জেইউ ফুড রাইডার্স

ক্যাম্পাসে ফুড ডেলিভারির সফল উদ্যোক্তা আরিফ

মেহেদী মামুন

ফুড ডেলিভারি করছেন জাবির ফুড রাইডার্স টিমের সদস্য বিশাল ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

ঠিক বছর খানেক আগের কথা। তখন তৃতীয় বর্ষে পড়েন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র আরিফ হোসেন। রেস্টুরেন্টের খাবারের প্রতি বিশেষ ঝোঁক থাকায় প্রায়ই সাভারের বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে খেতে যেতেন। ফেরার পথে অন্য বন্ধুদের জন্যও খাবার পার্সেল আনতে হতো। এমনকি রমজানে সাহরির জন্যও সাভারে চলে যেতেন। পড়াশোনার পাশাপাশি ফেসবুক পেজের মাধ্যমে ফুড ডেলিভারি করার উদ্যোগ নেন আরিফ। ‘জেইউ ফুড রাইডার্স’ নামে শুরু করা আরিফের সেই উদ্যোগ এখন সফলতার মুখ দেখেছে। সহপাঠীদের মতে, আরিফ স্বল্প সময়ে রীতিমতো বাজিমাত করে দেখিয়েছে। প্রথমদিকে একটু বেগ পেতে হলেও এখন অনেক ভোক্তার কাছে পৌঁছাতে পেরেছেন তিনি।

আরিফের এ উদ্যোগের ফলে শুধু তার আয়ের সুযোগ হয়নি, বরং এর সঙ্গে পড়াশোনার পাশাপাশি অস্থায়ী কর্মসংস্থান হয়েছে আরো ছয় থেকে সাতজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর। এতে কাজ করছেন নারী শিক্ষার্থীরাও।

টিমের একজন সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তহুরা তুলি বলেন, ‘বেশ কিছুদিন থেকে তাদের সঙ্গে কাজ করছি। এতে আর্থিক ব্যাপারটিকে আমি গৌণ মনে করে, অভিজ্ঞতা অর্জনের বিষয়টিকে বেশি উপভোগ করেছি।’ আরেকজন সদস্য ইয়াসিনুর আরাফাত বিশাল বলেন, ‘‌শুরু থেকেই এ উদ্যোগের সঙ্গে আছি। নানা অভিজ্ঞতার সঙ্গে আর্থিক ব্যাপারটি আমাকে দারুণভাবে সহায়তা করছে। আশা করছি, আমরা এটিকে একটি বড় উদ্যোগ হিসেবে গড়ে তুলতে পারব।’

‘জেইউ ফুড রাইডার্স’-এর ভোক্তাদের মধ্যে বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থী হলেও ভোক্তাদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। পাশাপাশি বাড়ছে শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের আগ্রহ। ভোক্তারাও সন্তুষ্ট সেবার মান নিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্রী মহিমা মোস্তফা বলেন, ‘‌দীর্ঘদিন থেকে আমি ফুড রাইডার্সের সেবা নিয়ে আসছি। তাদের সেবার মান অনেক ভালো। একদিকে দায়িত্বশীল আচরণ, অন্যদিকে নির্ধারিত সময়ের বাইরেও ভোক্তাদের জন্য ফুড ডেলিভারির বিষয়টি সত্যিই দারুণ। এমন কোনো দিন হয়েছে ঝুম বৃষ্টিতে আমি বাইরে বের হতে পারছি না কিন্তু খাবার এসে হাজির। আমি মনে করি তার কমিটমেন্ট তাকে অনেক দূর নিয়ে যাবে।’

আরেকজন সেবাগ্রহীতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ইসতিয়াক রায়হান শুভ বলেন, ‘‌যাত্রা শুরুর পরদিন তাদের পেজের বিষয়টি আমার চোখে পড়ে। পরে তাদের সেবা প্রদানে আন্তরিকতার বিষয়টিও অনেকের কাছে শুনেছি। আমার সহধর্মিণী আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ায় বিভিন্ন সময় তার ওখানে ফুড অর্ডার করেছি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে খাবার পেয়েছি। তার প্রয়াস ও পেশাদারত্ব এটি একদিন বড় উদ্যোগ হিসেবে গড়ে উঠবে।’ উদ্যোক্তা আরিফ বলেন, ‘‌প্রতিনিয়ত আমাদের সেবাগ্রহীতা বাড়ছে। বাড়ছে চ্যালেঞ্জও। চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সামনের দিনগুলোতে এগিয়ে যেতে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা চাই।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন