পুঁঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বারাকা পাওয়ার লিমিটেডের জিরো কুপন বন্ড ইস্যুর সিদ্ধান্তে অনুমোদন দেয়নি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। গত রোববার এ বন্ড ইস্যুর প্রস্তাবে অসম্মতি জানিয়ে কোম্পানিটির কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এক মূল্যসংবেদনশীল তথ্যে বিষয়টি জানিয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কোম্পানিটি।
তথ্য অনুসারে, গত বছরের ১৫ নভেম্বর ডিএসইর মাধ্যমে কোম্পানিটি জানিয়েছিল তারা ১৮০ কোটি টাকা ফেস ভ্যালুর নন-কনভার্টিবল, নন-লিস্টেড, জিরো কুপন বন্ড ইস্যুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে এ বন্ড ইস্যু করে ঋণ পরিশোধ করতে চেয়েছিল কোম্পানিটি। কিন্তু তাদের এ প্রস্তাব নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বণিক বার্তাকে বলেন, বন্ডের অনুমোদনের জন্য যেসব শর্ত পূরণ করার কথা ছিল সেটি বারাকা পাওয়ার করতে পারেনি। এছাড়া কোম্পানিটির সিআইবি ছাড়পত্রও ছিল না। এসব কারণেই কোম্পানিটির বন্ডে কমিশন অনুমোদন দেয়নি।
২০১১ সালে বারাকাতুল্লাহ ইলেকট্রো ডাইনামিকস লিমিটেড (বিইডিএল) নামে পুঁজিবাজারে আসে বর্তমান বারাকা পাওয়ার। কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ৪০০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ২৩৫ কোটি ৪৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ১৩৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ২৩ কোটি ৫৪ লাখ ৬৫ হাজার ৬৬১। এর মধ্যে ৩১ দশমিক ৮৭ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালক, ২৭ দশমিক ৫১ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও বাকি ৪০ দশমিক ৬২ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।
সর্বশেষ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২১-২২ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) বারাকা পাওয়ারের শেয়ারপ্রতি সমন্বিত আয় (ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ৫৩ পয়সা। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ২ টাকা ১৮ পয়সা। আর তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) কোম্পানিটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ৮৪ পয়সা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৬৮ পয়সা। এ বছরের ৩১ মার্চ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২২ টাকা ৮৯ পয়সায়।
৩০ জুন সমাপ্ত ২০২০-২১ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে বারাকা পাওয়ার। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ২ টাকা ৯৬ পয়সা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ২ টাকা ৪১ পয়সা। গত বছরের ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির সমন্বিত এনএভিপিএস দাঁড়ায় ২০ টাকা ৯১ পয়সায়। আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ২০ টাকায়।
এর আগে ৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৯-২০ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের মোট ১৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল বারাকা পাওয়ার। এর মধ্যে ৮ শতাংশ নগদ ও বাকি ৭ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ রয়েছে। ২০১৮-১৯ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি। ২০১৭-১৮ হিসাব বছরে ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছিল তারা। এছাড়া ২০১৭ হিসাব বছরের জন্য ৫ শতাংশ নগদের পাশাপাশি ১৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ পেয়েছিলেন কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা।
ডিএসইতে গতকাল কোম্পানিটির শেয়ারের সর্বশেষ ও সমাপনী দর ছিল ২২ টাকা ৪০ পয়সা। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দর ছিল যথাক্রমে ২০ টাকা ৭০ পয়সা ও ৩৩ টাকা ২০ পয়সা।