শেষ দিনের প্রচারণায় মুখর ছিল বরিশাল

এম মিরাজ হোসাইন, বরিশাল

বরিশাল সিটি নির্বাচনে গতকাল গণসংযোগ করেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ (বামে) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপন ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে গতকাল ছিল প্রচার-প্রচারণার শেষ দিন। ফলে শেষ মুহূর্তে মুখর ছিল নগরী। সকাল থেকেই গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করেন ৭ মেয়র প্রার্থীসহ ১৬৭ প্রার্থী। সব প্রার্থীর দাবি সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিজয়ী হবেন।

শেষ দিনের গণসংযোগে নৌকা প্রতীকের আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ (খোকন সেরনিয়াবাত) বলেছেন, ‘আমাকে জামায়াত ভোট দেবে কিনা জানি না, তবে বিএনপি ভোট দেবে। আমি আমার বিজয় নিয়ে শতভাগ নিশ্চিত। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের উন্নয়নে কাজ করতে চাই।’

গণসংযোগকালে তিনি ভোটারদের উদ্দেশে বলেন, ‘দীর্ঘদিন উন্নয়নবঞ্চিত বরিশালকে নতুনভাবে সাজানোর লক্ষ্যে নৌকা প্রতীককে ভোট দিয়ে বিজয়ী করতে হবে। এ নগরী একসময় উন্নয়নের উদাহরণ ছিল। প্রাচ্যের ভেনিস হিসেবেও পরিচিত ছিল। গত ১০ বছরে এখানে দায়িত্বরত জনপ্রতিনিধিরা উন্নয়ন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। অথচ সারা দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রয়েছে। তাই আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনা আমাকে বরিশালের উন্নয়ন করার দায়িত্ব দিয়ে মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছেন। আপনারা নৌকায় ভোট দিয়ে সেই কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন করার সুযোগ করে দেবেন।’ গণসংযোগকালে তার সঙ্গে ছিলেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদুল হক খান মামুনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। 

এদিকে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৩০ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপন। গতকাল দুপুরে বরিশাল প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে টেবিল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী এ ইশতেহার ঘোষণা দেন। তার ইশতেহারে রয়েছে বরিশালকে মানবিক ও সবুজ নগরীতে রূপান্তরের লক্ষ্যে সাধারণ নাগরিকদের অধিকার সুরক্ষা ও জনপ্রতিনিধিদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ত্রৈমাসিক মেয়রের জবাবদিহিতা, নগরবাসীর অধিকার কর্মসূচি চালু করা, বাড়তি পৌরকর আরোপ না করা, জলাবদ্ধতা নিরসন, খাল খনন, আউট সোর্সিং সহায়তা কেন্দ্র সেল প্রতিষ্ঠা, হকারদের পুনর্বাসন ও হলিডে মার্কেট মার্কেট চালু করা। 

লাঙ্গল প্রতীকের জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসেন তাপস বলেছেন, ‘বরিশাল নগরীর বাসিন্দারা বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত। ১০ বছরে এ নগরীর কোনো উন্নয়ন হয়নি। গত নির্বাচনও নৌকার প্রার্থী নিয়ে গিয়েছিল। এবারো নৌকার প্রাথীর পক্ষে কাজ করছেন প্রশাসন। আমি আশা করছি বরিশালের জনগণ এবার ভোটের মাধ্যমে এর জবাব দেবে। আপনারা গত পাঁচ বছরের কার্যক্রম বিবেচনা করে লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থীকে বেছে নেবেন।’ তিনি প্রচার-প্রচারণার শেষ দিনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন। 

ইকবাল হোসেন তাপস আরো বলেন, ‘আমাকে ভোট দিয়ে আপনাদের সমস্যাগুলো সমাধানের সুযোগ করে দিন। গত এক মাস ধরে মেয়র ছাড়া চলছে বরিশালের সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম। ভাতিজার দখলকৃত স্থান চাচার সমর্থকদের দখলে চলে গেছে। অথচ এখনো চাচা বরিশালের মেয়র হননি। তাহলে আগামী দিনগুলোর কথা চিন্তা করেন। আমি আশা করছি, এবার ভোটের মাধ্যমে জবাব দেবে বরিশালের জনগণ।’  

হাতপাখা প্রতীকের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, ‘এখন পর্যন্ত প্রশাসন ভালো আছে। আমরা আশাবাদী, এভাবে চললে আমরা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন পাব। আমি নির্বাচনে বিজয়ী হব।’

বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগকালে তিনি বলেন, ‘বর্ধিত বিশাল এলাকার ভোটাররা এখনো গুরুত্বপূর্ণ অনেক নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। করপোরেশন নির্ধারিত ট্যাক্স পরিশোধ করেও রাস্তাঘাট, বর্জ্য অব্যবস্থাপনা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার অভাবে পোহাতে হচ্ছে জলাবদ্ধতা ও মশার উপদ্রব। আমি বিজয়ী হলে বিশেষ প্ল্যান তৈরি করে এখানকার মানুষের চলাচলের জন্য প্রশস্ত রাস্তা, যথাযথ পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, মশক নিধনসহ নাগরিক নিশ্চিত করা হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন