জাপানের পদকের সঙ্গে বাড়ছে অলিম্পিক পণ্য বিক্রি

বণিক বার্তা ডেস্ক

জাপানে বিক্রি বেড়েছে অলিম্পিকের লোগোসংবলিত চাবির রিং বা ব্যাজের মতো সুভেনিরের ছবি: এপি

অলিম্পিক গেমসের মতো বড় বড় আসরে জড়িয়ে থাকে নানা ধরনের ব্যবসা। হতে পারে সেটি উড়োজাহাজ পরিষেবা, হোটেল বা পর্যটন খাত কিংবা স্থানীয় পণ্য বা সুভেনির বিক্রির খাত। মোট কথা, ধরনের আয়োজনে যুক্ত থাকে নানা শ্রেণী-পেশার মানুষের লাভ-লোকসান।

কিয়োদো নিউজের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছর টোকিও অলিম্পিক নিয়েও জাপানের একাংশের মানুষের অনেক প্রত্যাশা ছিল, পরিকল্পনা ছিল, যার কিছুই হয়তো পূরণ হয়নি। কিন্তু এর পরও ছোট ছোট কিছু সফলতার গল্প তো তৈরি হয়েছেই। উদাহরণ হিসেবে বলতে হয় অলিম্পিকের লোগো বা বিভিন্ন প্রতীকসংবলিত চাবির রিং বা ব্যাজের মতো সুভেনিরের বিক্রির কথা। একটি প্রতিবেদন বলছে, এবারের অলিম্পিকে জাপানের মেডেলপ্রাপ্তির সঙ্গে সমানুপাতে বেড়েছে এসব সামগ্রীর বিক্রি। গেমসের ভক্তরা জাপানের জয়কে স্মরণীয় করে রাখতেই হয়তো কিনে রাখছেন এসব সামগ্রী।

যদিও এবার অলিম্পিকের আয়োজন নিয়ে জাপানের মানুষের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়েছিল। বেশির ভাগ জাপানিই এবারের আসরের বিরোধিতা করছিলেন। আবার এখন তারাই বিভিন্ন দোকান থেকে কিনছেন অলিম্পিক-সংক্রান্ত সামগ্রী। তারা বলছেন, এমন আসরের দেখা জীবনে একবার মেলে। তাই তার কিছু স্মৃতি সংরক্ষণ করছেন। বিশেষ করে অলিম্পিক তাদের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এখন পর্যন্ত অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, সর্বোচ্চ সোনার পদক পাওয়া দেশগুলোর তালিকায় জাপান থাকবে।

কেবল সুভেনির বিক্রির দোকানগুলো নয়, অলিম্পিকের অফিশিয়াল অনলাইন স্টোরেও জাপানের ঐতিহ্যবাহী পোশাক, কারুপণ্যসহ -সংশ্লিষ্ট পণ্যের বিক্রি বেড়েছে। দেখা গেছে, অলিম্পিকের লোগো-সংবলিত মগ, পিন, ব্যাজ ইত্যাদির বিক্রি অনেক বেড়েছে।

জাপানে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবার বাড়তে শুরু করেছে। গত ১২ জুলাই থেকে টোকিওতে জরুরি অবস্থা জারি রয়েছে। তার পরও সপ্তাহে এসব পণ্য কেনার জন্য দোকানগুলোর বাইরে ক্রেতাদের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। তবে সশরীরে এসব পণ্য কেনার জন্য দোকানে প্রবেশের আগে পর্যটকদের শরীরের তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে, হাত জীবাণুমুক্ত করতে হচ্ছে। ফুজুকি মারুইয়ামা নামে এক দোকানি বলেন, মহামারীর মধ্যেও যে পরিমাণ ক্রেতা সমাগম হবে সেটি তারা আগে বুঝতে পারেননি।

অথচ সপ্তাহখানেক আগে জাপানিরাই অলিম্পিকের তীব্র বিরোধিতা করছিলেন। কিন্তু জাপানের স্বর্ণপদকের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে অলিম্পিক ইস্যুতে নমনীয় হয়ে উঠছেন তারা। নাগোয়া শহরের একটি অফিশিয়াল অলিম্পিক স্টোরে কেনাকাটা করতে আসা মধ্যবয়সী এক জাপানি অলিম্পিক নিয়ে নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেন। তিনি বলেন, গেমসের কিছু ইভেন্ট দেখার পর তিনি ভীষণ উত্তেজিত বোধ করছেন। তার দারুণ ভালো লাগছে। সেজন্য নিজের শিশুসন্তানের জন্য কিছু সুভেনির কিনতে এসেছেন তিনি।

অলিম্পিকসংক্রান্ত সামগ্রী বিক্রির দোকানগুলোতে গত ২৩ জুলাই থেকেই বিকিকিনি বেশ জমজমাট। শুধু টোকিওর নয়, দেশজুড়ে সব দোকানের অবস্থাই এখন এমন।

ম্যারাথন রেস ওয়াক ইভেন্টগুলো অনুষ্ঠিত হচ্ছে হোকাইডো দ্বীপে। সেখানে অফিশিয়াল যে অলিম্পিক স্টোর রয়েছে, তাতে মে মাসেও এত ক্রেতা সমাগম দেখা যায়নি। গত ১৭ দিনে যে পরিমাণ ক্রেতা এসেছেন তাতে বিস্মিতই হয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

দোকানগুলোর বিক্রেতারা জানিয়েছেন বাস্কেটবল জুডোর ছবিসংবলিত চাবির রিংগুলো সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে। তারা বলছেন, জাপান যদি এভাবেই পদক জিততে থাকে তাহলে এসব সামগ্রী বিক্রির পরিমাণ আরো বাড়বে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন