লেনদেনের ৫৩% পাঁচ খাতের শেয়ারে রিটার্ন কমেছে

মুনাফা ও বিনিয়োগ সংগ্রহের প্রবণতায় পতন

নিজস্ব প্রতিবেদক

গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে দুই কার্যদিবসে পতন হয়েছে দেশের পুঁজিবাজারে। বাকি তিন কার্যদিবস উত্থান হলেও সপ্তাহ শেষে সূচক, লেনদেন, বাজার মূলধন লেনদেনে অংশ নেয়া বেশির ভাগ কোম্পানি ফান্ডের শেয়ার ইউনিট দর কমেছে। দুই কার্যদিবস পতনের ফলে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে দশমিক ৪২ শতাংশ, লেনদেন কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ, বাজার মূলধন কমেছে শতাংশ এবং লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৮২টি শেয়ার ইউনিটের মধ্যে ২৮২টির দর কমেছে। খাতভিত্তিক রিটার্নে ১৪ খাতের শেয়ারে দরপতন হয়েছে।

গত সপ্তাহে পাঁচ খাতে বিনিয়োগকারীদের মুনাফা সংগ্রহের প্রবণতা দেখা গেছে। ফলে সপ্তাহ শেষে বাজারে পতন হয়েছে বলে মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা। সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত সপ্তাহে লেনদেনের মোট ৫৩ শতাংশই হয়েছে আর্থিক, ওষুধ রসায়ন, প্রকৌশল, বস্ত্র ব্যাংক খাতে। গত সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবসে ডিএসইর মোট লেনদেন হয়েছে ১১ হাজার ১২২ কোটি ৩৯ লাখ ৪৫ হাজার ৮০৬ টাকা। এর মধ্যে আলোচ্য পাঁচ খাতে লেনদেন হয়েছে হাজার ৩৪৭ কোটি টাকা বা ৫২ দশমিক ৯০ শতাংশ। এদিকে লেনদেনের বিপরীতে সপ্তাহ শেষে রিটার্নের দিক থেকে আলোচ্য পাঁচ খাতের বেশির ভাগ শেয়ারদর কমেছে। ফলে খাতগুলোর শেয়ার লোকসানে রয়েছে।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, একাধিক সপ্তাহ ধরে টানা উত্থানের ফলে বেশির ভাগ শেয়ারেই মুনাফায় ছিলেন বিনিয়োগকারীরা। তবে গত সপ্তাহে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিলের বিষয় নিয়ে যে সংশয় তৈরি হয় এতে দ্বিধায় পড়ে যান বিনিয়োগকারীরা। সেই সঙ্গে তিন কোম্পানি বার্জার পেইন্টস, ওয়ালটন আইসিবির ১০ শতাংশ করে শেয়ার ছাড়ার বিষয়ে বিএসইসি যে নির্দেশনা দেয় এতে তিন কোম্পানির শেয়ার বিক্রির চাপ বেড়ে যায়। ফলে বিনিয়োগকরীরা বাজার থেকে মুনাফা সংগ্রহ শুরু করেন, এতে শেয়ার বিক্রির চাপ বেড়ে যায় এবং বাজারে পতন হয়। তারা মনে করছেন, পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিলের কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একটি আস্থা তৈরি হয়েছিল। তহবিল গঠন করা হলে এর মাধ্যমে বাজারের স্থিতিশীলতায় কাজ করলে বিনিয়োগকারীরা বড় পতন থেকে রক্ষা পেতেন বা তাদের বিনিয়োগ সুরক্ষা নিশ্চিত থাকত। কারণে তাদের আস্থা বেড়ে যায় এবং বাজারে বিনিয়োগ বাড়তে শুরু করে। কিন্তু গত সপ্তাহে ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যে ফান্ড রয়েছে সে বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বক্তব্যে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সংকট দেখা দেয়। এতে তারা মুনাফা সংগ্রহ করতে থাকেন, সেই সঙ্গে অনেকে বিনিয়োগ তুলে নেন। এতে পতনের সঙ্গে লেনদেনও কমে যায় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

বাজার পর্যালোচনায়, গত সপ্তাহে ১৩ দশমিক ১০ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে আর্থিক খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১১ দশমিক ৩০ শতাংশ দখলে নিয়েছে ওষুধ রসায়ন খাত। ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রকৌশল খাত। ১০ দশমিক ১০ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে চতুর্থ অবস্থানে ছিল বস্ত্র খাত। আর দশমিক ৯০ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে ব্যাংক খাত।

এর বিপরীতে গত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি যে খাতের শেয়ারে রিটার্ন কমেছে সেটা হলো প্রকৌশল খাত। গত সপ্তাহে প্রকৌশল খাতে ১২ শতাংশ রিটার্ন কমেছে। আর্থিক খাতের শেয়ারে গত সপ্তাহে রিটার্ন দশমিক ৫০ শতাংশ কমেছে। সেই সঙ্গে ওষুধ রসায়ন খাতের শেয়ারে রিটার্ন কমেছে দশমিক ৬০ শতাংশ, বস্ত্র খাতে কমেছে দশমিক ৯০ শতাংশ ব্যাংক খাতের শেয়ারে রিটার্ন কমেছে দশমিক ৭০ শতাংশ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন