কমলা হ্যারিস কি মার্কিন নির্বাচনে তুরুপের তাস?

বণিক বার্তা ডেস্ক

আগামী নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের দুটি স্বপ্নের কারিগর হতে যাচ্ছেন কমলা হ্যারিস। প্রথমত, নির্বাচিত হলে তিনি হবেন প্রথম নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং দ্বিতীয়ত এর মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অন্ধকারের শাসনের ইতি ঘটবে। খবর এএফপি রয়টার্স।

৭৭ বছরের বাইডেনের বয়স বিবেচনায় এটা স্পষ্ট জয়ী হলে তিনি হয়তো দ্বিতীয় মেয়াদে লড়বেন না। অন্যদিকে ৫৬ বছরের হ্যারিসের বয়স বিবেচনায় ২০২৪ সালের নির্বাচনে এখন থেকেই বেশ এগিয়ে রয়েছেন তিনি।

ক্যালিফোর্নিয়ার সিনেটর হিসেবে অনেক বাধার দেয়াল ভাঙার রেকর্ড হ্যারিসের। তিনি ছিলেন সানফ্রান্সিসকোর প্রথম নারী ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি। এছাড়া প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী হিসেবে জনসংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম প্রদেশ ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন। আইনি বিষয়ে তার বিস্তৃত অভিজ্ঞতা বাইডেন প্রশাসনের জন্য খুবই কার্যকর দেখা দিতে পারে। বর্ণবৈষম্য দূরীকরণ দেশের পুলিশি কাঠামো সংস্কারে বাইডেন-হ্যারিস জুটি একে অন্যের জন্য অসাধারণ হিসেবে হাজির হতে পারে।

ভারত থেকে আসা মা জ্যামাইকা থেকে আসা অভিবাসী বাবার সন্তান হ্যারিসের লক্ষ্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হওয়া। বাইডেনসহ কুড়িখানেক ডেমোক্র্যাট মনোনয়ন প্রত্যাশীর সঙ্গে লড়াইও করেছিলেন তিনি। স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে দোদুল্যমান নীতি এবং প্রসিকিউটর হিসেবে তার ভূমিকার দায় স্বীকারে সিদ্ধান্তহীনতাসহ আকস্মিকভাবে বাইডেনের সামনে চলে আসায় গত ডিসেম্বরে মনোনয়ন দৌড় থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেন।

গত আগস্টে বাইডেনের রানিং মেট বাছাই হওয়ার পর কভিড-১৯ মোকাবেলায় চূড়ান্ত ব্যর্থতার জন্য ট্রাম্পের প্রতি একের পর এক কামান দাগান সিনেটর হ্যারিস। এছাড়া বর্ণবাদ, অভিবাসন অর্থনৈতিক নীতির জায়গা থেকেও প্রেসিডেন্টের কড়া সমালোচনা করেন অভিবাসী বাবা-মায়ের সন্তান। জ্যামাইকান বাবা ভারতীয় মায়ের গর্ভে ১৯৬৪ সালের ২০ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন তিনি। মার্কিন ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ সিভিল রাইটস আন্দোলন যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল ছিল সে সময়। ওয়াশিংটনের ব্ল্যাক হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিপ্লোমা নেয়ার পর পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে ধাপে ধাপে এগোতে থাকেন উচ্চাভিলাষী নারী। দুই-দুইবার সানফ্রান্সিসকোর ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির দায়িত্ব পালনের পর ২০১০ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল নির্বাচিত হন।

বাইডেনের রানিংমেট হিসেবে তিনি বিভিন্ন প্রজন্ম বর্ণের ডেমোক্র্যাট ভোটারদের এককাট্টা করতে কার্যকর প্রমাণিত হবেন বলে মনে করেন ডেমোক্র্যাট দলের কৌঁসুলি জোয়েল পেইন, যিনি ২০১৬ সালে হিলারি ক্লিনটনের প্রচারণায় কাজ করেছিলেন। কৌঁসুলি হিসেবে তার পূর্ব অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সিনেট শুনানিতে প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করার ক্ষমতা সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ২০১৭ সালে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ ইস্যুতে তত্কালীন অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশনসের শুনানিতে করা হ্যারিসের উপর্যুপরি প্রশ্ন ভাইরাল হয়েছিল। এক পর্যায়ে জেফ সেশনস বলেই বসেন, আমি অত দ্রুত দৌড়াতে পারছি না!

ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের সঙ্গে একমাত্র বিতর্কে ফের একটি ভাইরাল মুহূর্ত সৃষ্টি করেন তিনি। হ্যারিস যখন কথা বলছিলেন, তখন পেন্স বারবার বিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টা করায় হ্যারিস হাত তুলে প্রতিবাদ জানান, জনাব ভাইস প্রেসিডেন্ট, আমি বলছি। আমি বলছি। হ্যারিসের সাহসী উচ্চারণে ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া পেন্স চুপ হয়ে যান।

বাইডেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে ফৌজদারি বিচার, বিচার বিভাগীয় মনোনয়নে প্রধান ভূমিকা পালন করতে পারেন হ্যারিস।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন