দীর্ঘদিন ধরেই দেশের মিউচুয়াল ফান্ড খাত বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে পারছে না। সুশাসন ও স্বচ্ছতার ঘাটতি থাকায় খাতটির প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমেছে। সম্প্রতি এক সম্পদ ব্যবস্থাপক অর্থ আত্মসাৎ করে দুবাইয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় আবারো সামনে এসেছে এ খাতের দুর্দশার চিত্র। এছাড়া অতালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ নিয়েও রয়েছে পুরনো বিতর্ক। এ অবস্থায় মিউচুয়াল ফান্ড খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে শীর্ষ তিন সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানির কার্যক্রম পরিদর্শনের মাধ্যমে সম্পদ যাচাইয়ের উদ্যোগ নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ৪ হাজার ৬০৭ কোটি টাকার সম্পদ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে এ তিন সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি।
সম্প্রতি সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি ইউনিভার্সাল ফাইন্যান্সিয়াল সলিউশন (ইউএফএস) ইকুইটি পার্টনার্সের বিরুদ্ধে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি মিউচুয়াল ফান্ডের ১৫৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। ব্যাংকের জাল প্রতিবেদন ও ভুয়া এফডিআর দেখিয়ে এ অর্থ আত্মসাৎ করে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ হামজা আলমগীর সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে পালিয়ে গেছেন। কমিশনের পক্ষ থেকে বিষয়টি বিষদ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। বিএসইসির কর্মকর্তারা বলছেন, এ ঘটনায় মিউচুয়াল ফান্ড খাতের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা আরো কমে গেছে। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা ও পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতার জন্য মিউচুয়াল ফান্ডে সম্পদ কোথায় বিনিয়োগ করা হয়েছে এবং বর্তমানে কী অবস্থায় রয়েছে তা পরীক্ষা করে দেখা প্রয়োজন। এ কারণে কমিশনের পক্ষ থেকে পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
আইন ও বিধি অনুসারে মিউচুয়াল ফান্ডের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে কিনা তা যাচাই করে দেখার জন্য পরিদর্শনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কমিশনের এ উদ্যোগের মাধ্যমে মিউচুয়াল ফান্ড খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে। পাশাপাশি খাতটির প্রতি বিনিয়োগকারীদেরও আস্থা ফিরে আসবে
শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম
চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)
সর্বশেষ গত রোববারের তথ্যানুসারে, দেশের মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ড খাতের ব্যবস্থাপনাধীন মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৭৪২ কোটি টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২ হাজার ৮৮৮ কোটি টাকার সম্পদ ব্যবস্থাপনা করছে বাংলাদেশ রেস ম্যানেজমেন্ট পিসিএল। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯২৮ কোটি টাকার সম্পদ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট। রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগপ্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) সাবসিডিয়ারি কোম্পানি আইসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের আওতাধীন সম্পদ রয়েছে ৭৯১ কোটি টাকার। মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ড খাতের মোট সম্পদের ৮০ শতাংশ বা ৪ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা রয়েছে এ শীর্ষ তিন সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানির কাছে।
গত সপ্তাহে বিএসইসির পক্ষ থেকে শীর্ষ তিন সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি বাংলাদেশ রেস ম্যানেজমেন্ট পিসিএল, এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট ও আইসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের কার্যক্রম পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে বিএসইসির তিনজন অতিরিক্ত পরিচালককে প্রধান করে তিনটি আলাদা কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ রেস ম্যানেজমেন্ট পিসিএল ও এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের কার্যক্রম পরিদর্শনে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। আইসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের কার্যক্রম পরিদর্শনের জন্য গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের কমিটি। ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে পরিদর্শন প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংক ও ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানে (এনবিএফআই) মিউচুয়াল ফান্ডের গচ্ছিত মেয়াদি আমানত (এফডিআর) এবং বিভিন্ন সিকিউরিটিজে ফান্ডের অর্থ বিনিয়োগের বিষয়টি যাচাই করে দেখবে পরিদর্শন কমিটি। এক্ষেত্রে আর্থিক প্রতিবেদন ও পোর্টফোলিও বিবরণীতে যে পরিমাণ সম্পদ বিনিয়োগ করার তথ্য দেখানো হচ্ছে, সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি প্রকৃতই সেটি বিনিয়োগ করেছে কিনা তা যাচাই করে দেখা হবে। এসব বিনিয়োগের বিপরীতে সুদ, লভ্যাংশ ও রিটার্ন যথাযথভাবে আসছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হবে। মিউচুয়াল ফান্ডের সম্পদমূল্য অতিমূল্যায়িত কিংবা অবমূল্যায়িত হয়েছে কিনা সেটি যাচাই করে দেখা হবে। পাশাপাশি মিউচুয়াল ফান্ড বিধিমালা ২০০১ অনুসারে সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানির প্রধান নির্বাহী, ফান্ডের ট্রাস্টি ও কাস্টডিয়ান তাদের ওপর অর্পিত আইনগত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছে কিনা এ বিষয়টিও যাচাই করে দেখবে বিএসইসির পরিদর্শন কমিটি।
মিউচুয়াল ফান্ড বিধিমালা ২০০১-এর ৭৫ বিধিতে দেয়া ক্ষমতাবলে বিএসইসি এ পরিদর্শন কমিটি গঠন করেছে। বিধিতে বলা হয়েছে, হিসাব বই ও অন্যান্য বই যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করা, আইন ও বিধিমালার বিধানগুলো যথাযথভাবে অনুসরণ নিশ্চিত করা, অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে মিউচুয়াল ফান্ড, ট্রাস্টি বা সম্পদ ব্যবস্থাপকের ভূমিকা পর্যালোচনা করা, মিউচুয়াল ফান্ড, ট্রাস্টি, সম্পদ ব্যবস্থাপক ও হেফাজতকারীর কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পর্কিত যেকোনো বিষয়ে বিনিয়োগকারী, অন্য মিউচুয়াল ফান্ড বা অন্য কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে পাওয়া অভিযোগ তদন্ত করা, সিকিউরিটি ব্যবসায় বা বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে মিউচুয়াল ফান্ড, ট্রাস্টি, সম্পদ ব্যবস্থাপক বা হেফাজতকারীর কর্মকাণ্ড তদন্ত করা এবং অন্য কোনো বিষয়ে কমিশন জনস্বার্থে প্রয়োজন বিবেচনা করলে পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পরিদর্শন কর্মকর্তা হিসেবে এক বা একাধিক ব্যক্তিকে নিয়োগ করা যাবে।
বিধিমালায় পরিদর্শন কর্মকর্তাদের মিউচুয়াল ফান্ডের ট্রাস্টি, সম্পদ ব্যবস্থাপক ও হেফাজতকারীর হিসাব বই, রেকর্ড ও দলিলপত্র পরীক্ষা করে দেখার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে পরিদর্শন কর্মকর্তার কাজে সর্বাত্মক সহযোগিতার আইনগত বাধ্যবাধকতা রয়েছে। পরিদর্শন কর্মকর্তার দাখিল করা পরিদর্শন প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজন হলে কোনো মিউচুয়াল ফান্ড, ট্রাস্টি, সম্পদ ব্যবস্থাপক বা হেফাজতকারীর হিসাব বই কিংবা অন্যান্য বিষয় তদন্ত করার জন্য কমিশন এক বা একাধিক নিরীক্ষক নিয়োগ করতে পারবে।
এ বিষয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আইন ও বিধি অনুসারে মিউচুয়াল ফান্ডের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে কিনা তা যাচাই করে দেখার জন্য পরিদর্শনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কমিশনের এ উদ্যোগের মাধ্যমে মিউচুয়াল ফান্ড খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে। পাশাপাশি খাতটির প্রতি বিনিয়োগকারীদেরও আস্থা ফিরে আসবে।’
বর্তমানে বাংলাদেশ রেস ম্যানেজমেন্ট পিসিএলের ব্যবস্থাপনাধীন ফান্ডের সংখ্যা ১২। এর মধ্যে ১০টি মেয়াদি ও দুটি বেমেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ড। সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানিটির ব্যবস্থানাধীন ১০টি মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডের দর বর্তমানে অভিহিত মূল্যের নিচে। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির সাতটি মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডের সর্বশেষ প্রকাশিত বাজারমূল্যে নিট সম্পদমূল্য (এনএভি) ১০ টাকার নিচে। পুঁজিবাজারে সবচেয়ে বেশি ডিসকাউন্ট মূল্যে লেনদেন হওয়া শীর্ষ পাঁচ মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডই এ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনাধীন। এর মধ্যে আইএফআইসি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের প্রতি ইউনিটের দর গতকাল ছিল ৫ টাকা ১০ পয়সা। ফান্ডটির বাজারমূল্যে এনএভি ৯ টাকা ৭৩ পয়সা। পপুলার লাইফ ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের সর্বশেষ দর ছিল ৫ টাকা ১০ পয়সা ও বাজারমূল্যে এনএভি ৯ টাকা ৭৫ পয়সা। এবি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের দর ছিল ৫ টাকা ২০ পয়সা ও এনএভি ৯ টাকা ৯৮ পয়সা। পিএইচপি ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের দর গতকাল ছিল ৫ টাকা ২০ পয়সা ও এনএভি ৯ টাকা ৭১ পয়সা। এক্সিম ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের দর ছিল ৫ টাকা ৮০ পয়সা ও এনএভি ৯ টাকা ৯৩ পয়সা। ফার্স্ট জনতা ব্যাংক মিউচুয়াল ফান্ডের দর দাঁড়িয়েছে ৬ টাকা ১০ পয়সা ও এনএভি ৯ টাকা ৬১ পয়সা। ইবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের দর গতকাল ছিল ৭ টাকা ৪০ পয়সা ও এনএভি ৯ টাকা ৬১ পয়সা। রেসের বাকি তিনটি মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডের বাজারমূল্যে এনএভি ১০ টাকার ওপরে ছিল।
রেসের মিউচুয়াল ফান্ডগুলো থেকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজের পাশাপাশি অতালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজ এবং মুদ্রাবাজারে বিনিয়োগ করা হয়েছে। এর মধ্যে কিছু অতালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের বিপরীতে রিটার্ন না আসার কারণে এর যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বিনিয়োগকারীদের। ২০২২ সালে রেসের ফান্ডগুলোর পোর্টফোলিও রিটার্ন ছিল ঋণাত্মক ১১ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।
বাংলাদেশ রেস ম্যানেজমেন্ট পিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিজ অ্যান্ড মিউচুয়াল ফান্ডসের (এএএমসিএমএফ) প্রেসিডেন্ট ড. হাসান ইমাম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আমাদের জানামতে অ্যাসোসিয়েশনের অন্তর্ভুক্ত মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর সিংহভাগ নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে দু-একটি সম্পদ ব্যবস্থাপকসংক্রান্ত যেসব খবর পাচ্ছি তার পরিপ্রেক্ষিতে নীতিনির্ধারকের এ ধরনের উদ্বেগ স্বাভাবিক। তবে শুধু কমপ্লায়েন্সই নয়, বরং বর্তমান বাজারের পরিপ্রেক্ষিতে মিউচুয়াল ফান্ড ইন্ডাস্ট্রি ও সম্পদ ব্যবস্থাপকরা যেসব প্রতিকূল অবস্থার সম্মুখীন হচ্ছে, তা গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে বিএসইসি সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে আশা করি।’
এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির ব্যবস্থাপনাধীন মিউচুয়াল ফান্ডের সংখ্যা ছয়। এর সবই মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ড। প্রতিষ্ঠানটির সব ফান্ডের দরই বর্তমানে অভিহিত মূল্যের নিচে লেনদেন হচ্ছে। তবে এ ফান্ডগুলোর সর্বশেষ প্রকাশিত বাজারমূল্যে এনএভি ছিল ১০ টাকার ওপরে। এর মধ্যে এআইবিএল ফার্স্ট ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ডের দর গতকাল ছিল ৭ টাকা ৬০ পয়সা ও এনএভি ১০ টাকা ১৪ পয়সা। ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের দর ছিল ৬ টাকা ৯০ পয়সা ও এনএভি ১০ টাকা ২৭ পয়সা। গ্রীন ডেল্টা মিউচুয়াল ফান্ডের দর ছিল ৬ টাকা ৯০ পয়সা ও এনএভি ১০ টাকা ৮ পয়সা। এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ মিউচুয়াল ফান্ড ওয়ানের দর ছিল ৬ টাকা ৪০ পয়সা ও এনএভি ১০ টাকা ৪০ পয়সা। এমবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের দর দাঁড়িয়েছে ৬ টাকা ৬০ পয়সায় ও এনএভি ১০ টাকা ৫২ পয়সা। এনসিসিবিএল মিউচুয়াল ফান্ড ওয়ানের দর ছিল ৭ টাকা ২০ পয়সা ও এনএভি ১১ টাকা ৪০ পয়সা। ২০২২ সালে এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনাধীন মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর পোর্টফোলিও রিটার্ন ১২ দশমিক ১৩ শতাংশ ঋণাত্মক ছিল।
তালিকাবহির্ভূত সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বরাবরই বিতর্কিত হয়েছে এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট। ২০১৫ সালে তালিকাবহির্ভূত সিকিউরিটিজে আইনবহির্ভূত বিনিয়োগের কারণে এলআর গ্লোবালকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করেছিল বিএসইসি। সে সময় সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানটিকে অতালিকাভুক্ত কোম্পানিতে করা বিনিয়োগ প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছিল কমিশন। যদিও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সে নির্দেশনা পরিপালন করেনি প্রতিষ্ঠানটি। সর্বশেষ ২০১৯ সালে একটি অনলাইন গণমাধ্যমে বিনিয়োগ করে প্রশ্নের মুখে পড়ে এলআর গ্লোবাল। অতি উচ্চমূল্যে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার কেনার মাধ্যমে ইউনিটহোল্ডারদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করার অভিযোগ ওঠে এলআর গ্লোবালের বিরুদ্ধে। এ বিনিয়োগ প্রত্যাহারের নির্দেশনা দেয়ার পাশাপাশি ফান্ডের বিনিয়োগকারীদের অর্থ প্রতিষ্ঠানটির কাছে থাকা নিরাপদ নয় উল্লেখ করে সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের সুপারিশ করা হয়েছিল বিএসইসির তদন্ত প্রতিবেদনে।
আইসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থাপনাধীন ফান্ডের সংখ্যা বর্তমানে ২৪। এর মধ্যে ১০টি মেয়াদি ও ১৪টি বেমেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ড। প্রতিষ্ঠানটির মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর মধ্যে একটি বাদে বাকি নয়টির দর বর্তমানে অভিহিত মূল্যের নিচে। আইসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের ছয়টি মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডের এনএভি বর্তমানে ১০ টাকার নিচে। ২০২২ সালে আইসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থাপনাধীন মেয়াদি ফান্ডগুলোর পোর্টফোলিও রিটার্ন ছিল ঋণাত্মক ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ।