রংঢ়াং পাখি যেভাবে ডাকে

ফিচার প্রতিবেদক

ছবি: কলাকেন্দ্র

এক ভিন্ন ধারার প্রদর্শনী নিয়ে হাজির হচ্ছে কলা কেন্দ্র। পাহাড়ের জীবন ও মানুষের স্মৃতি নিয়ে এ প্রদর্শনী। শিল্পী জয়তু চাকমার শিল্পকর্ম নিয়ে আয়োজিত হচ্ছে তা।

আমরা পাহাড়কে কীভাবে দেখি? অবশ্যই রঙিন, যৌবনা ও রোমাঞ্চকর। আসলেই কি তাই?

পাহাড়ের স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে, আমার কাছে পাহাড় বাহ্যিকভাবে রঙিন হলেও ভেতরে এটি ধূসর প্রান্তর। যুগে যুগে পাহাড় হারিয়েছে তার ভূমিপুত্রদের এবং তার বাসিন্দারা হারিয়েছে পাহাড়কে। হারিয়ে যাওয়া পাহাড়ের সৌন্দর্যের কথা নাই বা বলা হলো।

নিজের শিল্পকর্ম তৈরি নিয়ে জয়তু নিজের ভাষায় বলেছেন। তার মতে, তথাকথিত উন্নয়নের মাশুল পাহাড়কে কি দিতে হচ্ছে? বৈদ্যুতিক উন্নয়নের জের ধরে ষাটের দশকে পাহাড় হারাল তার অজস্র উর্বর আবাদি জমি। তার সন্তানেরা হলো শরণার্থী। কত মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল নতুন জীবনের সন্ধানে তা আজও অজানা। পরিবারগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল পরস্পর থেকে। পরবর্তী সময়ে শুরু হলো রাজনৈতিক সংকট যা এখনো চলমান।

এখন পাহাড় অনেক উন্নত। পাহাড়ের সীমানায় এখন যান চলাচলের রাস্তা নির্মাণাধীন। এখন পাহাড়ের চূড়ায় উঠে সুইমিংপুলের শীতল জলে সাঁতরানো যায়। কিন্তু তার বদৌলতে পাহাড়িরা কী পাচ্ছে? পাহাড়ের বাস্তুসংস্থান আজ রুগ্ন। পাহাড়ের রাস্তা নির্মাণ হচ্ছে যে ঝিঁরির পাথর দিয়ে, সে ঝিঁরি আজ শুষ্ক। যে পাহাড় কেটে পাঁচ তারকা হোটেল হচ্ছে সে পাহাড়ের বাসিন্দারা আজ কোথায় তা অজানা।

নিজের শিল্পকর্ম নিয়ে শিল্পী বলেন, ‘আমি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি রঙিন পাহাড়ের অন্য পিঠ, যা অনেকের কাছেই অজানা। পাহাড়ের মানুষের স্মৃতি নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করেছি। সে স্থানকে তুলে ধরেছি, যেখানে একসময় তাদের শৈশব কেটেছিল।’ জয়তুর শিল্পকর্মের এ প্রদর্শনী আজ শুরু হয়ে চলবে ১৪ মে পর্যন্ত।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন