বোরোর ফলনে খুশি ঘোড়াঘাটের চাষীরা

ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে সংশয়

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, হিলি

বিস্তৃত এলাকাজুড়ে ফসলের মাঠ। দিগন্ত পেরিয়ে চোখ যতদূর যায়, শুধুই সোনালি ফসলের দোলখেলা। মাঠজুড়ে বোরো ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার চাষীরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে উপজেলাজুড়ে। তবে নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ধানের ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন চাষীরা। পাশাপাশি ধান কাটার শ্রমিক নিয়ে বেশ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, বছর ঘোড়াঘাট উপজেলায় ১২ হাজার ১৯৮ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে চলতি মৌসুমে চাষ হয়েছে হাজার ২৩৩ হেক্টর জমিতে। পাশাপাশি বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৮ হাজার ৪৪৩ টন। প্রতি বছর পার্শ্ববর্তী গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর, সাঘাটা ফুলছড়িসহ বেশ কয়েকটি উপজেলা থেকে কৃষি শ্রমিকরা এসে জমির ধান কাটতেন। তবে বছর করোনায় দীর্ঘ সময় ধরে লকডাউনের কারণে কৃষি শ্রমিকের সংকট দেখা দিয়েছে। উপজেলা প্রশাসন এবং কৃষি অফিস নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ধান কাটার শ্রমিক আনা-নেয়ার ব্যবস্থা করলেও করোনার হাত থেকে রক্ষায় অনেক কৃষিশ্রমিক কাজে আসতে অনীহা প্রকাশ করছেন। ফলে ধান কাটা নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে চাষীদের।

উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, আগাম সময়ে যারা বোরো ধান রোপণ করেছেন, সেই চাষীরা ধান কাটা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। অনেকে আবার জমিতে কেটে রাখা ধান ঘরে তোলা নিয়ে ব্যস্ত। তবে অনেক জমিতে দেরি করে ধান রোপণ করা হয়েছিল। সেসব জমির ধান কাটতে সময় লাগবে আরো দুই থেকে তিন সপ্তাহ। অনেক জমিতে কৃষিশ্রমিকের পরিবর্তে ধান কাটার কাজ করছে অত্যাধুনিক হারভেস্টার মেশিন।

চাষীরা বলছেন, হারভেস্টার মেশিন দিয়ে খুবই অল্প সময়ে শত শত বিঘা জমির ধান কাটা সম্ভব হচ্ছে। পাশাপাশি কৃষিশ্রমিকের চেয়ে অনেক কম দামে ধান কাটা সম্ভব হচ্ছে অত্যাধুনিক মেশিনের সাহায্যে। কৃষিশ্রমিকের মাধ্যমে প্রতি বিঘা জমির ধান কাটতে খরচ হচ্ছে থেকে হাজার টাকা। অপরদিকে হারভেস্টার মেশিনের সাহায্য প্রতি বিঘা জমির ধান কাটতে খরচ হচ্ছে মাত্র হাজার টাকা। এছাড়াও অত্যাধুনিক হারভেস্টার মেশিনের সাহায্যে ধান কাটলে ধান মাড়াই করার আর কোনো ঝামেলা থাকছে না। ঘোড়াঘাট পৌরসভার কাদিমনগর গ্রামের কৃষক সাব্বির হোসেন বলেন, চলতি মৌসুমে আমি ছয় বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছি। ধানের ফসল দেখে আশা করা যায় প্রতি বিঘায় ২৫ থেকে ৩০ মণ ধান উৎপাদন হবে।

নয়াপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল খালেক বলেন, ফলন তো ভালো হয়েছে। তবে ন্যায্যমূল্যে ধান বিক্রি করার সুযোগ পেলে আমরা সার্থক।

ঘোড়াঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইখলাছ হোসেন সরকার জানান, আবহাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে উপজেলার ধান ভুট্টা তুলনামূলক বেশি আবাদ হয়। আশা করা যায় বছর বোরো ধান চাষীরা ফলন দামে বেশ লাভবান হবেন। চলতি মৌসুমে আমরা প্রায় পাঁচ হাজার কৃষকের মাঝে বিনা মূল্যে বীজ সার বিতরণ করেছি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন