লন্ডনের পর এবার বুসান চলচ্চিত্র উৎসবে ‘নোনাজলের কাব্য’

ফিচার প্রতিবেদক

তরুণ নির্মাতা রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র নোনাজলের কাব্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যাত্রা এগিয়ে চলেছে। বিশ্বের বিভিন্ন মর্যাদাপূর্ণ চলচ্চিত্র উৎসবে জায়গা করে নিচ্ছে ছবিটি। এরই মধ্যে ৬৪তম বিএফআই লন্ডন চলচ্চিত্র উৎসব এবং ২৫তম বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে স্থান করে নিয়েছে নোনাজলের কাব্য

বুসান চলচ্চিত্র উৎসবে অফিশিয়াল সিলেকশন পাওয়া বাংলাদেশের একমাত্র পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নোনাজলের কাব্য এছাড়া রয়েছে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি যার নাম ট্রানসিট আগামী ২১-৩০ অক্টোবর ২০২০ অনুষ্ঠিত বুসান উৎসবে রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিতের ছবিটি বুসান সিনেমা সেন্টারে প্রদর্শিত হবে। ছবির চিত্রনাট্য রচনা করেছেন সুমিত নিজেই। এটি তার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। চৈতন্য তামহানের দ্য ডিসাইপেল ইভান আয়ারের মাইলস্টোন-এর মতো প্রশংসিত ছবির পাশাপাশি নোনাজলের কাব্য প্রদর্শিত হবে। বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (বিআইএফএফ) প্রতি বছর দক্ষিণ কোরিয়ার বুসান শহরে অনুষ্ঠিত হয়। বর্তমানে চলচ্চিত্র উৎসব এশিয়ার সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ বৃহত্তম চলচ্চিত্র উৎসব হিসেবে বিবেচিত।

বুসানের আগে নোনাজলের কাব্য প্রদর্শিত হবে লন্ডনে। আগামী -১৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত ৬৪তম বিএফআই লন্ডন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে প্রদর্শনের জন্য নির্বাচিত হয়েছে ছবিটি। বছর বিশ্ব থেকে মাত্র ৫৮টি ছবিকে স্থান দেয়া হয়েছে ফিচার ফিল্ম বিভাগে। করোনা পরিস্থিতির কারণে হাইব্রিড ফরম্যাটে হবে এবারের আসর, যাতে অংশ নিচ্ছেন কেট উইন্সলেট, সোয়ার্শা রোনানের মতো তারকারা।


নির্মাতা রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত বলেন, ‘‘এটি আমার প্রথম ছবি। চিত্রনাট্যের প্রথম খসড়া লিখেছি পাঁচ বছর আগে। পটুয়াখালীর প্রত্যন্ত এক চরে ১৫-২০ ঘর জেলের বসবাস। সেই জেলেপাড়ায় হঠাৎ এক ভাস্করের আগমন এবং তাকে ঘিরে গ্রামবাসীর জল্পনা-কল্পনা, ভালোলাগা এবং পরিশেষে সংঘাতএই নিয়েই নোনাজলের কাব্য গল্প। এর নির্মাণ কাজটি ভীষণ কঠিন ছিল, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়াও নানা বাধা এসেছে। করোনা মহামারী লকডাউন তার মাঝে অন্যতম। ২০২০-এর এই বৈরী পরিবেশে দু-দুটো বিশ্বমানের চলচ্চিত্র উৎসবে স্থান করে নিতে পারাতে আমার পুরো টিম খুবই আনন্দিত।

সুমিত আরো বলেন, আন্তর্জাতিক মিডিয়া ফিল্মসংশ্লিষ্ট বিশ্বের সেরা মানুষগুলোর নজর থাকে উৎসবগুলোয়। সব মিলিয়ে আমি মনে করি এটি আমার মতো একজন তরুণ নির্মাতার জন্য একটি বড় পাওয়া।

বাংলাদেশে কবে দর্শকরা ছবিটি দেখতে পারবেন সে বিষয়ে সুমিত বলেন, আশা করছি ২০২১ সালের শুরুর দিকেই বাংলাদেশের দর্শক দেখতে পাবেন ছবিটি। তবে তার আগে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে হবে।

বাংলাদেশ ফ্রান্সের যৌথ প্রযোজনার নোনাজলের কাব্য দৈর্ঘ্য ১০৬ মিনিট। ছবিতে অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, তিতাস জিয়া, তাসনুভা তামান্না, শতাব্দী ওয়াদুদ, অশোক ব্যাপারী, আমিনুর রহমান মুকুলসহ অনেকে। ছবিটির মিউজিক কম্পোজার অর্ণব। সিনেমাটোগ্রাফি করেছেন লস-অ্যাঞ্জেলসে বসবাসরত থাই শিল্পী চানানুন চতরুংগ্রোজ, যিনি বছর যুক্তরাষ্ট্রের স্পিরিট অ্যাওয়ার্ডের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। ফরাসি প্রযোজক হচ্ছেন ইলান জিরার্ড। যিনি মার্চ অব দ্য পেঙ্গুইন, গুডবাই বাফানা, ফাইনাল পোর্ট্রেট-এর মতো বিখ্যাত কিছু চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছেন। এছাড়া বাংলাদেশ থেকে ছবিটির নির্মাণ সহযোগী প্রতিষ্ঠান হাফ স্টপ ডাউন। সম্পাদনা করেছেন আমেরিকার ক্রিস্টেন স্প্রাগ, রোমানিয়ার লুইজা পারভ্যু ভারতের শঙ্খ। শব্দ রং সম্পাদনার কাজটি হয়েছিল প্যারিসের দুটি বিখ্যাত স্টুডিওতে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন