আসাম-মেঘালয়ে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, মৃত ৫৫

বণিক বার্তা ডেস্ক

পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের আসাম মেঘালয়ে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। আসামের বেশকিছু অংশের পরিস্থিতি ধীরে ধীরে আরো অবনতি হচ্ছে। বন্যা ভূমিধসে সেখানে প্রাণ হারিয়েছে আরো নয়জন। তাদের মধ্যে একজন শিশুও ছিল। এখনো নিখোঁজ রয়েছে একজন। নিয়ে আসামে এবারের বন্যায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৫। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া।

বন্যার তীব্রতায় ক্ষতির মুখে পড়েছে রাজ্যের ২৮টি জেলার ১৯ লাখ মানুষ। আসামের বিভিন্ন অংশ থেকেই আসছে মৃত্যুর খবর। এখন পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে প্রায় তিন হাজার গ্রাম। এর আগে চলতি বছরের মে মাসেও আগাম বর্ষায় বেশ ভুগতে হয় আসামকে।

জেলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে বাজালি জেলা। ব্রহ্মপুত্র গৌরাঙ্গ নদীর পানি বেড়ে বিপত্সীমার অনেক ওপর দিয়ে বইছে। এরই মধ্যে কর্তৃপক্ষের বানানো ৩৭৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে এক লাখ মানুষ। ৪৩ হাজার ৩৩৮ দশমিক ৩৯ হেক্টর আবাদি জমি চলে গেছে পানির নিচে। ক্ষতির মুখে পড়েছে জেলার লাখ ৫৫ হাজার মানুষ। সেখানকার কপিলি নদীর পানি বিপত্সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বন্যা আক্রান্ত এলাকার প্রশাসন জেলায় সতর্কসংকেত জারি করেছে। জরুরি প্রয়োজন বা চিকিৎসার প্রয়োজন ছাড়া কাউকে বাড়ির বাইরে বের না হওয়ারও আহ্বান জানানো হয়েছে।

পানিবন্দি হয়ে পড়ায় আসামের রাজধানী গুয়াহাটি পুরোপুরি স্থির হয়ে পড়েছে। গুয়াহাটিতে বেশকিছু ভূমিধসের খবরও পাওয়া গেছে। সেই সঙ্গে অজন্তানগর নুনমাতি এলাকায় তিনজন আহত হওয়ার খবরও পাওয়া গিয়েছে।

আসামের রাঙ্গিয়া বিভাগের নালবাড়ি এবং ঘোগড়াপার এলাকায় রেলপথ পানির নিচে চলে যাওয়ায় অন্তত ছয়টি ট্রেন চলাচল বাতিল এবং চারটি ট্রেন চলাচল আংশিক বাতিল করা হয়েছে।

নালবাড়ি জেলার বন্যাকবলিত এক গ্রামের বাসিন্দা প্রমোদ বর্মণ বলেন, গ্রামের অবস্থা খুবই করুণ। প্রতি ঘণ্টায় পানির উচ্চতা বাড়ছে আর সেটা খুবই ভয়ংকর হয়ে উঠছে। আমাদের বাড়িও পুরোপুরি ডুবে গেছে। আমরা এখন এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি।

গত বুধবার থেকে তীব্র বর্ষণ চলছে আসাম মেঘালয়ে। আগামী সপ্তাহের শেষ পর্যন্ত সেখানে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৯৭১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। যেটা ১৯৯৫ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ এবং ১২২ বছরের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ।

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বৃষ্টিপাত আরো বেশকিছু সময় অব্যাহত থাকবে। ফলে পরিস্থিতি আরো অবনতি হওয়ার আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্টরা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন