বাজেট বক্তৃতায় ডিএসসিসি মেয়র

এখানে কেবল দুর্নীতিই নয়, রয়েছে গাফিলতিও

নিজস্ব প্রতিবেদক

সেবা প্রদানে পিছিয়েপড়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নানা অনিয়মের তথ্য তুলে ধরে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, এখানে কেবল দুর্নীতিই নয়; দায়িত্বে গাফিলতি রয়েছে, রয়েছে অপচয় ও অবহেলাও। তাই প্রশাসনিক সংস্কারে হাত দিয়েছি। করপোরেশনের শীর্ষ পর্যায় হতে শুরু করে মাঠ পর্যায়ে এই ব্যবস্থা গৃহীত হচ্ছে বলেও জানান তিনি। 

আজ বৃহস্পতিবার ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।

নিজের উপলব্ধি তুলে ধরে মেয়র বলেন, ডিএসসিসির দায়িত্ব নেওয়ার পর আমি উপলব্ধি করেছি, এখানে কেবল দুর্নীতিই নয়; দায়িত্বে গাফিলতি রয়েছে, রয়েছে অপচয় ও অবহেলাও। তাই প্রশাসনিক সংস্কারে হাত দিয়েছি। করপোরেশনের শীর্ষ পর্যায় হতে শুরু করে মাঠ পর্যায়ে এই ব্যবস্থা গৃহিত হচ্ছে। ডিএসসিসিকে একটি কর্তব্যপরায়ণ ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করা এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্য এই সংস্কার কার্যক্রম চলমান থাকবে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সকল পর্যায়ে আমরা একটি বার্তা পৌঁছে দিয়েছি, গত ১৭ মে হতে আগামী ৫ বছর সম্পূর্ণ ভিন্নতর। কোন ধরনের দুর্নীতি, অবহেলা ও গাফিলতি বরদাশত করা হবে না। এসবের বিরুদ্ধে আমার জিরো টলারেন্স অব্যাহত থাকবে।

তিনি আরো বলেন, ঢাকা সিটির উন্নয়নে অনেকগুলো সেবা সংস্থা কাজ করে থাকে। কিন্তু, অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো, সংস্থাগুলোর মধ্যে কোন সমন্বয় নাই। এখন থেকে আমরা প্রতি বছর বাংলা নববর্ষের পূর্বেই ঢাকার উন্নয়ন ও সেবা প্রদানের সাথে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কাছে তাদের বাৎসরিক কাজের চাহিদাপত্র প্রদানের অনুরোধ করা হবে এবং সমন্বয়ের মাধ্যমে সংস্থাগুলোকে তাদের কার্যক্রম বাস্তবায়নের অনুমতি দেওয়া হবে। 

নতুন রূপে ডিএসসিসির প্রতিটি ওয়ার্ড সাজানোর পরিকল্পনা তুলে ধরে মেয়র বলেন, মহাপরিকল্পনার আওতায় আমরা প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে সামাজিক অনুষ্ঠান কেন্দ্র (কমিউনিটি সেন্টার) নির্মাণসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সংস্কার, ২০২১ সালের মধ্যে ৭৫টি ওয়ার্ডে একটি করে অন্তর্র্বতীকালীণ বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্রসহ (সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন-এসটিএস) বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম ঢেলে সাজানো, দখল-দূষণ প্রতিরোধ করে নদ-নদী-জলাধারগুলোর পুনরুদ্ধার ও সৌন্দর্যবর্ধন, মশক নিধন ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনার আমূল পরিবর্তন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণ, গণপরিবহন ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, ঐতিহাসিক স্থাপনাসমূহ রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে ঢাকার ঐতিহ্য সংরক্ষণ, গৃহ কর না বাড়িয়ে রাজস্ব আহরণের পরিসীমা বৃদ্ধি ও উন্নয়ন কার্যক্রম বেগবান করা এবং প্রশাসনিক সংস্কারের মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আন্তরিক প্রয়াস আমাদের রয়েছে। 

তাপস বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে এলাকায় রাস্তা নির্মাণ, সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। কিন্তু আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা বলে, রাস্তা নির্মাণের কিছুদিন পরে অন্য আরেকটি সংস্থা সেখানে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করে। সেটা আর হতে দেওয়া যায় না। এখন থেকে করপোরেশন কর্তৃক কোনও রাস্তা নির্মাণের পর অন্তত তিনবছরের মধ্যে অন্য কোনও সংস্থা সেই রাস্তা খনন করতে পারবে না। আইন, বিধি ও নীতিমালার কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে ঢাকার উন্নয়ন ও সেবা সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে সমন্বিতভাবে সিটি করপোরেশনের কাছে দায়বদ্ধ করে সেবার মানোন্নয়ন করা হবে। 

দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে মশক নিধন ও নিয়ন্ত্রণ প্রধান চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ঢাকার মেয়রদের প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো মশক নিধন ও নিয়ন্ত্রণ। মশক নিধনে আগেও বেশকিছু উদ্যোগ নেওয়া হলেও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, নিষ্ঠা, তদারকি ও আন্তরিকতার অভাবে উদ্যোগগুলো কাঙিক্ষত সাফল্য পায়নি। তাই মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম আমরা ঢেলে সাজিয়েছি এবং গত ২৪ জ্যৈষ্ঠ (৭ জুন) আমরা ‘বছরব্যাপী সমন্বিত মশক নিয়ন্ত্রণ’ কার্যক্রম শুরু করেছি এবং তা বাস্তবায়ন করে চলেছি। মশক নিধনে মানসম্মত কীটনাশক ব্যবহার নিয়ে যথেষ্ট অভিযোগ রয়েছে। এবার আমরা ভালো মানের কীটনাশক ব্যবহার করছি। সকলেই কীটনাশকের কার্যকারিতা নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করছেন। 

জলাশয় দখলমুক্ত করার ঘোষণা দিয়ে তাপস বলেন, এই শহরে অনেক জলাশয় রয়েছে যা মশক প্রজনন ও বংশবিস্তারের আঁতুড়ঘর। এসব জলাশয় দখল-দূষণে নিশ্চল-নিথর হয়ে পড়ে আছে। ফলে জলাশয়গুলো আমাদের জন্য আশীর্বাদ হওয়ার বদলে অভিশাপে পরিণত হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ জলাশয়ই সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন নয়। এগুলোর মালিক সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা। নানাবিধ আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় ঝুঁলে আছে সেসব ‘মশক-অভয়ারণ্যে’ আমাদের কার্যক্রম বাস্তবায়ন। তারপরও আমরা বেশকিছু জলাশয় পরিষ্কার করার কাজ শুরু করেছি। গত ১ জ্যৈষ্ঠ (১৪ জুন) ডিএসসিসি’র ১০টি অঞ্চলের ১০টি জলাশয় পরিষ্কার করার কার্যক্রম শুরু করেছি, অবমুক্ত করেছি দেশীয় তেলাপিয়া মাছ, যা, পানিতে ভাসমান মশকের লার্ভা খেয়ে মশকের বংশবিস্তার রোধ করে। আর বদ্ধ জলাশয়ে পানি স্থির থাকলে মশকের বিস্তার ঘটে। সেজন্য পরিষ্কার করার পর আমরা জলাশয়গুলোতে হাঁস অবমুক্ত করেছি যাতে হাঁসের চলাফেরার ফলে পানির উপরিভাগ স্থির না থাকে। এসব জলাশয়ে মাসে অন্ততে একবার জাল টানাবো হবে। এতে করে মাছের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হওয়ার পাশাপাশি মশক প্রজনন হ্রাস পাবে। 

জলাবদ্ধতা ঢাকার অন্যতম প্রধান সমস্যা জানিয়ে ঢাকা দক্ষিণের নগর পিতা বলেন, প্রতি বর্ষায় জলাবদ্ধতায় মানুষকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। কিন্তু জলাবদ্ধতার জন্য ডিএসসিসিই একমাত্র দায়ী সংস্থা নয়, সংশ্লিষ্ট আরও অনেক সংস্থা রয়েছে। কেউ কেউ নর্দমার ময়লা তুলে আবার রাস্তায় ফেলে রাখে। সেসব ময়লা ডাম্পিংয়ের জন্য নির্ধারিত স্থানে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে তারা নির্লিপ্ত থাকেন। এছাড়াও, অনেক সেবা সংস্থা আছে যারা সিটি করপোরেশনের সাথে সমন্বয় না করেই যত্রতত্র রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করে। ফলে এ ধরণের বহু কারণেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। কিন্তু এসব সংস্থার মধ্যে শুধু সিটি করপোরেশনের মেয়রই জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন বলে নগরবাসীর প্রত্যাশাটা মেয়রের কাছেই বেশি।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এক বিশাল কর্মযজ্ঞ উল্লেখ করে তাপস বলেন, ঢাকা শহরের মত ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় সে কর্মযজ্ঞ অত্যন্ত কঠিন কিন্তু অসম্ভব নয়। তাই আমরা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম ঢেলে সাজিয়েছি। আপনারা জানেন, ডিএসসিসিতে ৭৫টি ওয়ার্ড রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ২৪টি ওয়ার্ডে অন্তর্বতীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে এবং বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে এসটিএস এর জন্য জায়গা নির্ধারণ করা হলেও নানাবিধ জটিলতায় এতদিন সেসব স্থানে এসটিএস নির্মাণ ঝুলে ছিল। বিগত কয়েক সপ্তাহে আমি এ ধরণের বেশ কয়েকটি এসটিএস পরিদর্শন ও উদ্বোধন করেছি। আশা করছি, এই ডিসেম্বরের মধ্যেই আমরা ৩১টি ওয়ার্ডে এসটিএস নির্মাণে সফল হবো। পাশাপাশি প্রতিটি ওয়ার্ডে ১টি করে এসটিএস নির্মাণ করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে আমি ইতোমধ্যে নির্দেশনা প্রদান করেছি। ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে আমরা প্রতিটি ওয়ার্ডে ১টি করে এসটিএস নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি।

ঢাকাকে সচল রাখতে গণপরিবহন ব্যবস্থাপনার দৃশ্যপট পাল্টাতে হবে বলে মনে করেন ব্যারিষ্টার তাপস। নিজের পরিকল্পনা তুলে ধরে তিনি বলেন, এজন্য আমরা প্রয়োজনীয়তা অনুসারে সড়কগুলোকে বিভিন্ন শ্রেণী ও সময়সূচিতে বিভাজন করব এবং সে মোতাবেক গণপরিবহন ব্যবস্থাপনা ঢেলে সাজাবো। যে সড়কে মেট্রোরেল চলবে, সেই সড়কে নিশ্চয় অধিক পরিমাণ গণপরিবহনের প্রয়োজনীয়তা থাকবে না। তাই মেট্রোরেলের কিছু সড়কে রিকশা বা ঘোড়ার গাড়ি বা ধীরগতির যানবাহন চলবে। আর কিছু সড়কে মোটরচালিত যানবাহন চলবে। সেখানে ধীরগতির যানবাহন চলবে না। কেননা দ্রুতগতির যানবাহনের সঙ্গে ধীরগতির যানবহন একসঙ্গে চলার ফলেই যানজটের সীমা ছাড়িয়ে যায়। আবার কিছু রাস্তায় একমুখো যান চলাচলও চালু করব। পাশাপাশি গণপরিবহন ব্যবস্থাপনায় ফ্রান্সাইজি-সিস্টেম চালু করে মালিক-চালকদের মধ্যে অহেতুক প্রতিযোগিতা বন্ধ করব ও প্রয়োজনের চাইতে যেন বেশি সংখ্যক গাড়ির অনুমোদন দেওয়া না হয়, সে বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

ঐতিহাসির স্থাপনা রক্ষণাবেক্ষণে বিশেষ নজর দিতে চান তাপস। তিনি বলেন, আমাদের প্রাণের এই ঢাকা শহরে ঐতিহাসিক অনেক স্থাপনা থাকলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেগুলো ধীরে ধীরে জৌলুস হারিয়ে চলেছে, বিস্মৃত হয়ে পড়ছে আমাদের ঐতিহ্যের সেসব ধারক। তাই ঢাকা শহরের সব ঐতিহাসিক স্থাপনা সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তরের করার জন্য আমরা শীঘ্রই সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সাথে বসব। স্থাপনাগুলো আমাদের আওতায় এনে তা রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করব। এতে করে ঐতিহ্যের ধারা সমুন্নত হওয়ার পাশাপাশি পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠা লাভ করবে। 

এবারের বাজেটে ডিএসসিসি'র ৭৫টা ওয়ার্ডের সম্মানিত কাউন্সিলরদের উন্নয়ন ব্যয় ১ কোটি টাকা করা হয়েছে। ডিএসসিসি'র অধিভুক্ত এলাকায় ৮টি সংসদীয় আসন রয়েছে। সেসব সংসদীয় আসনের মাননীয় সংসদ সদস্যগণের বর্তমান উন্নয়ন ব্যয় ২ কোটি টাকা করা হয়েছে। নগরবাসীর জীবনমান উন্নয়ন ও নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে নতুন ১৯টি প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বাজেট বক্তৃতায় তাপস বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট ২ হাজার ৫৮৫ দশমিক ৩১ কোটি টাকা। আর ২০২০-২১ অর্থবছরে আমরা ৬ হাজার ১১৯ দশমিক ৫৯ কোটি টাকার বাজেট প্রাক্কলন করছি। তাই, টাকার অংকে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটের পরিমাণ ২০১৯-২০ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ২ দশমিক ৩৭ গুণ বেশি।

বাজেটে ২০২০-২১ অর্থবছরে নিজস্ব উৎস থেকে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০৯.০২ কোটি টাকা। এর মধ্যে হোল্ডিং ট্যাক্স বাবদ ৩৫০ কোটি, বাজার সালামী বাবদ ১৬৫ কোটি, বাজার ভাড়া বাবদ ৫০ কোটি টাকা। এছাড়া ট্রেড লাইসেন্স ফি বাবদ ১০০ কোটি, বিজ্ঞাপন কর বাবদ ৫০ কোটি, বাস-ট্রাক টার্মিনাল হতে ১০ কোটি, অস্থায়ী পশুর হাট ইজারা বাবদ ১২ কোটি, ইজারা (টয়লেট, পার্কিং, কাঁচাবাজার ইত্যাদি) বাবদ ৪৫ কোটি, রাস্তা খনন ফিস বাবদ ৪০ কোটি, রিক্সা লাইসেন্স ফিস বাবদ ২৪ কোটি, ইউটিলিটি সার্ভিস প্রদানে রাস্তা ব্যবহারের ফিস বাবদ ১২ কোটি, টোল জাতীয় কর বাবদ ১২ কোটি, যন্ত্রপাতি ভাড়া বাবদ ১০ কোটি, প্রাইভেট হাসপাতাল, প্যারামেডিক্যাল ইনস্টিটিটউট, ক্লিনিক, ডায়াগনোস্টিক সেন্টার ইত্যাদি নিবন্ধন ফি বাবদ ১০ কোটি, প্রাথমিক বর্জ্য সেবা সংগ্রহকারী নিবন্ধন ও বাৎসরিক ফিস বাবদ ৯ কোটি, টিউটোরিয়াল স্কুল, কোচিং সেন্টার ইত্যাদি নিবন্ধন ফি বাবদ ৫ কোটি, কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া বাবদ ৩ কোটি, সম্পত্তি হস্তান্তর কর খাতে ৬০ কোটি, ক্ষতিপূরণ (অকট্রয়) বাবদ ৬ কোটি, ইমারত নির্মাণ ও পুনঃনির্মাণের জন্য আবেদনের ওপর কর বাবদ ৫ কোটি, পেট্রোল পাম্প বাবদ ২ কোটি ৮৯ লক্ষ এবং অন্যান্য ভাড়া (ভূমি, নাট্যমঞ্চ, ছিন্নমূল ও নগর ভবন ইত্যাদি) ২ কোটি  টাকা আয় হবে বলে আশা করছি। 

এছাড়া সরকারি মঞ্জুরি (থোক) হতে ৫০ কোটি ও সরকারি বিশেষ মঞ্জুরি বাবদ ১০০ কোটি, সরকারি ও বৈদেশিক সহায়তামূলক প্রকল্প খাতে ৪ হাজার ৭৬৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।

বাজেটের উল্লেখযোগ্য ব্যয়ের খাতগুলোর মধ্যে রয়েছে বেতন ভাতা বাবদ ২৬৪ কোটি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পানি ও গ্যাস বাবদ ৫০ কোটি, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ ২৪ কোটি, মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম (মনিটরিং ও সার্ভাইলেন্সসহ) বাবদ ৩৫ কোটি, মালামাল সরবরাহ বাবদ ২১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা, ভাড়া, রেটস ও কর খাতে ৪ কোটি ৪০ লাখ, কল্যাণমূলক ব্যয় বাবদ ২০ কোটি ৫ লাখ, বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা বাবদ সাড়ে ৩ কোটি, ফিস বাবদ ২৪ কোটি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বিশেষ উদ্যোগ বাবদ ৮ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।

উন্নয়ন ব্যয়ের উল্লেখযোগ্য খাতগুলোর মধ্যে রয়েছে, সড়ক ও ট্রাফিক অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নে ১ হাজার ৭৪১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, নাগরিক বিনোদনমূলক সুবিধাদির উন্নয়নে ৮৪৭ কোটি, ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ, উন্নয়ন/রক্ষণাবেক্ষণে ৯১৭ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। উল্লেখিত খাতগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে সমন্বিত মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে ৩শ কোটি, জলাবদ্ধতা দূরীকরণে ৩শ কোটি, বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেল সংস্কারে ১৫০ কোটি, বুড়িগঙ্গার জমি অবমুক্তি, রাস্তা ও নান্দনিক পার্ক নির্মাণে ২৫০ কোটি, শিশু পার্ক রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নে ৩শ কোটি, খেলার মাঠ উন্নয়নে ২৮১ কোটি, আঞ্চলিক অফিস স্থাপন ও অন্যান্য স্থাপনার উন্নয়ন ও সৌন্দর্যবর্ধনে ২০২ কোটি, কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণে ২৬০ কোটি ৭ লক্ষ, নতুন বাজার প্রতিষ্ঠায় ৩শ কোটি, হাসপাতাল নির্মাণে ৪০ কোটি ৫০ লাখ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের জন্য ওয়ার্ড অফিস নির্মাণে ৫১ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

ডিএসসিসি’র নিজস্ব উৎস হতে ৭৩৯ কোটি ২৭ লাখ এবং সরকারি ও বৈদেশিক সহায়তামূলক প্রকল্প হতে ৪ হাজার ৭৬৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা প্রাপ্তি সাপেক্ষে এসব ব্যয় নির্বাহ করা হবে। 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন