সিএমএসএমই ও কৃষি খাতে ঋণ বিতরণ বাড়ানোই এখন আমাদের প্রধান লক্ষ্য

মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেডের এমডি সিইও পদে  মো. কামরুল ইসলাম চৌধুরী তিন বছরের বেশি সময় ধরে দায়িত্ব পালন করছেন। নতুন উদ্যোক্তা তৈরি, সিএমএসএমই কৃষি খাতে ঋণ বিতরণ, খাতের সমস্যা-সম্ভাবনা কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক গঠিত পুনঃঅর্থায়ন তহবিল নিয়ে তিনি কথা বলেছেন বণিক বার্তার সঙ্গে

মার্কেন্টাইল ব্যাংকের স্লোগান হলো বাংলার ব্যাংক আপনারা দেশের আনাচেকানাচে ছড়িয়ে যেতে চান। কিন্তু প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে লক্ষ্যের চেয়ে করপোরেট ব্যাংকিংই বেশি করেছেন।

আমরা করপোরেটমুখী ছিলাম ঠিকই কিন্তু এখন নীতি পরিবর্তন করছি। এসএমইর (ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্প) দিকে যাচ্ছি। এসএমইটা যেহেতু সারা পৃথিবীর সাড়া জাগানো একটা অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, সেহেতু আমরা খাতের দিকে ঝুঁকছি। বাংলাদেশে সিএমএসএমই খাতকে উজ্জীবিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অর্থ মন্ত্রণালয় বিভিন্ন নীতিসহায়তাও দিয়ে আসছে। ফলে সিএমএসএমই খাতে ঋণ বিতরণ বিগত বছরগুলোতে বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। ২০১৭ সালে দেশে এসএমই ঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল লাখ ৯৫ হাজার ৮৯৮ কোটি টাকা। ২০২১ সালে তা বেড়ে লাখ ৫২ হাজার ৮২ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে।

আমাদের জিডিপিতে সিএমএসএমই খাতের অবদান ২৫ শতাংশ, প্রায় ৭৮ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টির অবদান আছে খাতের। সরকার খাতটিকে অগ্রাধিকার দেয়ায় বিগত বছরগুলোতে অর্থায়নের পরিমাণও বেড়েছে। তবে সেবা উৎপাদন খাতে প্রবৃদ্ধি আশানুরূপ হয়নি। কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য দুই খাতে অর্থায়ন বাড়ানো জরুরি।

আপনাদের মোট ঋণের মধ্যে এসএমই খাতের পোর্টফোলিওর হার কেমন?

আমাদের ঋণ পোর্টফোলিওর ২৫ শতাংশ এখন সিএমএসএমই। বাকি ৭৫ শতাংশ করপোরেট কৃষিসহ অন্যান্য খাতের। কৃষিতে আমরা সাধ্যমতো অবদান রাখছি। প্রধানমন্ত্রী চাচ্ছেন, অচল হয়ে থাকা গ্রামভিত্তিক অর্থনীতিকে সচল করতে। সে মূলনীতি সামনে রেখে আমরাও গ্রামভিত্তিক অর্থনীতি সচলে কাজ করছি। গ্রামের মানুষদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেয়ার চেষ্টা করছি।

প্রতিটি ব্যাংকের নিজস্ব সিএমএসএমই ঋণ নীতিমালা রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২২ সালের মধ্যে ব্যাংকগুলোকে তাদের মোট ঋণের ২৩ শতাংশ খাতে বিতরণের নির্দেশনা দিয়েছে। এছাড়া নারী উদ্যোক্তা, পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগ, নতুন উদ্যোক্তাদের ঋণ দেয়া এবং সেবা শিল্প খাতে ঋণ বিতরণের আলাদা লক্ষ্যমাত্রা থাকে। আমাদের ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ সিএমএসএমই খাতে অর্থায়নের বিষয়ে অত্যন্ত দায়িত্বশীল এবং প্রতিটি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা এবং নীতিসহায়তা দিয়ে আসছে।

সিএমএসএমই খাতে ঋণ বিতরণ আরো বাড়াতে কী ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছেন?

মার্কেন্টাইল ব্যাংকের এসএমই বিভাগ প্রতিটি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। নারী উদ্যোক্তাদের অর্থায়নের জন্য আলাদা ডেস্ক রয়েছে। এছাড়া অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অন্যান্য খাতে বিনিয়োগের জন্য আলাদা কর্মকর্তা নিয়োজিত আছেন। এক্ষেত্রে নারায়ণগঞ্জের আজিজ রিসাইক্লিং ইওয়েস্ট কোম্পানির কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। পরিবেশের বর্জ্য রিসাইক্লিং করে তারা ব্যবহার উপযোগী পণ্য তৈরি করছে। এমন পরিবেশবান্ধব খাতেও আমাদের অর্থায়ন রয়েছে। শাখাগুলোকে আলাদা আলাদা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়ার পাশাপাশি গ্রাহকদের সিএমএসএমই ঋণ সম্পর্কে অবহিতকরণের জন্য লিফলেট বিতরণ, ব্যানার প্রদর্শন এবং বিভিন্ন মেলায় অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। গ্রাহকদের স্বল্প সুদে ঋণ বিতরণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক এসএমই ফাউন্ডেশনের সঙ্গে আমাদের আটটি বিভিন্ন ধরনের অংশগ্রহণমূলক চুক্তি রয়েছে। এর মধ্যে সর্বনিম্ন শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ করা হচ্ছে। ২০২১ সালেও আমরা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৮৬ শতাংশ অর্জন করেছি।

বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতি বছর একটি কৃষি ঋণ নীতিমালা প্রণয়ন করে। কিছু লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়। সে নীতিমালা অনুসরণের ক্ষেত্রে আপনাদের সাফল্য কতটুকু?

কৃষিপ্রধান দেশ হিসেবে আমাদের এখানে কৃষির উপকরণের জন্য আলাদা একটা প্রকল্প আছে, নিজস্ব লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। কৃষকরা যাতে উৎপাদন বাড়াতে পারে, পর্যাপ্ত পরিমাণ লভ্যাংশ তাদের কাছে থাকে তার জন্য আমরা কৃষকদের বিভিন্নভাবে সাহায্য সহযোগিতা করছি। একসময় যখন আমরা সাড়ে সাত কোটি মানুষ ছিলাম তখন খাদ্যের অভাব ছিল। এখন ১৮ কোটি মানুষের খাবারের অভাব নেই। তার মানে কী দাঁড়াল, আমাদের কৃষক ভাইয়েরা যেমন দৃষ্টি দিয়েছে উন্নয়নশীল কৃষির প্রতি, সরকারও এদিকে অবদান রেখেছে, যাতে কৃষির উন্নয়ন হয়, ফসলের উৎপাদন বাড়ে আপনারা দেখবেন গত বছর বাম্পার ফলন হয়েছে দেশে, সরকারের সংগ্রহ অভিযান সফল হয়েছে। বছরও আশা করি সফল হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে কৃষিতে ঋণ বিতরণের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিচ্ছে, আমরা তার শতভাগই অর্জন করছি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক কৃষকদের কাছে সরাসরি ঋণ পৌঁছানোতে জোর দিচ্ছে। যদিও দেশের ব্যাংকগুলো কৃষি ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে এখনো অনেকটাই এনজিওনির্ভর। এক্ষেত্রে আপনাদের অবস্থান কেমন?

আমাদের বিতরণকৃত কৃষি ঋণের ৭৫ শতাংশ এনজিওর মাধ্যমে যায় এবং ২৫ শতাংশ ঋণ সরাসরি আমরাই দিয়ে থাকি। অনেক সময় দেখা যায়, এনজিওগুলো এক ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে অন্য ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করে। আমরা বিষয়টিকে মনিটরিংয়ের আওতায় রেখেছি। সার্ভ করে দেখেছি, তারা আমাদের কাছ থেকে নেয়া ঋণ কৃষকদেরই দিচ্ছে।

এনজিওর মাধ্যমে কৃষকদের ঋণ বিতরণে সুদের হার বেড়ে যায়। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, - শতাংশ সুদে যাতে কৃষকরা ঋণ পান। সেক্ষেত্রে এনজিওনির্ভরতা কমিয়ে আনার জন্য আপনারা কী উদ্যোগ নিচ্ছেন?

এনজিওনির্ভরতা কমিয়ে আনতে আমাদের উদ্যোগ আছে। আগামী বছর এমনভাবে লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করব, যাতে নিজেরাই সরাসরি কৃষকদের কাছে ঋণ পৌঁছে দিতে পারি। এনজিওর মাধ্যমে ঋণ দেয়ার পরিমাণ এবং হার ধীরে ধীরে কমিয়ে আনব।

কৃষকরা যাতে উৎপাদনের সঙ্গে আরো বেশি পরিমাণে যুক্ত হয়, সেজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক রিফাইন্যান্স স্কিম করেছে। শতাংশ সুদে কৃষকরা যাতে ঋণ পান, সে ব্যাপারেও উদ্যোগী হয়েছে। রিফাইন্যান্স স্কিমে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের অবদান কী?

বাংলাদেশ ব্যাংক কৃষির জন্য যেসব রিফাইন্যান্স স্কিম করেছে সেগুলোর সুফল খুবই ভালো। করোনাকালে কৃষকরা রিফাইন্যান্স স্কিমগুলো থেকে বেশ ভালোভাবে উপকৃত হয়েছেন। মার্কেন্টাইল ব্যাংক বিশেষ এসব তহবিলের ঋণ পৌঁছাতে এর আগেও বেশ সাফল্য দেখিয়েছে। ভবিষ্যতেও সাফল্যের ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখা হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক প্রি-ফাইন্যান্স স্কিম রিফাইন্যান্স স্কিম করেছে। প্রি-ফাইন্যান্স স্কিমে ২৫ হাজার কোটি টাকার একটা পোর্টফোলিও আছে। সেখান থেকে আপনারা কী পরিমাণ ঋণ পেয়েছেন?

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ স্কিম থেকে পর্যন্ত আমরা ৯২ কোটি টাকা পেয়েছি। তার মধ্যে ৭৫ শতাংশ ঋণ বিতরণে সক্ষম হয়েছি। এর আগে এসএমই উদ্যোক্তাদের কাছে চলতি মূলধন সরবরাহের জন্য যে প্রণোদনা প্যাকেজ করা হয়েছিল, সেটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। যার কারণে করোনা মহামারী সত্ত্বেও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে। নতুন স্কিমের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে কর্মসংস্থান সৃষ্টি। ২৫ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের মাধ্যমে স্থায়ী বিনিয়োগকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। ব্যবসা সম্প্রসারণ স্থায়ী সম্পদে বিনিয়োগ বাড়লে নিশ্চিতভাবে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

নারী উদ্যোক্তা তৈরির জন্য আপনারা বিশেষ কর্মসূচি পরিচালনা করছেন বলে শুনেছি। সে কর্মসূচির সাফল্য কেমন?

মার্কেন্টাইল ব্যাংক শুরু থেকেই নারী উদ্যোক্তা তৈরিতে বিশেষ জোর দিয়ে আসছে। আমরা নানাভাবে চেষ্টা করছি নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে। বিশেষ করে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে উঠতে নারীদের উত্সাহিত করছি। আমাদের মোট পোর্টফোলিওর শতাংশ ঋণ নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বরাদ্দ। সামনে আরো বাড়ানোর চেষ্টা করব।

সম্প্রতি নারী উদ্যোক্তা তৈরির জন্য আমরা খুলনায় একটি বিশেষ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছি। সেখানে তাদের সরাসরি ঋণ দিয়েছি। বিশেষ কর্মসূচির কারণে সেখানকার নারীদের মধ্যে একটা জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা আবার জুন মাসে আরেকটি প্রোগ্রাম করব, যাতে তারা নিজেরা ঋণ নিতে পারে এবং স্বাবলম্বী হতে পারে। প্রচুর নারী উদ্যোক্তা নতুন করে এগিয়ে আসছে। আমরা তাদের উত্সাহিত করার চেষ্টা করছি।

মার্কেন্টাইল ব্যাংক একটি স্টার্টআপ প্রোগ্রাম করেছে, যাতে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করা যায়। সেক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত আপনাদের অগ্রগতি এবং উন্নতি কেমন?

বাংলাদেশ ব্যাংক স্টার্টআপদের বিষয়ে একটি সার্কুলার দিয়েছে। তারও আগে আমরা উদয়ন নামে একটা প্রকল্প হাতে নিয়েছি। যদিও এটি আশানুরূপ হয়নি, তার পরও চেষ্টা করছি যাতে এটা আশানুরূপ হয়। আমরা আগে থেকেই সিকিউরিটি ছাড়া লোন দেয়ার চেষ্টা করেছি। মার্কেন্টাইল ব্যাংকের শুরুতেই একটা প্রকল্প ছিল, যাতে নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি এবং গ্রাহকরা সহজে লোন নিতে পারেন। আমরা কোনো ধরনের সিকিউরিটি ছাড়া লোন দিতাম। এক্ষেত্রে শুধু গ্যারান্টারের প্রয়োজন হতো। অর্থাৎ পাশের দোকানদার মার্কেটের সভাপতি গ্যারান্টি দেবে। আমরা ঋণ সফলভাবে দিয়েছি এবং এর আদায়ও বেশ ভালো।

উদ্যোক্তা তৈরির জন্য আপনাদের কি আর কোনো কর্মসূচি চলমান রয়েছে?

বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি। যদিও আমাদের দেশে ব্যাংকারদের মাধ্যমে উদ্যোক্তা তৈরির কার্যক্রম আগে তেমন দেখা যায়নি। তবে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু পদক্ষেপ প্রশংসার দাবি রাখে। আমরা এরই মধ্যে খুলনায় ২৫ জন নতুন উদ্যোক্তাকে এক মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ শেষে অর্থায়ন করেছি। যেসব গ্রাহক পণ্য উৎপাদন করে তাদের তথ্য যেমন ব্যাংকের কাছে থাকে, তেমনি যারা এসব উৎপাদিত পণ্য পাইকারি খুচরা বিক্রির সঙ্গে জড়িত তাদের তথ্যও রয়েছে। যদি এসব গ্রাহকের একটি তথ্যভাণ্ডার তৈরি করা যায় তবে সহজেই একে অন্যের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের পণ্য বাজারজাতের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা সম্ভব। আমরা আগামী বছরের শুরুতে নতুন উদ্যোক্তা তৈরির জন্য আরো একটা প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করব।

ক্লাস্টারভিত্তিক ক্ষুদ্র বিনিয়োগে আপনাদের উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাই?

ক্লাস্টারভিত্তিক উৎপাদন সেবা কার্যক্রমের পাশাপাশি ব্যক্তিপর্যায়ে উৎপাদনশীল সেবা খাতের ব্যবসা আমাদের দেশের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের মাঝে বেশি। ক্লাস্টারের গ্রুপ গ্যারান্টির মাধ্যমে সহজে ঋণ দেয়া হয়। এটা একটা প্রচলিত ধারণা। তবে ঝামেলা হচ্ছে, সমবায় আইনি কাঠামোর মধ্যে হতে হয়, এতে কিছু আইনি ঝামেলা থাকায় উদ্যোক্তারা আগ্রহী হয় না। আবার সব ব্যবসার ক্ষেত্রে সমবায় ধারণাটাও আসলে কার্যকর নয়। তবে পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে একই ধরনের ব্যবসা না হলেও ছোট ছোট ব্যবসায়িক গ্রুপ তৈরি করা যেতে পারে। এসব ব্যবসায়িক গ্রুপ সদস্যদের অর্থায়ন করা যেতে পারে। যেমনটি আমাদের দেশের এনজিওগুলো করে। ব্যক্তিপর্যায়ের চেয়ে এতে মানিটরিংও অপেক্ষাকৃত সহজ হয়। আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করার কথা ভাবছি।

দুই বছর ধরে বৈশ্বিক কভিড পরিস্থিতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে দেশের অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্যে একধরনের অস্থিরতা চলছে। সেক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব কাটিয়ে ওঠার ক্ষেত্রে মার্কেন্টাইল ব্যাংক কী ধরনের ভূমিকা রাখছে?

আমরা ভোগ্যপণ্য যেমন গম, তেল, বিভিন্ন ধরনের শস্যকেন্দ্রিক গ্রাহকদের অর্থের জোগান দিচ্ছি। সংকটে প্রচুর পরিমাণ গম, তেল আমদানি করেছি। আমরা চেয়েছি এসব নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য যাতে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে। স্টিলের ক্ষেত্রেও যাতে লোহার দাম না বাড়ে, সেজন্য স্ক্র্যাব জাহাজে অর্থায়ন করেছি।

মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী, আগামী বছরগুলোতে আপনাদের মূল লক্ষ্য কী থাকবে?

গ্রাহকদের আস্থার ওপর ভরসা করে আমরা ২৪ বছর অতিক্রম করেছি। এটা সফলভাবেই করেছি। মার্কেন্টাইল ব্যাংক গ্রাহকদের মধ্যে অন্য রকম বিশ্বস্ততা তৈরি করতে পেরেছে। গত দুই বছর আগে আমরা ইসলামিক ব্যাংকিং উইন্ডো চালু করেছি। সেখানেও ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। গ্রাহকরা সেটা ভালোভাবে গ্রহণ করেছে। আমাদের একটা ইসলামিক ব্যাংকিং ব্রাঞ্চ আছে। বাকি ১৫১ শাখায় ইসলামিক উইন্ডোর মাধ্যমে গ্রাহক টাকা জমা দিতে পারছে, উত্তোলন করতে পারছে। এটা সফলভাবেই বাস্তবায়িত হচ্ছে। আমাদের একটা প্রকল্প আছে রেইনবো এর মাধ্যমে গ্রাহক ঘরে বসেই ব্যাংক হিসাব খুলতে পারছে, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে পারছে। এটাও ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে।

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনাকে এবং বণিক বার্তাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন