ফাইভজি স্মার্টফোন

চলতি বছর বিক্রি ২৫ কোটি ইউনিটে পৌঁছবে

বণিক বার্তা ডেস্ক

২০২০ সালের শেষ নাগাদ পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি ফাইভজি সমর্থিত স্মার্টফোন বিক্রি রেকর্ড ২৫ কোটি ইউনিট ছাড়াবে। গত বছর বিশ্বজুড়ে ফাইভজি স্মার্টফোন বিক্রির পরিমাণ ছিল কোটি ৮০ লাখ ইউনিট। বিশ্বের অনেক বাজারে ফাইভজির বাণিজ্যিক ব্যবহার শুরু হওয়ায় ফাইভজি স্মার্টফোন বিক্রিতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। প্রবৃদ্ধি আসবে অ্যাপল, হুয়াওয়ে স্যামসাংয়ের মতো স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর হাত ধরে। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্ট্র্যাটেজি অ্যানালিটিকসের এক প্রতিবেদনে এমনটাই পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। খবর টেলিকম লিড।

বৈশ্বিকভাবে দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি ফাইভজি। নেটওয়ার্ক প্রযুক্তির সম্প্রসারণের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে ফাইভজি সমর্থিত স্মার্টফোনের চাহিদা, যা আগামীতে আরো বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা বিবেচনায় নিয়ে বিভিন্ন ডিভাইস ব্র্যান্ড ফাইভজি স্মার্টফোন উন্মোচন করছে। বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারের প্রবৃদ্ধিতে ফাইভজি সমর্থিত ডিভাইস গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বিষয়ে স্ট্র্যাটেজি অ্যানালিটিকসের অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর ভিলে-পেট্রি উকোনাহো বলেন, বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজার টানা কয়েক বছর ধরে খারাপ সময় পার করছে। তবে ফাইভজি নেটওয়ার্ক প্রযুক্তির সম্প্রসারণ পরিস্থিতিতে পরিবর্তন এনেছে। এখন বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারের প্রবৃদ্ধির অন্যতম নিয়ামক হয়ে উঠেছে ফাইভজি স্মার্টফোন এবং ধারা আগামী এক দশক অব্যাহত থাকবে।

তিনি বলেন, এখন চীন এবং যুক্তরাষ্ট্র বৃহৎ দুই ফাইভজি বাজারে পরিণত হয়েছে। উভয় দেশে ফাইভজি স্মার্টফোনের ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। অ্যাপলের আইফোন, হুয়াওয়ে স্যামসাং শীর্ষ তিন ফাইভজি স্মার্টফোন ব্র্যান্ড। বিশ্বজুড়ে বিক্রি হওয়া ডিভাইসের দুই-তৃতীয়াংশই তিন ব্র্যান্ডের।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফাইভজি স্মার্টফোন বাজারকে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। বেশির ভাগ ফাইভজি ফোনের দাম চড়া। অন্যদিকে সেলফোন অপারেটরগুলোর ফাইভজি নেটওয়ার্কের কাজ এখনো অসম্পূর্ণ। এর মধ্যে বাড়তি অনিশ্চয়তা যোগ করেছে কভিড-১৯ মহামারী। ভয়াবহ মহামারীর প্রাদুর্ভাবে ইউরোপ যুক্তরাষ্ট্রের বাজার পরিস্থিতি খারাপ যাচ্ছে।

ক্যানালিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি বছরের শেষ নাগাদ ফাইভজি স্মার্টফোনের সরবরাহ ২৮ কোটি ইউনিটে পৌঁছবে। এর মধ্যে ৬২ শতাংশ ডিভাইস এককভাবে চীনের বাজারে সরবরাহ হবে। বাকি ডিভাইস সরবরাহ হবে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য আফ্রিকার কয়েকটি বাজারে। আগামী বছর ইউরোপে ফাইভজি স্মার্টফোনের গড় বিক্রি মূল্য কমে ৭৬৫ ডলার এবং ২০২৪ সাল নাগাদ ৪৭৭ ডলারে দাঁড়াতে পারে।

চীনের শতাধিক শহরে এরই মধ্যে ফাইভজি নেটওয়ার্ক সেবা চালু করা হয়েছে। একই সঙ্গে চলতি বছর দেশটিতে ফাইভজি বেস স্টেশন স্থাপন বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সেলফোন অপারেটরগুলো ফাইভজি প্রযুক্তিতে সেবা দিতে কার্যক্রম জোরদার করেছে।

মার্কিন বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকসের গত জুলাইয়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে গত বছর ৩২টি দেশ এবং অঞ্চল ফাইভজি নেটওয়ার্কের আওতায় বাণিজ্যিক অ্যাপ্লিকেশনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছে। এছাড়া গত বছরের মাঝামাঝি সময় ৬০টি নেটওয়ার্ক অপারেটর কোম্পানি বাণিজ্যিকভাবে ফাইভজির কার্যক্রম শুরু করেছে। সংখ্যা গত বছরের ডিসেম্বর শেষে ৬৫টিতে পৌঁছেছে।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনে পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি ফাইভজি সমর্থিত ফোন বিক্রি ৫৪ লাখ ইউনিট ছাড়িয়েছে। চায়না ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি একাডেমি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন দাবি করা হয়েছে।

বিভিন্ন ডিভাইস ব্র্যান্ড গত বছরের শেষ মাসে চীনে ৩৫টি মডেলের নতুন স্মার্টফোন উন্মোচন করেছে। একই সময় দেশটিতে সরবরাহকৃত মোট স্মার্টফোনের মধ্যে ৫৪ লাখ ১৪ হাজার ইউনিট ফাইভজি স্মার্টফোন ছিল। এছাড়া গত ডিসেম্বরে চীনের ব্র্যান্ডগুলো আরো ১১টি নতুন ফাইভজি ফোন উন্মোচনের জন্য তালিকাভুক্ত করেছে। সামগ্রিকভাবে গত বছর দেশটিতে স্মার্টফোন সরবরাহ ৩৮ কোটি ৯০ লাখ ইউনিটে পৌঁছেছে এবং বছরজুড়ে ফাইভজি সমর্থিত স্মার্টফোন বিক্রি কোটি ৩৭ লাখ ৬৯ হাজার ইউনিটে পৌঁছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন