ঈদুল আজহার ছুটির পর গতকাল ছিল পুঁজিবাজারে প্রথম কার্যদিবস। এদিন দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন ও সূচক দুটোই কমেছে। পাশাপাশি গতকাল এক্সচেঞ্জটির লেনদেনে অংশ নেয়া বেশির ভাগ শেয়ারের দরপতন হয়েছে। তবে বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর বেড়েছে এদিন। দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) গতকাল লেনদেন ও সূচক কমেছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল সকাল ১০টায় লেনদেন শুরুর প্রথম ১১ মিনিট ডিএসইর সার্বিক সূচক ডিএসইএক্সে পয়েন্ট যোগ হলেও পরে তা কমতে থাকে। দিনশেষে ১১ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৩৫৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে ডিএসইএক্স। আগের কার্যদিবসে যা ছিল ৬ হাজার ৩৬৭ পয়েন্টে। গতকাল সূচকের পতনে সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, রবি আজিয়াটা, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, বিএটিবিসি, ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালস, ডেল্টা লাইফ, ন্যাশনাল ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক ও জিপিএইচ ইস্পাতের শেয়ারের।
ডিএসইর ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ গতকাল প্রায় ১০ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ২৮৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের দিন শেষে যা ছিল ২ হাজার ২৯৪ পয়েন্টে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল দিন শেষে ২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৮৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের দিন শেষে যা ছিল ১ হাজার ৩৮৮ পয়েন্টে।
ডিএসইতে গতকাল ৬৭৯ কোটি ৪৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের কার্যদিবসে লেনদেন ছিল ৭৮৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৮১টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ১২৮টির, কমেছে ২০৯টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৪৪টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।
খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ২৩ দশমিক ৪ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে বস্ত্র খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ দখলে নিয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাত। ১১ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বিবিধ খাত। চতুর্থ অবস্থানে থাকা প্রকৌশল খাতের দখলে ছিল লেনদেনের ৭ দশমিক ৬ শতাংশ। এছাড়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের দখলে ছিল মোট লেনদেনের ৭ দশমিক ৫ শতাংশ।
গতকাল বস্ত্র খাতের শেয়ারে সবচেয়ে ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে, ২ শতাংশ। এছাড়া আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাত ও চামড়া খাত থেকে দশমিক ৩ শতাংশ হারে ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। বাকি সব খাত থেকেই গতকাল নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে কাগজ ও মুদ্রণ খাত থেকে, ১ দশমিক ৬ শতাংশ। এছাড়া সিরামিক খাত থেকে ১ দশমিক ৫ শতাংশ, সেবা খাত থেকে ১ দশমিক ২ শতাংশ এবং
সিমেন্ট ও সাধারণ বীমা খাত থেকে ১ দশমিক ১ শতাংশ হারে নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে গতকাল।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ ১০ কোম্পানি ছিল আইপিডিসি, বেক্সিমকো লিমিটেড, ফরচুন সুজ, ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং, তিতাস গ্যাস, ফু-ওয়াং ফুড, সায়হাম টেক্সটাইল, গোল্ডেন সন, কুইন সাউথ ও জেএমআই হাসপাতাল।
এক্সচেঞ্জটিতে দর বৃদ্ধির শীর্ষে থাকা কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে গোল্ডেন সন, নূরানী ডাইয়িং, জাহিন টেক্সটাইল, সায়হাম টেক্সটাইল, সাফকো স্পিনিং, আইএসএন লিমিটেড, রিজেন্ট টেক্সটাইল, ইস্টার্ন
কেবলস, এক্সপ্রেস টেক্সটাইল ও এমএল ডায়িং।
গতকাল ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি দর কমার তালিকায় থাকা কোম্পানিগুলো হচ্ছে জনতা ইন্স্যুরেন্স, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, নিটল ইন্স্যুরেন্স, সোনালী পেপার, কে অ্যান্ড কিউ, দুলামিয়া কটন, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকস, মনোস্পুল পেপার, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স ও ওরিয়ন ইনফিউশন।
অন্যদিকে সিএসইর নির্বাচিত সূচক সিএসসিএক্স গতকাল ৪০ পয়েন্ট কমে ১১ হাজার ১৯৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসইর সব শেয়ারের সূচক সিএএসপিআই গতকাল ৬৪ পয়েন্ট কমে ১৮ হাজার ৬৮৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ২৭১টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৯২টির, কমেছে ১৫১টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২৮টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে মোট ১৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে।
