স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী

বিশেষ আলোচনার পর সংসদে সাধারণ প্রস্তাব পাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১০ ঘণ্টার বেশি বিশেষ আলোচনা শেষে একটি প্রস্তাব সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করা হয়েছে। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী গতকাল ওই প্রস্তাবটি ভোটে দিলে কণ্ঠভোটে সেটি পাস হয়। পরে টেবিল চাপড়ে উল্লাস জানান সংসদ সদস্যরা। বুধবার জাতীয় সংসদে বিশেষ আলোচনার জন্য সাধারণ প্রস্তাব উপস্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সংসদ নেতার কার্যপ্রণালি বিধির ১৪৭ বিধিতে আনা প্রস্তাবের ওপর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বিশেষ আলোচনা শুরু হয়। প্রস্তাব তুলে সংসদ নেতা আলোচনার শুরু করেন। ওইদিন সংসদে স্মারক বক্তৃতা দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। দুই দিনব্যাপী ওই আলোচনায় সরকারি বিরোধী দলের ৫৯ জন সংসদ সদস্য অংশ নেন। সব মিলিয়ে আলোচনা হয় ১০ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট।

সাধারণ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় সংসদ সদস্যরা বাংলাদেশের ৫০ বছরের অর্জন, স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামী জীবন তুলে ধরেন। সময় বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, বিএনপি এবং ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলের সদস্যরা বর্তমান সরকারের বেশকিছু কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেন। আলোচনায় তারা জাতীয় ঐকমত্যের কথাও বলেন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী সাড়ম্বরে উদযাপনে গত বছরকে মুজিব বর্ষ ঘোষণা করে নানা কর্মসূচি নিয়েছিল সরকার। তবে নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে কর্মসূচিগুলো যথাযথভাবে করতে না পারায় মুজিব বর্ষের মেয়াদ ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। বছরের ২৬ মার্চ বাংলাদেশ উদযাপন করেছে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন করবে বাংলাদেশ। সংসদে আলোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ১৪৭ বিধির প্রস্তাবে বলা হয়, সংসদের অভিমত এই যে, ২০২১ সালে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন বাঙালির জাতীয় জীবনে এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। সমগ্র বিশ্বে বাংলাদেশ আজ এক উন্নয়ন বিস্ময়

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৪৮ থেকে ৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ৬৬-এর ছয় দফা, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ, ২৫ মার্চ গণহত্যা, ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণা, ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন এবং এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ৩০ লাখ মহান শহীদ দুই লাখ মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১- পাক সেনাদের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, মুক্তির মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ৩০ লাখ মহান শহীদ, আত্মত্যাগী দুই লক্ষ মা-বোন, সব বীর মুক্তিযোদ্ধা, জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, এএইচএম কামারুজ্জামানসহ সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনের শহীদের প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা। ১৯৭২-এর ১০ জানুয়ারি স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর জাতির পিতা বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন করেন। নভেল করোনাভাইরাস অতিমারীর সংকট উত্তরণে ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ অর্থনীতির চালিকাশক্তি সচল রেখেছে। মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কর্ণফুলী টানেলসহ স্ব-অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ বিশ্বে বাংলাদেশের সক্ষমতা প্রমাণ করেছে। ভারত মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নির্ধারণ মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উেক্ষপণ বাংলাদেশের সফলতার জয়যাত্রায় যুক্ত করেছে অনন্য মাইলফলক।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন