প্রকাশ্যে এলো তালেবান যোদ্ধার কৃত্রিম পায়ে অস্ট্রেলীয় সেনার বিয়ার পানের দৃশ্য

বণিক বার্তা অনলাইন

অস্ট্রেলিয়ার সিনিয়র স্পেশাল ফোর্সেসের সৈন্যরা আফগানিস্তানের একটি অননুমোদিত বারে একজন নিহত তালেবান যোদ্ধার কৃত্রিম পা (প্রসথেটিক লেগ) থেকে বিয়ার পান করেছিল - প্রথমবারের মতো সেই বিয়ান পানের একটি ছবি প্রকাশ করেছে গার্ডিয়ান অস্ট্রেলিয়া।

আফগানিস্তানের উরুজগান প্রদেশের রাজধানী তারিন কোটে অস্ট্রেলিয়ার বিশেষ বাহিনীর ঘাঁটির ভেতের বেআইনি পানশালা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। সেটিকে বলা হতো ‘ফ্যাট লেডিজ আর্মস’। সেই পানশালাতে একজন সিনিয়র সৈনিক যিনি এখনো সেনাবাহিনীতে কর্মরত- তালেবান যোদ্ধার কৃত্রিম পায়ে করে বিয়ান পান করেছেন। গার্ডিয়ানের হাতে আসা বেশ কয়েকটি ছবিতে সেই সেনার বিয়ান পানের দৃশ্যও আছে। আর ঘটনার সময় ২০০৯ সাল। আরেকটি ছবিতে দু’জন সৈনিককে ওই কৃত্রিম পা নিয়ে নাচতে দেখা যাচ্ছে।

বিয়ান পানের পাত্র হিসেবে কৃত্রিম পায়ের ব্যবহার সংক্রান্ত ছবিটি এ-ই প্রথম প্রকাশ হলো। এ সংক্রান্ত খবর এর আগে একাধিক সংবাদ মাধ্যমে এসেছে। এখন ছবি প্রকাশ পাওয়ায় প্রতিবেদনগুলোর সত্যতা নিশ্চিত হলো।

কিছু সৈন্য স্বীকার করেছেন, এ ধরনের চর্চা উচ্চ স্তরের কর্মকর্তারাও অনুমোদন করতেন এবং এমনকি তাদের মধ্যে অনেকে নিজেরাও যুক্ত ছিলেন। এ ধরনের বস্তু ‘যুদ্ধ ট্রফি’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু  অস্ট্রেলীয় সেনাদের এসব যুদ্ধক্ষেত্র থেকে হাতিয়ে নেয়ার ব্যাপারে কঠোরভাবে নিষেধ করা ছিল।

জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের অনুমোদন ও গোচরেই বছরের পর বছর এই চর্চা চলে আসার পরও নিচের স্তরের সেনাদের এসব কর্মকাণ্ডের জন্য ব্রেয়ারটন রিপোর্টে অন্যায়ভাবে সমালোচনা করা হয়েছে- ব্রেয়ারটন রিপোর্ট প্রকাশের পর এভাবেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সেনারা। সম্প্রতি ব্রেয়ারটনের রিপোর্টে দেখা গেছে, আফগানিস্তানে অস্ট্রেলীয় সেনাদের মধ্যে একটা ‘যোদ্ধা সংস্কৃতি’র চর্চা ছিল। সেখানে তাদের দ্বারা যুদ্ধাপরাধের মতো অপরাধ সংঘটনের প্রমাণ রয়েছে।

ধারণা করা হচ্ছে, ২০০৯ সালের এপ্রিলে উরুজগানের কাকারাকে দুটি কম্পাউন্ড এবং একটি টানেল কমপ্লেক্সে এসএএসআর-২ স্কোয়াড্রন অভিযানে নিহত এক তালেবান যোদ্ধার কৃত্রিম পা ছিল সেটি। বিজয়ী সেনারা সেই পা যুদ্ধক্ষেত্র থেকে নিয়ে গিয়েছিল এবং ফ্যাট লেডিজ আর্মসে সংরক্ষণ করেছিল। সেখানে পান করতে আসা সেনারা বিয়ার পানের জন্য কখনো কখনো সেটি ব্যবহার করতো।

পরে সেই পা আয়রন ক্রস বরাবর মাথার খুলির ছবি সম্বলিত একটি কাঠের ফলকের সামনে রাখা হয়।  নাৎসী জার্মানিদের সামরিক সজ্জায় এমন প্রতীক ব্যবহার করা হতো।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন