জাতিসংঘের প্রতিবেদন

স্মার্টফোন বাড়লেও ইন্টারনেটের ব্যবহার আশানুরূপ নয়

বণিক বার্তা ডেস্ক

বর্তমানে প্রায় ৫৩০ কোটি বা বিশ্বের ৬৬ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে ছবি: কিয়োদো

তথ্য যোগাযোগপ্রযুক্তির যুগে বিশ্বজুড়ে স্মার্টফোন ব্যবহার বাড়ছে। কিশোর থেকে প্রাপ্তবয়স্ক সবার হাতেই এখন স্মার্টফোন রয়েছে। বয়স বিবেচনায় স্মার্টফোন ব্যবহার নিয়ে আলোচনা সমালোচনা দুটিই রয়েছে। জাতিসংঘের তথ্যানুযায়ী, ১০ বছরের বেশি বয়সী মোট জনসংখ্যার তিন-চতুর্থাংশের কাছে বর্তমানে স্মার্টফোন রয়েছে। এর বিপরীতে ইন্টারনেট ব্যবহারের হার এখনো কম। খবর ফ্রিমালয়েশিয়াটুডে।

গত ৩০ নভেম্বর এক বিবৃতিতে জাতিসংঘ কথা জানায়। বিশ্লেষকদের মতে, বিস্তৃত পরিসরে ইন্টারনেট ব্যবহার নিশ্চিতে এটি অন্যতম একটি। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ) প্রথমবারের মতো অঞ্চলভিত্তিক বৈশ্বিক অনুমান প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানের তথ্যানুযায়ী, ২০২২ সালে ১০ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে প্রায় ৭৩ শতাংশের নিজস্ব স্মার্টফোন রয়েছে।

বার্ষিক প্রতিবেদনে আইটিইউ জানায়, সহজে ইন্টারনেট ব্যবহারের দিক থেকে মোবাইল বা সেলফোন সবচেয়ে সহজ সুবিধাজনক মাধ্যম। এর সঙ্গে ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা ব্যবহারের মাত্রা নির্ধারণ করে। কিন্তু প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়, বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারের তুলনায় স্মার্টফোনের মালিকানার হার বেশি। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের দেশে। কেননা এসব দেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যয় অনেক বেশি।

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন দেখতে পায় যে কয়েক বছরে সেলফোনের মালিকানা ধীরে ধীরে বেড়েছে। ২০১৯ সালের ৬৭ শতাংশ থেকে এটি ক্রমাগত বাড়ছে। এক সাক্ষাত্কারে আইটিইউর সিনিয়র অর্থনীতিবিদ থিয়েরি গেইগার জানান, ২০২০ সালে যখন কভিড-১৯ মহামারীর প্রথম ঢেউ আসে তখন অনলাইন ব্যবহারকারী উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।

বিবৃতিতে কমিশন জানায়, আশ্চর্যজনকভাবে ধনী দেশগুলোতে সেলফোন মালিকানার হার বেশি। এসব দেশের ৯৫ শতাংশ মানুষের কাছে অন্তত একটি স্মার্টফোন রয়েছে। অন্যদিকে স্বল্প আয়ের দেশগুলোতে এর হার ৪৯ শতাংশ। জাতিসংঘের টেলিকম এজেন্সি জানায়, পুরো বিশ্বের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ মানুষ এখনো ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত হয়নি। কিন্তু তারপরে অনলাইনে ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। বর্তমানে প্রায় ৫৩০ কোটি বা বিশ্বের ৬৬ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে।

এক বিবৃতিতে আইটিইউর টেলিযোগাযোগ উন্নয়ন বিভাগের প্রধান ডরিন বোগদান মার্টিন বলেন, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু এর গতি খুবই মন্থর এবং বৈশ্বিক চাহিদা বা প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এখনো অনেক মানুষ অন্ধকারে বসবাস করছে। মোবাইল ব্রডব্যান্ড পরিষেবা ব্যয় থেকে ইন্টারনেট ব্যবহারের হার নির্ধারণ করা হয়। এটি ব্যবহারকারীদের মোবাইলের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা দেয় এবং এটি ফিক্সড ইন্টারনেট সেবার তুলনায় সাশ্রয়ী। বুধবার প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, মোবাইল ব্রডব্যান্ড পরিষেবার বৈশ্বিক গড় মূল্য গত বছরের মাথাপিছু মোট জাতীয় আয়ের দশমিক থেকে কমে দশমিক শতাংশে এসেছে। তবে এখন কম আয়ের দেশগুলোতে খরচ এখনো অধিবাসীদের নাগালের বাইরে। আইটিইউর পক্ষ থেকে বিশ্বের সব দেশকে সাশ্রয়ী মূল্যের ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা নিশ্চিতের আহ্বান জানানো হয়েছে। আইটিইউর প্রতিবেদনে ইন্টারনেট ব্যবহারের দিক থেকে নারী পুরুষের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য দেখা গিয়েছে। পুরুষের তুলনায় ২৫ কোটি ৯০ লাখ বা তার চেয়ে কম নারীরা ইন্টারনেট ব্যবহার করে। সে হিসেবে বর্তমানে বিশ্বে ৬৩ শতাংশ নারী ইন্টারনেট ব্যবহার করছে, যেখানে পুরুষের হার ৬৯ শতাংশ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন