কোয়ালকম নির্ভরতা কাটিয়ে উঠতে পারছে না অ্যাপল

বণিক বার্তা ডেস্ক

কোয়ালকমের ফাইভজি মডেম নিয়ে বাজারে এসেছিল আইফোন ১২ ছবি: টেক টাইমস

সাম্প্রতিক বছরগুলোয় জোর প্রচেষ্টা সত্ত্বেও নিজস্ব ফাইভজি মডেম নিয়ে আসার ক্ষেত্রে এখনো তেমন সফলতা দেখাতে পারেনি অ্যাপল। এজন্য কোয়ালকম টিএসএমসির মতো প্রতিষ্ঠানের ওপর এখনো নির্ভরশীল মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্টটি। অ্যাপল ইনসাইডারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালে আইফোন ১৫ হ্যান্ডসেটের ফাইভজি মডেমেরও একক সরবরাহকারী থাকছে কোয়ালকম। খবর টেক টাইমস।

অ্যাপল ২০২০ সালে আইফোনে ফাইভজি নিয়ে এসেছিল। আইফোন ১২-তে স্মার্টফোনে ফাইভজি স্পিড ব্যবহারের অভিজ্ঞতা পেল অ্যাপল ভক্তরা। এতে ব্যবহূত হয়েছে কোয়ালকমের ফাইভজি মডেম। অনেক অ্যান্ড্রয়েড ফোনেও ফাইভজি সংযোগে মডেম ব্যবহূত হয়েছে। সবসময় অন্যদের চেয়ে গ্রাহকদের ভিন্নতর উন্নততর অভিজ্ঞতা দেয়ার চেষ্টায় থাকা অ্যাপলের জন্য কিছুটা মাথাব্যথার কারণ ছিল পরনির্ভরশীলতা। এজন্য গুঞ্জন ওঠে, নিজস্ব ফাইভজি মডেম আনতে যাচ্ছে অ্যাপল। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে সামনের আরো কয়েকটি আইফোনের জন্যও অ্যাপলকে কোয়ালকমের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে।   

নিজস্ব ফাইভজি চিপসেট আনার ক্ষেত্রে হিমশিম খাচ্ছে অ্যাপল। এজন্য অন্যান্য কোম্পানির ওপর নির্ভরশীলতা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টায় আছে ক্যালিফোর্নিয়ার কুপারটিনোভিত্তিক কোম্পানিটি। বিশ্বস্ত সূত্রের বরাতে সিনেট জানায়, আইফোনের জন্য ফাইভজি মডেম তৈরিতে চাপের মধ্যে রয়েছে অ্যাপল। এজন্য তাদেরকে কোয়ালকমের কাছেই ফেরত আসতে হয়েছে।

টিএফ সিকিউরিটিজের বিশ্লেষক মিং-চি কিয়ু জানান, নিজস্ব নকশায় ফাইভজি মডেম আনার চেষ্টা চালিয়েছে অ্যাপল। কিন্তু ২০২৩ সালে উন্মোচিত হতে যাওয়া আইফোন ১৫-তেও কোয়ালকমের চিপসেট ব্যবহূত হবে তা প্রায় নিশ্চিত।

যন্ত্রাংশের কার্যক্রমের ওপর অধিকতর নিয়ন্ত্রণ ব্যয়সাশ্রয়ের জন্য কয়েক বছর ধরেই নিজস্ব মডেম নিয়ে কাজ করে যাচ্ছিল অ্যাপল। এতে কিছুটা অগ্রগতি এলেও তা আইফোন ১৫-তেই যুক্ত করার মতো নয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

সম্প্রতি একাধিক টুইটে মিং-চি কিয়ু জানান, সরবরাহ চেইন জরিপে ইঙ্গিত স্পষ্ট অ্যাপলের ফাইভজি মডেম উন্নয়নের কাজ ব্যর্থ হয়েছে। এতে ২০২৩ নাগাদ ফাইভজি চিপ সরবরাহের এক্সক্লুসিভ অংশীদার থাকছে কোয়ালকম।

অ্যাপলের আগের এক জরিপে বলা হয়েছিল, ২০২৩ সালে ২০ শতাংশ ফাইভজি মডেম সরবরাহ করবে কোয়ালকম। কিন্তু নতুন প্রাক্কলনে বলা হয়, কোয়ালকমই ১০০ শতাংশ ফাইভজি মডেম সরবরাহ করতে যাচ্ছে।

কিয়ু মনে করেন, ফাইভজি মডেম নিয়ে সাম্প্রতিক ব্যর্থতা সত্ত্বেও সহজেই পিছু হটার পাত্র নয় অ্যাপল। আবার অ্যাপল নিজস্ব ফাইভজি মডেম নিয়ে এলে কোয়ালকমের যে বড় আকারের লোকসান হবে এমনও নয়। যতদিনে অ্যাপল ফাইভজি মডেম নিয়ে আসবে ততদিনে আরো একাধিক সেগমেন্টে কোয়ালকমের বাজার সম্প্রসারিত হবে।

ফাইভজি মডেম নিয়ে অ্যাপলের উচ্চাবিলাসের প্রমাণ পাওয়া যায় ইন্টেলের স্মার্টফোন মডেম ব্যবসা অধিগ্রহণের মাধ্যমে। ২০১৯ সালে হাজার ২০০ প্রকৌশলীসহ অধিগ্রহণে বড় অংকের অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে অ্যাপলকে। তাই দেরিতে হলেও অ্যাপল এর ফল ঘরে তুলতে পারবে বলে মনে করেন কিয়ুর মতো বিশ্লেষকরা।

নিজস্ব ফাইভজি মডেমের সুবিধার মধ্যে রয়েছে, ব্যয় সাশ্রয়, পরনির্ভরশীলতা হ্রাস নিজেদের প্রয়োজনমাফিক মডেম উন্নয়ন। অ্যাপলের জন্য প্রয়োজনমাফিক মডেম উন্নয়নের সুযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে একেক পণ্যে প্রয়োজনমাফিক একেক ধরনের মডেম ব্যবহার করতে পারবে অ্যাপল। 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন