক সভাপতি এবং আওয়ামী লীগের শিল্প বাণিজ্য সম্পাদক মো. সিদ্দিকুর রহমান, বিজিএমইএর সিনিয়র সহসভাপতি এসএম মান্নান (কচি), সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, শহিদউল্লাহ আজিম, মো. নাসির উদ্দিন, মিরান আলী, রাকিবুল আলম চৌধুরী, পরিচালক ব্যারিস্টার শেহরিন সালাম ঐশী, ব্যারিস্টার ভিদিয়া অমৃত খান নীলা হোসনে আরা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন