মালদ্বীপে পালালেন শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট

বণিক বার্তা অনলাইন

অবশেষে দেশ ছেড়ে পালালেন শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দিবাগত রাতে একটি সামরিক উড়োজাহাজে তিনি মালদ্বীপ গিয়েছেন বলে জানিয়েছেন অভিবাসন কর্মকর্তারা।

শ্রীলংকার সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানায়। 

বিবিসি জানিয়েছে, বেসামরিক উড়োজাহাজ ও সমুদ্র পথে চেষ্টার পরে অবশেষে সামরিক উড়োজাহাজে করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। ৭৩ বছর বয়সী এ নেতা স্থানীয় সময় বুধবার রাত তিনটার দিকে মালদ্বীপের রাজধানী মালে পৌঁছান। মালে বিমানবন্দর পুলিশ জানিয়েছে, মালদ্বীপ বিমানবন্দরে অবতরণের পরে কড়া পুলিশি পাহারায় তাদের গোপন স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। দেশ ছেড়ে পালানোর মধ্য দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার এ দ্বীপ দেশে মহা প্রতাপশালী রাজাপাকসে পরিবারের কয়েক দশকের কর্তৃত্বের লজ্জাজনক অবসান ঘটল। 

একজন অভিবাসন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, গোতাবায়া রাজাপাকসে তার স্ত্রী এবং দুজন দেহরক্ষীকে সঙ্গে নিয়ে শ্রীলংকার বিমান বাহিনীর একটি উড়োজাহাজে করে দেশ ছাড়েন। 

প্রেসিডেন্টের দেশ ছাড়ার খবর সামনে আসার পর বিক্ষোভকারীদের উল্লাস প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে। রাজধানী কলম্বোয় বিক্ষোভের মূল কেন্দ্রস্থল গলে ফেস গ্রিন পার্কে মঙ্গলবার বিকেল থেকে যোগ দিতে থাকে আরও হাজার হাজার বিক্ষোভকারী।

বিবিসি বলছে, শ্রীলংকার ক্ষমতাসীন কোনো প্রেসিডেন্টকে সংবিধান অনুযায়ী গ্রেফতারের সুযোগ নেই। গোতাবায়া আশঙ্কা করছিলেন, প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়ার পর তাকে গ্রেফতার করা হতে পারে। মূলত সে জন্য তিনি সোমবার রাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের উদ্দেশে দেশত্যাগের চেষ্টা করেন। তবে অভিবাসন কর্মকর্তারা তাকে আটকে দেন। তিনি ও তার স্ত্রীসহ পরিবারের ১৫ সদস্য আরব আমিরাতের চারটি ফ্লাইট ধরতে পারেননি। পরে বন্দরনায়েক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশের সামরিক ঘাঁটিতে ফিরে যান তারা। তিনি নৌপথে পালানোর চেষ্টা করেন। সেখানেও ব্যর্থ হন। পরে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার জন্য গোতাবায়া ভিসার আবেদন করেছিলেন। 

তবে তার সে আবেদন নাকচ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ‘দ্য হিন্দু’ পত্রিকার এক শীর্ষ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে শ্রীলংকাভিত্তিক ডেইলি মিররের প্রতিবেদনে এমনটাই জানানো হয়েছে। শ্রীলংকা এবং যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশেরই দ্বৈত নাগরিকত্ব ছিল গোতাবায়ার। কিন্তু ২০১৯ সালের নির্বাচনের আগে একটি আইন মেনে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ছেড়ে দেন। ওই আইনে বিদেশি নাগরিকদের নির্বাচনে দাঁড়ানো নিষিদ্ধ ছিল। ‘দ্য হিন্দু’ পত্রিকা এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য কলোম্বোর আমেরিকান দূতাবাসে যোগাযোগ করেও কোনো সাড়া পায়নি।

এদিকে, প্রেসিডেন্টের ভাই ও সাবেক অর্থমন্ত্রী বসিল রাজাপাকসেও দেশ ছেড়েছেন বলে জানায় বিবিসি। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন